বিশ্বকর্মার সঙ্গেই বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে গণেশ পুজোর চল বেড়েছে। যার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রাজনৈতিক নেতারা গণেশ পুজো উদ্বোধনের ছবি প্রকাশ করছেন। কলকাতায় যেমন মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে দেখা গিয়েছে পুজো উদ্বোধন করতে। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও উদ্বোধন করেছেন গণেশ পুজোর। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকও গণেশ পুজো উদ্বোধন করেছেন।
কে গণেশ, কবে পুজো?
ভগবান শিব ও পার্বতীর পুত্র গণেশ। তিনি সিদ্ধিদাতা নামেও পরিচিত। তাঁকে হিন্দুদের সুখ ও সমৃদ্ধির দেবতা বলে মনে করা হয়। এবছর, মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর (১ আশ্বিন) গণেশ চতুর্থী। যা শুরু হচ্ছে ১৮ সেপ্টেম্বর (সোমবার) রাত ১০টা ৩০-এ। আর, ছাড়বে মঙ্গলবার রাত ১০টা ৫৪ নাগাদ।
গণেশ চতুর্থী
ভাদ্র এবং আশ্বিন মাসে চতুর্থীর শুক্লপক্ষে এই উৎসব পালিত হয়। তাই এই তিথিকে গণেশ চতুর্থী বলে। গণেশ চতুর্থী উৎসবকে কন্নড়, তামিল, তেলেগু ও সংস্কৃত ভাষায় বিনায়ক চতুর্থী বা বিনায়ক চবিথি বলা হয়। কোঙ্কনি ভাষায় বলা হয় চবথ। নেপালি ভাষায় বলা হয় চথা।
মহারাষ্ট্রে গণেশ পুজোর চল দীর্ঘদিনের
মহারাষ্ট্রে দীর্ঘদিন, টানা ১০ দিন ধরে গণেশ উৎসব পালিত হয়। এগারোতম দিনে হয় প্রতিমা নিরঞ্জন। পুজোর শেষ দিনকে বলে অনন্ত চতুর্দশী। মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি গোয়া, রাজস্থান, গুজরাট, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, তেলেঙ্গানা, ওড়িশা, ছত্তিশগড়েও পালিত হয় গণেশ উৎসব। পশ্চিমবঙ্গেও আগে অল্পস্বল্প গণেশ পুজোর চল ছিল। কিন্তু, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যে ক্ষমতায় আসা এবং রাজ্য রাজনীতিতে গেরুয়া শিবিরের উত্থানের সঙ্গেই বেড়েছে গণেশ পুজোর ধুম।
পুজোয় কী নিবেদন করা উচিত
গণেশ পুজোর সময় কলা, মোদক (মিষ্টি), আখ, দূর্বা ঘাস, শমী পাতা, সিঁদুর, নারকেল এবং ধানের শিস নিবেদন করার পরামর্শ দেন জ্যোতিষরা। এই জিনিসগুলো নিবেদন করলে দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদও ভক্তদের ওপর থাকে বলেই জ্যোতিষীদের বিশ্বাস।
আরও পড়ুন- গণেশ পুজোয় বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ রিদ্ধি-সিদ্ধি, জানুন কারা তারা?
আরও পড়ুন- সাপ্তাহিক ছুটিতে বেড়ানোটা নেশা? অপেক্ষায়, কলকাতার কাছেই বিশাল জায়গাজুড়ে তৈরি শংকর মঠ
শুঁড় কোন দিকে থাকা উচিত
গণেশের মূর্তি কেনার সময় খেয়াল রাখা উচিত, শুঁড় যেন বাঁ হাতের দিকে বেঁকে থাকে। এমন মূর্তিতে নাকি বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এর সঙ্গে অনেকে দেখে নেন, যাতে গণেশের হাতে মোদক এবং পায়ের কাছে তাঁর বাহন থাকে। এমন গণেশ মূর্তির পুজো করলে নাকি গৃহে সুখ-শান্তি বজায় থাকে এবং মানসিক শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। আবার অনেকে চান শ্বেত গণেশ কিনতে। কারণ, শ্বেত গণেশের মূর্তির পুজো করলে সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় বলেই কথিত আছে। এর পাশাপাশি, পুজোর সময় গণেশের মূর্তি পূর্ব বা উত্তর দিকে রাখারই বিধান দেন পুরোহিতরা।