ভারতের পশ্চিম উপকূলে আরব সাগরের তীরে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল দিউ। একসময় এই দিউ ছিল পর্তুগিজ শাসনে। ১৯৬১ সালে তা ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়। মুম্বই বা আহমেদাবাদ থেকে গাড়ি বা ট্রেনে দিউ যাওয়া যায়। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি সুন্দর সমুদ্র সৈকত। আছে, ওয়ার মেমোরিয়াল, পর্তুগিজদের তৈরি দুর্গ, গির্জা-সহ বেশ কিছু দেখার মত জায়গা।
Advertisment
দিউ থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ফাদুম গ্রাম। এখানেই রয়েছে গঙ্গেশ্বর মহাদেবের মন্দির। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, এই মন্দির কয়েক হাজার বছরের পুরোনো। মন্দিরে প্রবেশ করতে হলে, সিঁড়ি ভেঙে বেশ কিছুটা নেমে যেতে হয় সমুদ্রের কাছে। সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে প্রথমে চোখে পড়বে নন্দীর মূর্তি। আর, দেবী পার্বতীর ফোটো। রয়েছেন গণেশ ও দেবী লক্ষ্মীও।
এই মন্দির আসলে আরব সাগরের ধারে পাহাড়ের একটি গুহা। এখানে আছে ছোট থেকে বড় বিভিন্ন আকারের পাঁচটি শিবলিঙ্গ। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, পঞ্চপাণ্ডব তাঁদের অজ্ঞাতবাসের সময় এই শিবলিঙ্গগুলো প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শুধু এখানেই নয়। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পঞ্চপাণ্ডবরা তাঁদের অজ্ঞাতবাসের সময় শিবলিঙ্গের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এমনটাই কথিত আছে। সেই পঞ্চপাণ্ডবরাই এখানে শিবলিঙ্গগুলোর পুজো করতেন বলেই স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান।
সমুদ্রের ঢেউ এসে ক্ষণে ক্ষণেই শিবলিঙ্গগুলোকে স্থান করিয়ে যায়। একের পর এক ঢেউ এসে এই গুহায় আছড়ে পড়ে। আর, শিবলিঙ্গগুলোতে ধুইয়ে দিয়ে ফিরে চলে যায়। জোয়ারের সময় শিবলিঙ্গগুলো জলের তলায় থাকে। তাই, সেসময় লিঙ্গগুলোকে পুজো করা যায় না। পুজো করতে হয় ভাটার সময়। এই মন্দির কোনও পুরোহিত নেই। ভক্তরা নিজেরাই পুজো দেন। পুজোর নৈবেদ্য অনেকসময়ই স্রোতের টানে দূর সমুদ্রে চলে যায়।
ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দির অত্যন্ত জাগ্রত। এখানে এলে মনে নানা অশান্তি থাকলেও তা শান্ত হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, একবার শিবের কাছে প্রার্থনা করলে, তা নাকি পূরণও হয়। আর, সেই জন্য এই মন্দিরে ভক্তদের আনাগোনাও লেগেই থাকে।