ভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচতে মানুষ এখন প্রায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন। টিকাগ্রহণ বাড়াতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। মানুষকে দিতে পারে নতুন জীবন। ভারতে ধীরে ধীরে দেশের নানান প্রান্তে সরকারি এবং বেসরকারি পরিসরে ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া অব্যাহত। দেশের অনেক মানুষই টিকা গ্রহণ করেছেন। নিজেদের সঙ্গে পরিবেশকেও সুস্থ করার চেষ্টায়। কোভিড ভ্যাকসিনগুলির মূলত দুটি ডোজ এবং সেখানেই দেখা যাচ্ছে নানান বিভ্রান্তি। নির্দেশিকাগুলি আপডেট হতে থাকায়, ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের মধ্যে আদর্শ ব্যবধান কী তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অফ এক্সপার্টস অফ ইমিউনিজেশন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড -১৯ ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য অন্তর্বর্তী সুপারিশ জারি করেছিল যা, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে কোভিশিল্ড নামে ভারতেই তৈরি করা হয়। প্রথমদিকে, কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজের ব্যবধান প্রথমটির থেকে ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যেই নির্ধারিত করা হয়। ভাটিয়া হাসপাতাল (মুম্বই ) এর কর্মকর্তা রাজীব বৌধঙ্কর বলেন, ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিলে কার্যকরী হবে টিকা।
প্রথমদিকে, এই ব্যবধান মানা হলেও ধীরে ধীরে যেন বেড়েছে এর দিনসংখ্যা! যদিও এর কারণ হিসেবে সঠিক কোনও উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে বর্তমানে ভ্যাকসিন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অন্তর্গত জাতীয় বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠীর সুপারিশের ভিত্তিতে ভারত সরকারের এসওপি অনুসারে, জাতীয় কোভিড টিকা প্রক্রিয়াকরণের অধীনে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজের ব্যবধান ধার্য করা হয়েছে প্রথম ডোজের ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহের অর্থাৎ ৮৪ দিন পরে। তবে, ভ্যাকসিনের সঠিক সময়সীমা ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ হওয়া উচিত!
সংশোধিত এই নির্দেশিকা, ধার্য করা হয়েছে কেবলমাত্র কোভিশিল্ডের জন্য। কোভ্যাক্সিনের জন্য এখনও পর্যন্ত চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময়সীমা নির্ধারিত। যদিও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রথম টিকা দেওয়ার কমপক্ষে তিন মাসের মধ্যে অবশ্যই এর দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করার ব্যবস্থা করা দরকার। প্রথম ডোজের পর দেহে ৭০% কার্যকারিতা শুরু হয়ে গেলেও, দ্বিতীয় ডোজ সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হওয়া খুবই দরকারি। যদিও বা দেশের কিছু কিছু স্থানে ভ্যাকসিন এখন দুষ্প্রাপ্য, তার পরেও সম্ভবমতো দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করলেই দৈহিক সুরক্ষার উন্নতি হয়। এই দুটি ছাড়া স্পুটনিক ভি টিকা ২১ দিনের ব্যবধানে দুটি মাত্রায় এবং মডার্না ভ্যাকসিন ২৮ দিনের ব্যবধানে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন টিকা নিলে কমে উদ্বেগ, শান্তি থাকে মনে! বলছে সমীক্ষা
কোভিড ভ্যাকসিন মানুষের জীবনের অংশ! যেকোনও জায়গায় ভ্রমণ থেকে, কর্মক্ষেত্রে সর্বত্রই ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট প্রদর্শন করা নিয়ম অন্তর্ভুক্ত। তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বৈদেশিক শিক্ষা, ক্রীড়াক্ষেত্রে এবং কর্মক্ষেত্রে নিযুক্ত ব্যক্তিদের ২৮ দিনের পরেই যেকোনও ভ্যাকসিন গ্রহণ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক স্তরে, ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট ছাড়াও সাম্প্রতিক নেগেটিভ টেস্ট রিপোর্ট বাধ্যতামূলক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন