/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/26/garia-smashan-kali-temple-2025-10-26-23-11-48.jpg)
Garia Smashan Kali Temple: গড়িয়া শ্মশানকালী।
Garia Smashan Kali Temple: জনশ্রুতি অনুযায়ী, এই পীঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন চণ্ডীমঙ্গলের ধনপতি বণিকের পুত্র শ্রীমন্ত বণিক, যিনি মা চণ্ডীর বরপুত্র হিসেবে পরিচিত। আবার অনেকে বলেন, তিনি ছিলেন চাঁদ সওদাগরের পিতা। অর্থাৎ বাংলার প্রাচীন বণিক ঐতিহ্যের সঙ্গে এই মাতৃপীঠের গভীর যোগ রয়েছে।
প্রাচীন বঙ্গে গঙ্গার পুরোনো প্রবাহপথে অনেক মাতৃপীঠই দেখা যায়, যার অধিকাংশের সঙ্গে শ্রীমন্ত বণিকের কাহিনি জড়িয়ে আছে। এই বণিকেরা বাণিজ্যে যাওয়ার আগে মাতৃনাম স্মরণ করে যাত্রা করতেন — এবং মায়ের আশীর্বাদেই ফিরে আসতেন বিপুল ঐশ্বর্য নিয়ে।
আরও পড়ুন- গোদাবরীর তীরে রামায়ণের পঞ্চবটী! কীভাবে যাবেন রামের পদধূলিতে ধন্য এই তীর্থে?
মন্দিরের রূপ ও দেবীমূর্তি
বর্তমান গড়িয়া শ্মশানকালীর মন্দিরটি উনবিংশ শতকের। দেবী এখানে দ্বিভুজা, প্রসন্নবদনা, করালরূপী নন। তাঁর রূপ তন্ত্রসারের শ্মশানকালীর ধ্যানবর্ণনার সঙ্গে মিলে যায়। মায়ের দেহ অঞ্জনাদ্রিনিভ, অর্থাৎ কাজলপাহাড়ের মতো কৃষ্ণবর্ণ। নেত্র রক্তপিঙ্গল, কেশ মুক্ত, দেহ শুষ্কমাংসা, বাম হাতে মদ্যমাংসপূর্ণ পাত্র, ডান হাতে সদ্যছিন্ন মুণ্ড। তিনি হাস্যবদনা, দিগম্বরা, অলঙ্কারপরিহিতা — তবে ভয়ের নয়, বরং আশ্রয়ের প্রতীক।
আরও পড়ুন- দেবী সতীর মুকুট পড়েছিল, পবিত্র সতীপীঠের অজানা ইতিহাস!
শ্মশানকালীর তত্ত্ব — কাল, সৃষ্টি ও বিলয়
কালী মানে ‘কালকে যিনি নিয়ন্ত্রণ করেন’। কালী জগদকারণ, কালী জগদবিলয়। শ্মশানকালী মানে মানব জীবনের অন্তিম আশ্রয়ে অবস্থানকারী সেই শক্তি, যিনি মৃত্যুকেও তুচ্ছ করেন। সব রং শেষে যেমন কালো হয়, তেমনি জীবনের সব রূপ অবশেষে মা কালীর শ্মশানে এসে মেশে।
আরও পড়ুন- পেশা থেকে সম্পর্ক, ছক কষে কাজ করেন এই ৪ রাশি!
বাঙালির আধ্যাত্মিক চেতনায় মা শ্মশানকালী
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মা শ্মশানকালীর পূজাকে ঘিরে নানা ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। 'শ্মশানচারিণী দেবীর পুজো গৃহীরা করতে পারেন না', 'তন্ত্র মানে ভয়'— এইসব ভাবনা আজও প্রচলিত। কিন্তু আগমবাগীশ তন্ত্রসারে ঘরোয়া উপাসনার সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। বাঙালির মহাসমৃদ্ধ যুগে বিভিন্ন বণিক মাতৃপীঠ স্থাপন করে যাত্রা করতেন।
আরও পড়ুন- কবে জগদ্ধাত্রী পুজো? কীভাবে শুরু হল এই পুজো?
আধুনিক সমাজে দেবীর প্রাসঙ্গিকতা
যখন তথাকথিত 'আধুনিক' চিন্তাধারা কালীর তত্ত্বকে কুসংস্কার বলে দূরে সরিয়ে দেয়, তখন বাঙালির আত্মিক ঐতিহ্য শ্মশানের অন্ধকারে হারিয়ে যায়। কিন্তু সত্য হল- বেদ নয়, উপনিষদ নয় বরং শ্মশানকালীর ত্রিনয়নের জ্যোতিই ক্রান্তিকালে বাঙালিকে আলো দেয়। তাই নির্ভয়ে, নির্ভরতায়, দেবী শ্মশানকালীর আরাধনা করুন।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us