Advertisment

অসংখ্য মানুষের ভরসা, জাগ্রত দেবী ঘাঁঘরবুড়ি

পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে নদী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Ghagar Buri

খনি সমৃদ্ধ মহকুমা আসানসোল। এই অঞ্চল বিখ্যাত, কয়লা এবং ইস্পাত শিল্পের জন্য। তেমনই এই মহকুমা বিভিন্ন দেব-দেবীরও আশীর্বাদধন্য। যে দেবদেবীদের অন্যতম চণ্ডীদেবী ঘাঁঘর বুড়ি। মহকুমা শহরটির উত্তরে শীর্ণকায় নুনিয়া নদীর তীরে রাঢ় বাংলার এই জাগ্রত দেবী ঘাঁঘর বুড়ির মন্দির। এই মন্দির যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই সময় আসানসোল মহকুমা ছিল ধূ-ধূ করা মাঠ। যাকে ঘিরে ছিল আসান গাছের জঙ্গল।

Advertisment

এখানকার জনমানবহীন প্রান্তরে ছিল হাতগোনা কয়েকটি বাড়ি। দু-তিনটি বাড়ি নিয়ে গড়ে উঠেছিল একেকটি ক্ষুদ্র গ্রাম। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রামগুলোয় যজমানি করতেন পূজারি কাঙালিচরণ চক্রবর্তী। নুনিয়া নদী পেরিয়ে তিনি বিভিন্ন গ্রামে পুজোর্চ্চনা করতে যেতেন। এমনই এক পয়লা মাঘে পুজো করে কিছুই পাননি কাঙালি চরণ। নুনিয়া নদী পেরিয়ে ক্ষুধার্ত-তৃষ্ণার্ত কাঙালিচরণ শুয়ে পড়েছিলেন গাছতলার নীচে। কাতর ভাবে ডাকছিলেন দেবী চণ্ডীকে।

আচমকা লাঠির শব্দে তাঁর ঘুম ভাঙে। কাঙালিচরণ দেখতে পান, এক ঘাগড়া পরিহিত বুড়ি। তাঁকে দেখেই কাঙালিচরণের চোখ যেন ঝলসে গিয়েছিল। ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কাঙালিচরণ। সেই সময় তিনি ঘুমন্ত চোখে কাঙালিচরণ পরিষ্কার শুনতে পান, কেউ যেন তাঁকে বলছেন- 'তোর আর ভিক্ষাবৃত্তির দরকার নেই। ঘুম ভাঙলেই দেখবি, কোলে তিনখানা পাথর। মধ্যের পাথরটা আমি মা ঘাঁঘর বুড়ি। আমার বাঁয়ে মা অন্নপূর্ণা। ডানে পঞ্চানন মহাদেব। এইখানেই মন্দির প্রতিষ্ঠা কর। আর কোথাও যেতে হবে না।'

আরও পড়ুন- শান্ত-নিরিবিলি মরাঘাট মহাপীঠ, ভক্তদের প্রার্থনা পূরণ, সাধকের সিদ্ধিলাভের আদর্শস্থান

তারপর থেকে এই অঞ্চলে চলছে ওই তিনটি পাথরকে পুজো। ঘাঁঘর শব্দের অন্যতম অর্থ হল নদী। নুনিয়া নদীর দক্ষিণ তীরে এই মন্দির। সেকারণেও দেবীর নাম এখানে ঘাঁঘরবুড়ি হতে পারে বলে ইতিহাসবিদদের মত। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। আর, সেই জন্য মনস্কামনা পূরণ করতে ভক্তরা এখানে গাছের সঙ্গে মনস্কামনা পূরণের কাপড় বেঁধে দিয়ে যান। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন পুজো দিতে।

Temple Durgapuja pujo
Advertisment