সমগ্র গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে লাভ করার বা ভগবৎ প্রাপ্তির জন্য অর্জুন বা ভক্তকে ছয়টি পথ দেখিয়েছিলেন। তাঁর দেখানো প্রথম পথ- 'হে অর্জুন, সর্বদা আমাকে স্মরণ করে তোমার স্বভাব বিহিত যুদ্ধ কর। তাহলে আমাতে তোমার মন ও বুদ্ধি অর্পিত হবে এবং নিঃসন্দেহে তুমি আমাকেই লাভ করবে।' (ভগবদগীতার অষ্টম অধ্যায়ের সপ্তম শ্লোক।)
দ্বিতীয় পথ, 'তোমার মনকে আমার ভাবনায় নিযুক্ত কর। আমাকে প্রণাম কর এবং আমার পূজা কর। সম্পূর্ণরূপে আমাকে আশ্রয় করো। তাহলে তুমি অবশ্যই আমাকে লাভ করবে।' (ভগবদগীতার নবম অধ্যায়ের ৩৪ নম্বর শ্লোক।)
তৃতীয় পথ, 'যারা নিত্য ভক্তিযোগ দ্বারা প্রীতিপূর্বক আমরা ভজনা করেন, আমি তাদের শুদ্ধজ্ঞানজনিত বুদ্ধিযোগ দান করি। যার দ্বারা তারা আমার কাছে ফিরে আসতে পারে।' (ভগবদগীতার ১০ অধ্যায়ের দশম শ্লোক।)
চতুর্থ পথ, 'হে প্রিয় অর্জুন, যিনি আমার সেবা করেন, আমার প্রতি নিঃস্বার্থ পরায়ণ, আমার ভক্ত, জড়বিষয়ে সম্পূর্ণ আসক্তি রহিত এবং সমস্ত প্রাণীর প্রতি শত্রুভাব রহিত, তিনি অবশ্যই আমার কাছে ফিরে আসেন।' (ভগবদগীতার একাদশ অধ্যায়ের ৫৫ নম্বর শ্লোক।)
পঞ্চম পথ, 'আমাতে তুমি মন সমাহিত কর। আমাতে বুদ্ধি নিবিষ্ট কর। তার ফলে নিশ্চয়ই আমাকে প্রাপ্ত হবে। সে সম্বন্ধে কোনও সন্দেহ নেই। ' (ভগবদগীতার দ্বাদশ অধ্যায়ের অষ্টম শ্লোক)
ষষ্ঠ পথ, 'তুমি আমাতে মন বা চিত্ত স্থির কর। আর আমার ভক্ত হও। আমার পূজা কর। আর, আমাকে নমস্কার কর। তুমি আমার অত্যন্ত প্রিয়। এই জন্যই আমি সত্য প্রতিজ্ঞা করছি যে তুমি আমাকে প্রাপ্ত হবে।' (ভগবদ্গীতার অষ্টাদশ অধ্যায়ের ৬৫ নম্বর শ্লোক)
আরও পড়ুন- রাত পোহালেই রাস, কী এই উৎসব, কী-ই বা তার পটভূমি?
গীতার ক্ষেত্রে যেমন এগুলো জানা জরুরি। তেমনই উপনিষদ এবং অন্যান্য হিন্দু শাস্ত্র সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই জানতে হবে- ১) ঈশ্বর হলেন- পরমব্রহ্ম। ২) পক্ষ - শুক্ল পক্ষ, কৃষ্ণ পক্ষ। ৩) অনাদি তত্ত্ব- পরমাত্মা, জীবাত্মা, প্রকৃতি। ৪) বেদ - ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ, অথর্ববেদ। ৫) মহাভূত - ক্ষিত (ক্ষিতি), জল (অপ), পাবক (মরুৎ), আকাশ (ব্যোম), সমীরা (তেজ বা অগ্নি)।
৬) দর্শন - সাংখ্য, যোগ, ন্যায়, পূর্ব মীমাংসা, উত্তর মীমাংসা (ব্রহ্মসূত্র), বৈশেষিক। ৭) মর্যাদা/ সপ্ত মহাপরাধ- চুরি, ব্যভিচার, হত্যা (ভ্রুণনিধন-সহ), অগ্নিসংযোগ, নেশা (মদ্যপান-সহ), অসততা, অশ্লীলতা। ৮) যোগ - যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম, প্রত্যাহার, ধারণা, ধ্যান, সমাধি। ৯) নবদ্বার- দুই চক্ষু, দুই কর্ণ, দুই নাসারন্ধ্র, মুখ, পায়ু ও উপস্থ।
১০) দিশা বা দিক- ঊর্ধ্ব (ওপরের দিক), ঈশান (উত্তর-পূর্ব), পূর্ব, আগ্নেয় (দক্ষিণ-পূর্ব), দক্ষিণ, নৈঋত (দক্ষিণ-পশ্চিম), পশ্চিম, বায়ব্য বা বায়ু (উত্তর-পশ্চিম), উত্তর, অধঃ (নীচের দিক)। ১১) উপনিষদ - ঈশ, ঐতরেয়, শেতাশ্বতর, কঠ, কেন, ছান্দোগ্য, প্রশ্ন, তৈত্তিরীয়, বৃহদারণ্যক, মাণ্ডুক্য, মুণ্ডক। ১২) আদিত্য- বারো মাসের প্রতিটি।