মন্দিরে পঞ্চমুণ্ডির আসনে অধিষ্ঠিত দেবী কালী। পূজারিও পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসেই দেবীর পুজো করেন। প্রতিদিন মনস্কামনা পূরণের জন্য পুজো দিতে এই মন্দিরে উপচে পড়ে ভিড়। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে এখানে পুজো দিয়ে যান। সাধারণ, পুজোর পাশাপাশি নতুন গাড়ি কিনলে, এখানেই সবার আগে পুজো দিতে ছুটে আসেন গাড়ির মালিকরা। তাঁদের বিশ্বাস, এখানে পুজো দিলে গ্রহ-নক্ষত্রের দোষ থেকে আর কোনও দুর্বিপাক পোহাতে হয় না। গাড়ি দুর্ঘটনা অথবা অন্য কোনও ঝুট-ঝামেলায় পড়তে হয় না।
আর, বিয়ে হলে তো কথাই নেই। জীবনভর সুখ-শান্তিতে কাটাতে হলে এই মন্দিরই ভরসা। পরে যতই জাঁকজমক করে বিয়ে হোক না-কেন, আগে এই মন্দিরে একবার বিয়ে সারা চাই-ই চাই। বিশেষ করে পাত্র বা পাত্রীর যদি কালসর্প, মাঙ্গলিক, ভৌম অথবা এইজাতীয় কোনও দোষ থেকে থাকে, তবে তো কথাই নেই। এই মন্দিরেই বিয়ে সারবেন পাত্র-পাত্রী। ভক্তদের ঠিক এতটাই ভরসা পাঁশকুড়ার ভবতারিণী শ্মশানপীঠের কালী মন্দিরের ওপর। এই ভরসা কিন্তু, একদিনে তৈরি হয়নি। মন্দিরটি আগে মাটির ছিল।
এখন এতটাই সাজানো গোছানো যে অন্য যে কোনও বড় মন্দিরের সঙ্গে ডেকে ডেকে পাল্লা দেবে। মাটির মন্দির থেকে বর্তমানের সাজানো গোছানো মন্দির হয়ে উঠতে যে সময়টুকু গিয়েছে, তাতেই ভক্তদের বিশ্বাস অর্জন করে নিয়েছে এই মন্দির। আসলে ভক্তদের বড় ভরসা এই মন্দিরের পুরোহিতের ওপর। যিনি নাকি তন্ত্রসাধনায় সিদ্ধ। এমনটাই মনে করেন এই মন্দিরের ভক্তরা। পুরোহিত নিজে অবশ্য এই ব্যাপারে কাউকে কিছু বলেন না। তবে, ভক্তদের মধ্যে যাঁরা ফল পেয়েছেন, তাঁরাই এসব ঘনিষ্ঠদের বলে বেড়ান।
আরও পড়ুন- এই সতীপীঠ ঘিরে রয়েছে অজস্র কাহিনি, মনস্কামনা নিয়ে ছুটে আসেন অগণিত ভক্ত
এই মন্দির পাঁশকুড়া-হলদিয়া রাজ্য সড়কের পাশে বালিডাংরিতে। পাঁশকুড়া পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। পাঁশকুড়া স্টেশনে নেমে টোটোয় চেপে যাওয়া যায় ভবতারিণী শ্মশানপীঠের কালী মন্দিরে। আবার কোলাঘাট স্টেশন থেকেও যাওয়া যায়। কোলাঘাট স্টেশনে নামলে ট্রেকারে চেপে যেতে হয় পাঁশকুড়া। সেখান থেকেও টোটোয় চেপেও যাওয়া যায় এই মন্দিরে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা। আর, বিকেল ৪টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই মন্দির খোলা থাকে।