জাগ্রত দেবী। এই কথাটার অর্থই হল, দেবীর কাছে প্রার্থনা করলে মনস্কামনা পূরণ হয়। দেবী ভক্তদের কথা মন দিয়ে শোনেন। এই সব কথাগুলো সব মন্দিরের ক্ষেত্রে কিন্তু বলা যায় না। কারণ, অনেক ভক্ত বলে থাকেন, তাঁরা দেবীর কাছে প্রার্থনা করে কোনও ফল পাননি। সেই সংখ্যাও নেহাত কম নয়। আর, এক্ষেত্রেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কোন মন্দিরে যাওয়া উচিত ভক্তদের? কারণ, ঈশ্বরের কৃপা যে আছে, তার যে আলাদা প্রভাব আছে, তা যিনি স্বীকার করেন, আর যিনি সকলের সামনে অস্বীকার করেন- উভয়েই জানেন আর মানেনও।
সেই কথা মাথায় রেখে বলা যায়, নিরাশ হওয়া ভক্তদের একবার অন্তত দেবী ভীমাকালীর মন্দিরে ঘুরে যাওয়া উচিত। এই মন্দিরে একসঙ্গে মেলে দেবী কালী ও শ্রীকৃষ্ণের দর্শন। ভক্তদের দাবি, ভীমাকালী দেবীর মন্দিরে গেলে সব মনস্কামনা পূরণ হয়। দেবী নাকি নিজের কানে ভক্তের সব কথা শোনেন। কথিত আছে, এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু অলৌকিক কাহিনি। যে কারণে, দেবী ভীমাকালীর মন্দিরে বহু দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থী ও ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে।
স্বভাবতই প্রশ্ন জাগতে বাধ্য, কোথায় রয়েছে এমন জাগ্রত মন্দির? এই মন্দির রয়েছে সিমলা থেকে ১৬৫ কিলোমিটার দূরে সারাহানে। মন্দিরটি ৮০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন। ভক্তদের দাবি, এই মন্দির ৫১ সতীপীঠের অন্যতম। কথিত আছে দেবী সতীর কান পড়েছিল এখানে। তাই বলা হয়, ভক্তের কামনা সরাসরি দেবীর কানে পৌঁছয়। মন্দিরটির স্থাপত্যশৈলী তিব্বতি গোছের। যার মধ্যে বৌদ্ধ এবং হিন্দু প্রভাব রয়েছে।
আরও পড়ুন- ফলহারিণী কালীপুজো, কী তার রীতি, নিয়ম এবং আচার
আগে এই জায়গার নাম ছিল শোণিতপুর। রাজত্ব করত বাণাসুর। কথিত আছে, শিবভক্ত বাণাসুর একসময় শ্রীকৃষ্ণের পৌত্র অনিরুদ্ধকে বন্দি করে রেখেছিলেন। সেকথা জানতে পেরে শ্রীকৃষ্ণ বাণাসুরের রাজ্য আক্রমণ করেছিলেন। কিন্তু, বাণাসুরকে রক্ষা করতে স্বয়ং মহাদেব শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসেন। ভয়ঙ্কর যুদ্ধের মধ্যেই শ্রীকৃষ্ণ কৌশলে ভগবান শিবকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, বাণাসুরের সব হাত কেটে তাঁর মাথা কাটতেও উদ্যত হয়েছিলেন। সেই সময় মহাদেব জেগে উঠে বাণাসুরের প্রাণরক্ষা করেন। বাণাসুর ভুল স্বীকার করলে শ্রীকৃষ্ণ সেই সময় বাণাসুরের রাজ্য ফিরিয়ে দেন। সেই থেকে এই মন্দিরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো হয়ে আসছে।