বর্ধমানের খণ্ডঘোষের অত্যন্ত জাগ্রত পুজো হল মাঠের কালী পুজো। কয়েকশো বছরের পুরোনো এই পুজো। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, দেবী তাঁদের যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন। কোনও মহামারীর প্রভাব পড়তে দেন না। দেবী মাঠের কালী আসলে দেবী রক্ষাকালীরই অন্য এক নাম। প্রতি ফাল্গুন মাসে অমাবস্যায় দেবীর পুজো হয়। জাগ্রত দেবীর কথা এতটাই প্রচারিত যে, প্রতিবছর প্রায় লক্ষাধিক ভক্তর সমাগম হয় এই পুজোয়।
একই দিনে প্রতিমা গড়ে পুজোর পর সেদিনই বিসর্জন হয়ে যায়। বিশাল এক শোভাযাত্রা করে দেবীকে পুজোর স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। নিয়ে যাওয়ার সময় দেবীর মাথায় বিরাট আকারের ছাতা ধরে থাকেন ভক্তরা। ভক্তদের দাবি, দেবী এতটাই জাগ্রত যে আজ পর্যন্ত কোনও সাধক দেবীর বেদীতে বসে সাধনা করার শক্তি দেখাতে পারেননি।
অনেকে চেষ্টা যে করেননি, তা নয়। কিন্তু, তাঁরাও ব্যর্থ হয়েছেন। প্রায় প্রতিবার এই পুজোয় অন্তত ৫০০ পাঁঠার বলি হয়। অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে এসে দেবীর কাছে মনস্কামনা পূরণ করার জন্য প্রার্থনা জানান, পুজো দেন। মনস্কামনা পূরণের পর দণ্ডী কাটছেন, এমন ভক্তের সংখ্যাও নেহাত কম থাকে না।
ভক্তদের দাবি, দেবী মাঠের কালি বা রক্ষাকালীর ভোগ তৈরি হয় বুড়ো শিবের মন্দিরে। সেই মন্দির থেকেই পুজো যায় দেবীর কাছে। তারপর দেবীর কাছ থেকে ভোগ আসে বুড়োশিবের জন্যও। বর্তমানে দেবী মাঠের কালীর বেদী ঘিরে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। সেখানে পুরোহিত ও বাছাই করা উদ্যোক্তারা উপস্থিত থাকেন। তাঁরা ঘেরা জায়গার বাইরে থাকা ভক্তদের পুজো দেবীর পায়ের কাছে রাখার ব্যবস্থা করে থাকেন।
আরও পড়ুন- অসংখ্য মানুষের ভরসা, জাগ্রত দেবী ঘাঁঘরবুড়ি
এই পুজো উপলক্ষে বিরাট মেলা বসে। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী মাঠের কালীর কাছে প্রার্থনা জানালে তা আর অপূর্ণ থাকে না। ভক্তদের ভিড় সামলাতে মহিলা ও পুরুষ ভক্তদের পুজো দেওয়ার আলাদা কাউন্টার তৈরির করেন উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি, থাকে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও।