দিঘার কাছেই শংকরপুরে রয়েছে বিখ্যাত নায়েকালী মাতার মন্দির। প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো এই মন্দির অত্যন্ত জাগ্রত। কথিত আছে, দেবীর কাছে যাঁরাই আসেন, তাঁদেরই মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, এই মন্দির অন্যতম সিদ্ধপীঠ। একসময় এই অঞ্চল ছিল জঙ্গলে ভরা। তখনও কিন্তু, দেবী নায়েকালীই ছিলেন আশপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের লোকেদের ভরসার কেন্দ্র। তাঁদের নানা বাসনা পূরণের কর্ত্রী ছিলেন দেবী নায়েকালী। স্থানীয়দের দাবি, দেবী নায়েকালী বেলগাছ থেকে উঠে এসেছিলেন।
এই মন্দিরের দেবী নায়েকালী কিন্তু, সাধারণ কালীমূর্তির মত দেখতে নন। তিনি দেবী নায়েকালী হলেন ব্যাঘ্রবাহিনী। তাঁর গলায় রয়েছে মুণ্ডমালা। দেবীর হাতে রয়েছে খড়্গ। দেখতে দেবী দুর্গার মত। দুর্গার ধ্যানমন্ত্রেই দেবীর পূজা হয়। কথিত আছে দেবীর মন্দিরের চারপাশ ছিল গভীর জঙ্গলে ভরা। আর, সেই জঙ্গল পেরোতেই পুকুরের মত বিরাট খাল। শুনতে অদ্ভুত হলেও, যার চারপাশটা থাকত নোনা জল। আর, মন্দিরের কাছাকাছি অঞ্চলটা থাকত মিষ্টি জলে পরিপূর্ণ। সেই সময় দূর-দূরান্ত থেকে বাসিন্দারা নৌকো করে জল বেয়ে পৌঁছতেন মন্দিরের কাছাকাছি।
আজও ভক্তরা বংশ পরম্পরায় দেবীকে ভোগ দেওয়ার রীতি বহাল রেখেছেন। তাঁরা দেবীর জন্য ভোগ তৈরি করে নিয়ে আসেন। দুর্গাপূজার সপ্তমী-অষ্টমীতে এখানে বেশ বড় করে পুজো হয়। কিন্তু, বাৎসরিক পুজো হয় দোলের সময়। দেবীর নাম নায়েকালী হলেও তিনি আসলে দুর্গারই রূপ। এমনটাই জানিয়েছেন ভক্তরা।
আরও পড়ুন- খাস কলকাতার বৈকুণ্ঠনাথ মন্দির, যেখানে ভক্তকে উদ্ধারের জন্য সদাজাগ্রত ভগবান
এই মন্দিরের অপর বিশেষত্ব হল, কীভাবে যেন প্রতিদিন দেবীর অন্নভোগের ব্যবস্থা হয়ে যায়। তা আজও এই মন্দিরের ভক্তদের কাছে এক রহস্য। আর, সেই সব কারণেই নায়েকালী দেবীর মন্দির নিয়ে ভক্তদের জানার আগ্রহ নেহাত কম নয়। দূর-দূরান্ত থেকে দিঘায় আসা পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে এই মন্দিরকে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। সাজিয়ে তোলা হয়েছে মন্দিরের চারপাশের অঞ্চলটুকু।