Advertisment

ভক্তদের পরম আশ্রয়, তিনিই দুর্গা আবার তিনিই কালী, সতীপীঠের দেবী নলাটেশ্বরী

নাটোরের রাজমাতা রানি ভবানী গড়ে তুলেছিলেন এই মন্দির। তাঁর জমিদারির অন্তর্ভুক্ত তারাপীঠের মত এই মন্দিরের পৃষ্ঠপোষকতাতেও তিনি খামতি রাখেননি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
shaktipeeth nalateshwari

দেবী নলাটেশ্বরী

বাংলার সতীপীঠের অন্যতম কেন্দ্রভূমি বীরভূম। এই জেলায় বেশ কয়েকটি সতীপীঠ রয়েছে। এই সব সতীপীঠের অন্যতম নলহাটি। কথিত আছে, এখানে দেবীর কণ্ঠনালি পড়েছিল। বীরভূমের রামপুরহাট মহকুমা থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে এই নলহাটি। জায়গাটা ঝাড়খণ্ড সীমানায়। এখানে দেবীর নিত্যপুজো হয়। আর, বিশেষ পুজো হয় বছরে দু'বার। একটা দুর্গাপুজোয়, অন্যটা কালীপুজোয়। এর মধ্যে দুর্গাপুজোর চার দিন দেবীকে দুর্গারূপে পুজো করা হয়।

Advertisment

ব্রাহ্মণী নদীর তীরে এই মন্দির। পাশেই ললাট পাহাড়। কথিত আছে, তার নীচে দেবী সতীর কণ্ঠনালি পড়েছিল। সেই কণ্ঠনালির স্থানের ওপর বেদী বানিয়ে দেবী নলাটেশ্বরীর মন্দির তৈরি হয়েছে। মন্দির কমিটির সদস্যদের দাবি, নলাটেশ্বরী মন্দিরে দেবীর পাথর হয়ে যাওয়া কণ্ঠনালি রাখা আছে। প্রতিদিন দেবীকে স্নান করানোর পর ও মঙ্গলারতির আগে ভক্তদের সেই পাথররূপী কণ্ঠনালি দেখানো হয়।

মন্দিরে রয়েছে দেবীর পাথরের মূর্তি। যার উচ্চতা প্রায় চার ফুট। দেবীর মুখমণ্ডল সিঁদুর দিয়ে রাঙানো। দেবীর মাথার ওপর চাঁদির ছাতা রয়েছে। ত্রিনয়না দেবীর দীর্ঘ ভ্রু। দাঁতের ওপরের আর নীচের পাটির মাঝখান দিয়ে দেবী কালীর মতই বিরাট জিহ্বা বেরিয়ে আছে। শাস্ত্রমতে দেবীর নাম শেফালিকা। আর, তাঁর ভৈরব হলেন যোগীশ। কথিত আছে, দেবীর মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন নাটোরের রাজমাতা রানি ভবানী। তাঁর আত্মীয় মুর্শিদাবাদের নসিপুরের জমিদার দেবী সিংহের স্ত্রী রানি সূর্যকুমারীর নামে ছিল মন্দিরের জমি ও সম্পত্তি।

আরও পড়ুন- কোন বাহনে আসছেন এবং ফিরবেন দুর্গা, জনজীবনে তাতে কী প্রভাব পড়বে?

এখন মন্দিরের ট্রাস্টি কমিটি এই পুজোর পরিচালনা এবং কাজকর্ম দেখভাল করেন। নলাটেশ্বরী মন্দিরের উত্তর দিকে রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন। কথিত আছে, কাশী থেকে কুশলানন্দ ব্রহ্মচারী নামে এক সাধক প্রথমে তারাপীঠে এসেছিলেন। পরে তিনি নলহাটিতে এসে এই পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন।

প্রতিদিন ভোর পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এই মন্দির খোলা থাকে। দেবীর পুজোর প্রধান উপকরণ বলতে চাঁছি ও পেঁড়ার সন্দেশ। প্রতিদিন সূর্যোদয়ের পর হয় দেবীর অঙ্গরাগ। ভক্তদের বিশ্বাস, শুধু সতীপীঠ বলেই নয়। দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। বিপদ-আপদে পড়লে তাঁর মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করলে বিপদ থেকে মুক্তি মেলে। পূরণ হয় বহু পুরোনো মনস্কামনাও।

Birbhum Durga Puja Temple
Advertisment