নবরাত্রির পঞ্চম দিনে আরাধনা করা হয় দেবী স্কন্দমাতার। দেবসেনাপতি কার্তিকের অপর নাম স্কন্দ। তিনি দেবী পার্বতীর সন্তান। স্কন্দমাতা রূপে তাই দেবীকে কার্তিকের জননী হিসেবে কল্পনা করা হয়। আশ্বিন এবং চৈত্রের নবরাত্রিতে মহাদেবীকে স্কন্দমাতা রূপে আরাধনা করেন ভক্তরা।
দেবী স্কন্দমাতা চতুর্ভুজা। তাঁর ওপরের দুই হাতে থাকে পদ্মফুল। আর, নীচের একহাতে তিনি স্কন্দ বা কার্তিকেয়কে ধরে রাখেন। অন্য হাত থাকে বরযুক্ত মুদ্রা বা আশীর্বাদসূচক ভঙ্গিমায়। দেবী পদ্মাসনা রূপে থাকলেও, তাঁর বাহন সিংহ সঙ্গেই থাকে। দেবীর কোলে থাকে স্কন্দ বা শিশু কার্তিক। যাঁর হাতে থাকে তির-ধনুক। কিন্তু, তাঁর মুখ তথা মাথা ছয়টি। দক্ষিণ ভারতে অবশ্য এই কার্তিকেরই উপাসনা হয়। সেখানে দেবসেনাপতি কার্তিককে বলা হয় মুরুগান। দক্ষিণ ভারতে অনেকে আবার কার্তিককে ডাকে সুব্রহ্মণ্যম নামে।
শিবপুরাণের রুদ্রসংহিতা কুমার খণ্ড অনুযায়ী, মহাপরাক্রমী অসুর তারকাসুরকে বধ বা হত্যা করতেই দেবসেনাপতি কার্তিকেয় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তারকাসুর অত্যন্ত অত্যাচারী হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর অত্যাচারে মুনি-ঋষি থেকে দেবতা, সকলেই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। শিবের যাতে সন্তান না-হয়, সেজন্য তারকাসুর শিব-দুর্গার বিয়েতেও বাধা দিয়েছিলেন। কিন্ত, তাতে লাভ হয়নি। সেই বিয়ে হয়েছিল। যথাসময়ে জন্ম হয়েছিল দেবসেনাপতি কার্তিকেয় বা কার্তিকের।
আরও পড়ুন- নবরাত্রির চতুর্থীতে উপাসনা করা হয় দেবী কুষ্মাণ্ডার, ভক্তরা কী পান দেবীর আরাধনায়?
পুরাণ অনুয়ায়ী, দেবী স্কন্দমাতার আশীর্বাদ অত্যন্ত কার্যকরী। তাঁর আশীর্বাদে ভক্তদের যাবতীয় মনোস্কামনা পূরণ হয়। জীবন শান্তিময় হয়ে ওঠে। দেবী স্কন্দমাতা তেজ, শৌর্য, পরাক্রম, বিদ্যা ও অভয়দানের প্রতীক। সাধকদের একাংশের মতে, তিনি দেহের বিশুদ্ধ চক্রে অধিষ্ঠিতা। নবরাত্রির পঞ্চম দিনে দেবী স্কন্দমাতার আরাধনা করলে বিদ্যার প্রাপ্তি, বল ও শত্রুবিনাশ ঘটে। এই দেবীর আরাধনা করলে সঙ্গে কার্তিকের আরাধনাও হয়ে যায়।
কাশী তথা বারাণসীতে দেবী স্কন্দমাতার মন্দির রয়েছে। কাশীর নাগকুরার কাছেই রয়েছে দেবী স্কন্দমাতার মন্দির। মন্দিরের গর্ভগৃহটি ছোট হলেও স্কন্দমাতার বিগ্রহের আয়তন যথেষ্ট বড়। আশ্বিন এবং চৈত্রের নবরাত্রির পঞ্চমীর দিন কাশীর এই মন্দিরে ব্যাপক ভক্তসমাগম ঘটে।