Advertisment

গলা ভাঙলেই গার্গল নয়, জেনে নিন ডাক্তারের পরামর্শ

স্বরযন্ত্রীতে লুব্রিকেশন কমে গেলে ওই জায়গাটা ঘষা লেগে খসখসে হয়ে যায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অলংকরণ- অভিজিৎ বিশ্বাস

এই যে সকাল সন্ধে শীত শীত ভাব, অথচ শীতও ঠিক মতো পড়েনি, এই সময়ের খুব চেনা সমস্যা ঘন ঘন গলা ভাঙা। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখলেন গলা দিয়ে আওয়াজ বেরোচ্ছে না। দিন গড়াতে থাকলে সাবাভাবিক অবস্থায় আসছেন অনেকটা, আবার অফিসে পৌঁছে কাজ করতে শুরু করেছেন কী করেননি, কথা বলতে গিয়ে বুঝলেন অবস্থা আবার যেই কে সেই। এই সময়ে এটা কিন্তু খুব চেনা সমস্যা। এই সমস্যা এবং তার প্রতিকার নিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে কথা বললেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ টিকে হাজরার সঙ্গে। দেখে নেওয়া যাক কী বললেন ডাক্তার বাবু।

Advertisment

শীতকালে গলা ভাঙে কেন?

নাক হল আমাদের শরীরের এসি মেশিনের মতো। শীতকালে বাতাসে জলীয়বাষ্প যখন কমে যায়, নাক শরীরে জলীয়বাষ্প ধরে রাখতে শুরু করে। বর্ষাকালে আবার যখন জলীয়বাষ্প বেশি থাকে, তখন নাক অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প থেকে শরীরকে দূরে রাখে। শুষ্ক শীতকালে এই গলাকে ভিজিয়ে দেওয়ার কাজটা কম হলেই গলা ভেঙে যায়। তার ওপর শীতকালে যেহেতু বাতাস ভারী হওয়ার কারণে ধুলো ময়লা সবই ভূ-পৃষ্ঠের কাছাকাছি দূষণের পরিমাণ বেশি থাকে। এর ফলে সাইনাস এবং নাকের সংক্রমণ বেশি হয় এই সময়ে। শরীরকে ভিজিয়ে দেওয়ার কাজটাও কম হয়। তার ফলে গলাতেও সংক্রমণ হয়। স্বরযন্ত্রীতে লুব্রিকেশন কমে গেলে ওই জায়গাটা ঘষা লেগে খসখসে হয়ে যায়। তার ওপর যাদের ঘরের এসি মেশিনে ঠাণ্ডা লাগার ধাত রয়েছে, রোদে ঘুরলে মাথা ব্যথা হয়, তাঁদের কিন্তু গলা ভেঙে যাওয়ার ধাত রয়েছে।

আরও পড়ুন, মন্ত্রীমশাই-এর লঙ্কাকাণ্ড! বলি, আপনার কাণ্ডজ্ঞান হবে কবে?

গলা ভেঙে গেলে গার্গল করবেন না খবরদার

গলা ভাঙলেই অনেকে বলে থাকেন গার্গল করতে। কিন্তু এটা ভুল। গার্গলে গলার বিশ্রাম হয় না। সাধারণত গলার বিশ্রাম নেওয়া খুব দরকার। আর গলার জন্য গরম জলের ভাপ নিলে অনেকটা উপকার হয়, কারণ শ্বাসনালীতে গরম জল না গেলেও গরম বাষ্পটা গিয়ে লুবরিকেন্ট-এর কাজ করে, গলায় আরাম হয়। গরম জল খেলেও উপকার হয়। চা-কফিও পান করা যেতে পারে। কিন্তু হাইপার অ্যাসিডিটি আছে, এমন (ল্যারিঙ্গো ফ্যারিঞ্জাল রিফ্লাক্স ডিসিজ) রোগীদের কিন্তু চা-কফি বেশি খেলে গলার আশপাশ অনেক বেশি শুকনো হয়ে যায়। তাঁদের রাতের খাওয়ার খাবার পর অন্তত দু'ঘন্টা পরে শুতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর খুব ভারী, মশলাদার খাবার রাতে না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। যারা পেশাগত ভাবে গান করেন, তাঁদের আমরা একটানা ৫ টা গান গাইতে না করি, এবং গানের আগে পরে, ভেপার নিতে বলা হয়।

আরও পড়ুন, সামনেই বিয়ে? কী কী মেডিকাল টেস্ট করাবেন, জেনে নিন

কত দিন টানা গলা ভাঙা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে?

আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী জেনেরাল ফিজিশিয়ানদের বলা থাকে রোগীর ১৫ দিনের বেশি গলা ভাঙা থাকলে ইএনটি সার্জনের কাছে রেফার করা উচিত, যিনি আয়না বা যন্ত্রপাতি দিয়ে স্বরযন্ত্র বা ভোকাল কর্ডটা পরীক্ষা করতে পারবেন। অনেক সময় আমরা যেটাকে ছোট পলিপ বা দানা ভাবছি, সেটা ল্যারিঙ্গাল ক্যানসার হতে পারে। বায়োপ্সিতে যদি ক্যানসার ধরা পড়লে তা রেডিয়েশনে ১০০ শতাংশ সেরে যায়। কারণ প্রাথমিক স্তরে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েনি।

Advertisment