কোভিড আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরে উদঘাটিত হচ্ছে নানান সমস্যা! প্রথম থেকেই শ্বাসতন্ত্রের নানান সমস্যা যেমন নাক বন্ধ, ঘ্রাণ এবং স্বাদ হ্রাস পাওয়া, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, সর্দি কাশি, মাথা ঘোরা এবং আরও কত কী। তবে এখানেই শেষ নয়! নতুন উপসর্গ হিসেবে, অনেক করোনা আক্রান্ত রোগীদের থেকেই জানা যাচ্ছে সংক্রমণের এক দুই সপ্তাহ পরেও শ্রবণশক্তি বেশ কম তাঁদের। সহজ কথায়, কানে তালা লেগে যাওয়ার মতো বোধ হচ্ছে তাঁদের।
ইএনটি স্পেশালিস্ট ডা. সোনালি পণ্ডিত এবং কীর্তি সবনিস ( ফর্টিস হাসপাতাল, মুলুন্দ) জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ মানুষের শরীরে অন্যান্য সমস্যার মতোই কানের সমস্যার সৃষ্টি করছে। কোভিড সংক্রমনের প্রথম পর্যায় থেকেই, নাক বন্ধ, গলা ব্যথা এবং শ্বাসকষ্ট এই উপসর্গই বিদ্যমান। তার কিছুদিন পর থেকেই স্বাদ এবং ঘ্রাণ চলে যাওয়ার সম্ভাবনা ভাইরাসের বাসা বাঁধার লক্ষণ। তবে এছাড়াও কোভিডের বেশিরভাগ রোগীদের মধ্যে, অ্যানোসমিয়া (গন্ধ অনুভূতির অনুপস্থিতি), ক্যাকোসমিয়া (বিকৃত গন্ধ উপলব্ধি ), হাইপোসমিয়া (গন্ধের অনুভূতি হ্রাস) এই লক্ষণগুলি উপস্থিত রয়েছে। সাধারণত এই উপসর্গগুলি কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। কিন্তু যদি চার সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রোগীরা অনুভব করতে থাকে, তবে তাদের অবশ্যই তাদের ডাক্তারদের কাছে রিপোর্ট করতে হবে।
কিছু কিছু রোগীদের সূত্রে জানা গেছে, সুস্থ হওয়ার পথে অনেক সময়ই তাঁদের কানে শুনতে নানান সমস্যা হচ্ছে। কানে কম শোনা, তালা লেগে যাওয়া এবং মাঝে মাঝে সেই থেকে মাথা ঘোরানোর সমস্যাতেও ভুগছেন অনেকেই। তার সঙ্গে অত্যধিক মাথা ব্যথা, মুখে ব্যথা এবং কালো ছোপ দেখলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত কারণ এটি ব্ল্যাক ফাংগাসের লক্ষণও হতে পারে।
আরও পড়ুন ১০টি অভ্যাস যা অতিমারীতেও সুস্থ রাখবে ডায়াবেটিস রোগীদের
প্রতিকার: চিকিৎসকদের মতে, কোভিডের উপসর্গ স্বরূপ স্বাদ এবং ঘ্রাণ চলে যাওয়া, মাথা যন্ত্রণা এগুলি সুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুক্ত হবে। কমপক্ষে দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে স্বাদ বুঝতে পারার এবং ঘ্রাণ ফিরে আসার সম্ভাবনা। ভাইরাসটির প্রভাব ক্রমশ কমে গেলেই, সহায়ক কোষগুলি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এবং গন্ধের অনুভূতি পুনরুদ্ধার হয়। কয়েক সপ্তাহ পরেও, যদি রোগীরা তাঁদের গন্ধের অনুভূতি ফিরে না পান, ডাক্তাররা স্টেরয়েড, অনুনাসিক স্প্রে এবং ঘ্রাণ প্রশিক্ষণ বা অনেকেই যোগব্যায়াম সুপারিশ করেন।
যে সকল রোগীরা কানের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের অবশ্যই ইএনটি স্পেশালিস্টের থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত। ইভ ওরাল স্টেরয়েড এবং কানের পর্দায় স্টেরয়েড ইনজেকশন শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন