একেতেই ঠান্ডার রেশ, তারসঙ্গে মন খারাপ করা বৃষ্টি যেন কনকনে ভাব - প্রতিটা বাড়িতেই খোঁজ করলে দেখা যাবে ক্যালপল আর প্যারাসিটামলের ভিড়। সর্দি কাশি আর দিনভর হাঁচিতে জীবন একেবারেই ওষ্ঠাগত, তার সঙ্গেই অজানা এক আতঙ্ক - করোনা নয় তো? কেউ টেস্ট করার প্রয়োজন বুঝছেন কেউ আবার ভয়ের চোটে তার থেকে সাত ক্রোশ দূরে। তবে সাবধান! আপনি নিজের বিপদ ডেকে আনছেন না তো?
বিশ্ব দরবারে নতুন আতঙ্ক কিন্তু এর মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে, যার নাম ফ্লুরোনা অর্থাৎ ফ্লু এবং করোনা ভাইরাসের মিলিত ভাব। ইজরায়েলের বুকে পাওয়া গেছে এমন দুই নারীকে যারা এই সমস্যায় ভুগছেন। এমনিতেও এই সময়ে দাঁড়িয়ে কোনটি সামান্য জ্বর এবং কোনটি করোনা সেটি বোঝা একেবারেই মুশকিল। তবে ফ্লুরোনার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য।
চিকিৎসকরা কী বলছেন এই প্রসঙ্গে?
তাদের মতামত অনুযায়ী এটি আসলে কোনও রোগ না বরং দুটি ভাইরাসের মিলিত প্রভাব! যখন একজন মানুষ দুটি ভাইরাস দ্বারাই সমপরিমাণে আক্রান্ত হন, তখন চিকিৎসার ভাষায় একে ফ্লুরোনা বলে। অর্থাৎ ইনফ্লুনজা এবং করোনা একসঙ্গে সংক্রমিত করতে পারে মানুষকে। এটিকে সিঙ্গেল ইন্ডিভিজুয়্যাল বলা গেলেও রোগের তকমা এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। সঙ্গেই তারা এমনও বলেন ফ্লু জাতীয় ভ্যাকসিন সকলেরই নেওয়া থাকে প্রায়, সুতরাং বাড়াবাড়ি হওয়ার খুব একটা লক্ষণ নেই।
অনেকেই বলছেন এটি নাকি ডবল ইনফেকশন স্বরূপ এবং এর থেকে সাধারণ কিছু সমস্যাই লক্ষ্যণীয়। তবে গবেষণা একে নিয়ে এখনও শুরু হয়নি। যথাসম্ভব চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন যে, নিজেকে যতটা সম্ভব সতর্ক রাখতে হবে। হালকা ঠান্ডা লাগলেই কিন্তু একত্রে আপনাকে সংক্রমিত করতে পারে ফ্লুরোনা। সুতরাং শুধু ভাইরাস নয়, অনিয়ম থেকেও দূরে থাকুন।
কী ধরনের লক্ষণ দেখা যেতে পারে?
যেহেতু একধরনের নয়, দুই ধরনের ভাইরাসের প্রভাব সেই কারণে এটির ধরনও অন্যান্য সব ভাইরাসের মতই যেমন কাশি, সর্দি এবং হাঁচি। এছাড়াও গলা খুসখুস, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে জল পড়ার সমস্যাও দেখা যেতে পারে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই কারণেই ওষুধ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। বেশি দেরি করলে কিন্তু সমস্যা হতে পারে।
কীভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে?
যেহেতু দুটিই ভাইরাস, তাই অবশ্যই শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা থাকছেই অর্থাৎ নাক এবং মুখ থেকেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। এবং সংক্রমিত করতেই পারে। আপনার চারপাশে উপসর্গ হীন এমন অনেকেই আছেন যারা এক মিটারের দূরত্ব থেকে মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে। সুতরাং বারবার হাত ধোয়া এবং মুখ ধোয়ার বিষয়টি কিন্তু এড়িয়ে গেলে চলবে না।
যদিও বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন দুটিই ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে একরকম। অর্থাৎ এমন কিছু সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। এবং দুটির কারণে শরীরে গোপনীয় ভাবে ক্ষতি হতে পারে। তবে হাঁপানি জাতীয় রোগ থেকে সাবধান। দুটি একসঙ্গে পরবর্তীতে কতটা ক্ষতি করতে পারে সেই সম্পর্কে এখনও ধারণা নেই।