যদিও বা বাঙালিদের কাছে দীপাবলির অর্থ সারা বাড়ি প্রদীপের আলোয় সাজিয়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গেই দীপান্বিতা অমাবস্যা অর্থাৎ কালীপুজোর রাত। নিশি মেনেই এইদিন আদ্যাশক্তির আরাধনা করা হয়। তবে সমগ্র ভারতে এর ভাবনা বেশ অন্যরকম। দীপাবলির অর্থাৎ কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চদশ দিনে আলোর উৎসব এবং ধন সমৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ভগবানের কাছে প্রার্থনা। প্রতিবছর তারিখ যদিও বা বদলাতে থাকে। আগামীকাল ৪ নভেম্বর দীপাবলির পূণ্য লগ্ন হিসেবেই নির্ধারিত।
প্রায় একমাস আগে থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়। ঘরবাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার সঙ্গে সঙ্গেই এই সময় মানুষ নতুন করে অনেক কিছুই কেনাকাটা করেন। বাড়িঘর রং করানো থেকে নতুন আসবাব তার সঙ্গেই ডেকরেশনের জন্য প্রদীপ, লাইট, ল্যাম্প, ঘর সাজানোর জিনিস সঙ্গে প্রচুর মিষ্টি আর পুজোর পরে খাওয়াদাওয়া। তবে এর কিছু নিয়ম এবং বিধান আছে।
প্রতি বছর নতুন করে এইদিনে লক্ষ্মী গণেশের মূর্তি স্থাপন করেই বিধি মেনে পুজো করা হয়। সাধারণত, মহালক্ষ্মী এইদিন সুখ এবং সমৃদ্ধির দেবী হিসেবেই পূজিত হন, তবে কেউ কেউ বলেন নতুন কিছু শুরুর পক্ষেও এইদিন বেশ ভাল। সঙ্গেই ভগবান কুবেরের উদ্দেশ্যেও এইদিন পূজা করা হয়। তবে হ্যাঁ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কিন্তু এই পুজো হতেই হবে। এবছরের মুহুরাত সন্ধ্যে ৬টা বেজে ৯ মিনিট থেকে রাত ৮টা বেজে ৪ মিনিট পর্যন্ত।
নিয়ম কী রয়েছে? শুধুই সকাল থেকে উপোস থাকার নির্দেশ থাকে। নয়তো নির্জলা উপবাস নয়তো শুধুই ফল খাওয়া যেতে পারে। প্রদোশ সময়ে এবং লগ্ন মেনেই পুজো হওয়া বাধ্যতামূলক। দীপাবলির পূজা উপলক্ষে যে বিষয়গুলি করতেই হয় : আত্ম শোধন অর্থাৎ নিজের শুদ্ধিকরণ, দ্বিতীয়- উপবাস পালন এবং পুজোর সময় বেশ কিছু সংকল্প নিতে হয়। পরিবারে শান্তি এবং সমৃদ্ধি আনতে বেশ কিছু শান্তি মন্ত্র এবং মঙ্গলমন্ত্র পাঠ করা আবশ্যিক। কলশ প্রতিস্থাপন, ভগবান গণেশের সঙ্গেই নবগ্রহ পুজো, মহাকালী পুজো, মহালক্ষ্মী পুজো, কুবেরের আরাধনা ইত্যাদির মাধ্যমেই এই পুজো সম্পন্ন হয়।
সময়সূচি দেওয়া রইলঃ
প্রদোশ কাল: সন্ধ্যে ৫টা ৩৪ মিনিট থেকে রাত ৮টা ১০ মিনিট
ভৃষভা কাল : সন্ধ্যে ৬টা নয় মিনিট থেকে রাত ৮টা ৪ মিনিট
অমাবস্যা তিথি : ৪ঠা নভেম্বর ভোর ৬টা তিন মিনিট থেকে ৫ই নভেম্বর রাত ২টো বেজে ৪৪ মিনিট।
দীপাবলির দিনে বাড়িয়ে রঙিন আল্পনা, যাকে রঙ্গলি বলা হয় এমনকি চারিদিকে প্রদীপের মালা সাজাতে ভুলবেন না। আলো নেভাবেন না। শক্তির আরাধনা করবেন। তবেই জীবনে মোক্ষলাভ সম্ভব।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন