/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/04/cats-90.jpg)
প্রতীকী ছবি
তীব্র গরমে সকলের হাঁসফাঁস অবস্থা। আপাতত এখনই গরম থেকে নিস্তার নেই বলেই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের পর চলতি বছরের এপ্রিল রয়েছে একেবারে শুষ্ক। তাছাড়া এমনিতেই এপ্রিল মাসে কলকাতাবাসী সাক্ষী থাকে ২ থেকে ৩টি কালবৈশাখীরও , তবে এবার সেই কালবৈশাখীরও কোনও দেখা মেলেনি।
২৯ এপ্রিলের পর বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের অবস্থান পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া ক্ষীণ বদলের আশা করছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আর এই হাত ধরেই আগামী ২ মে থেকে ৫ মে’র মধ্যে কলকাতায় বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর হাওয়া অফিস।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে কোথাও আবার ৪০ ছুঁইছুঁই। এর মধ্যে আজও রাজ্যের একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহ জারি থাকার কথা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এই গরমে সব থেকে বেশি চিন্তা হিট স্ট্রোক নিয়ে। প্রচণ্ড গরমে শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। সেই সঙ্গে ফলের রস, গ্লুকোজ, ORS সঙ্গে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক সৌম্যজিত গুহ।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/04/Heatwave-Main.jpg)
প্রথমেই আমদের জানতে হবে হিট স্ট্রোক কি এবং কেন হয়?
মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। কোন কারণে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রির বেশি হয়ে গেলে মানুষের রক্তচাপ কমে যায়, এমনকি অচেতনও হয়ে পড়তে পারেন। এ ধরণের ঘটনাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘হিট স্ট্রোক’ বলা হয়। যথাসময়ে চিকিৎসা না করলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। প্রচণ্ড গরমে দীর্ঘ সময় রোদে থাকলে অথবা অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে শরীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, যার কারণে ‘হিট স্ট্রোক’ হয়।
কাদের মধ্যে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি?
প্রথমত বয়স্ক এবং শিশুদের মধ্যে এই হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেশি কারণ তাদের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তুলনায় কম। তবে চিকিৎসক গুহ জানাচ্ছেন এই গরমে যে কেউই যে কোন সময়ে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। সেই সঙ্গে গরমে যাদের প্রচণ্ড কায়িক পরিশ্রম করতে হয় তাদের হিট স্ট্রোকের চান্স বেশি।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/04/Heatwave-1.jpg)
কী করে বুঝবেন হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন?
■ মাথা ঝিমঝিম করা।
■ নিশ্বাস দ্রুত হওয়া
■ রক্তচাপ কমে যাওয়া
■ শরীর থেকে ঘাম নির্গত হওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া
■ নাড়ির স্পন্দন ক্ষীণ ও দ্রুত হতে থাকা
■ প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
■ ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যাওয়া
■ রোগী অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে
■ হৃদপিণ্ডের গতি দ্রুত হয়ে যাওয়া
চিকিৎসা-
■ রোগীকে অপেক্ষাকৃত শীতল কোন স্থানে নিয়ে যেতে হবে।
■ ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর স্পঞ্জ করতে হবে।
■ প্রচুর পরিমাণে জল, ORS খাওয়ান।
■ বেশি অসুস্থ বোধ করলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে যা করনীয়-
■ এই গরমে সুস্থ থাকতে হলে প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হবে। বাইরে বেরোলে ORS অথবা গ্লুকোজ সঙ্গে রাখা উচিত। দিনে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ লিটার জল খাওয়াটা এই গরমে খুবই দরকার।
■ দিনে দু থেকে তিন বার স্নান করুন।
■ প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন প্রচুর রসালো ফল। রসালো ফল আপনার শরীরের জলের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করার পাশাপাশি বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল ও খনিজের অভাব দূর করবে।
■ খাদ্য তালিকায় অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে সবজি রাখুন এবং তরকারিতে ঝোল রাখুন। এসময় যতটা সম্ভব কষা রান্না, তেল, ঝাল মশলা এড়িয়ে চলায় ভাল। রাস্তায় ফাস্ট ফুড, কাটা ফল এড়িয়ে চলুন।
■ চা-কফি এড়িয়ে চলুন।
■ অতিরিক্ত মাংস খাওয়া শরীরের জন্য এমনিতেই ক্ষতিকর। প্রতিদিন মাংস খেলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে নানা রোগ। আমাদের শরীরের বেশিরভাগ রোগের অন্যতম কারণ প্রতিদিন মাংস খাওয়া। তাই প্রচণ্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে কম পরিমাণে মাংস খান। সেই সঙ্গে অ্যালকোহল কম খাওয়া এই গরমে খুবই জরুরি।
■ গরমে নিয়মিত পান করুন লেবুর শরবত কিংবা বেলের শরবত। সম্ভব হলে ডাবের জল পান করুন।
■ বাড়ির বাইরে বেরোলে ছাতা ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
■ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আরামদায়ক জামাকাপড় পরা। এই গরমে সুতি পোশাক এবং পোশাকটি ঢিলেঢালা পোশাক পরার চেষ্টা করুন, কেননা আঁটসাঁট পোশাকে গরম বেশি অনুভূত হয়।সেই সঙ্গে ঘাম বসার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
■ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই গরমে রোগ থেকে এসেই ঠাণ্ডা জল খাবেন না। অথবা স্নান করবেন না। বাইরে থেকে এসে বিশ্রাম নিয়ে জল খান এবং বেশ কিছু সময় পরে স্নান করুন।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us