শুক্রবারে সন্তোষী মা-র ব্রত পালনের কথা আমরা অনেকেই শুনেছি। কারও কারও বাড়িতে আবার এই ব্রত পালনও হয়। কিন্তু, কোথা থেকে উত্পত্তি হল সন্তোষী মায়ের? এজন্য আপনাদের যেতে হবে রাজস্থানের যোধপুরে। সেখানে লাল সাগরের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে সন্তোষী মাতার মন্দির। মন্দিরের সঙ্গেই রয়েছে অমৃত কুণ্ড। মন্দিরের পাশাপাশি, সেখানেও পুজোর্চ্চনা করেন ভক্তরা। জায়গাটা যোধপুর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে।
এই মন্দিরে পুজোর্চ্চনা করে ভক্তদের মনস্কামনা পূরণ হওয়ায় ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে দেবী সন্তোষীর খ্যাতি। ষাটের দশকে মৌখিক প্রচার, ব্রতের বই ছাপানো, লিফলেট বিলির মাধ্যমে প্রচার বাড়তে থাকে। সেই জনপ্রিয়তা পৌঁছয় বলিউডেও। ১৯৭৫ সালে মুক্তি পায় বলিউডের ছবি 'জয় সন্তোষী মা'। এরপর গোটা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে সন্তোষী মায়ের কথা। বর্তমানে ভারতের পাশাপাশি নেপালেও তাঁর পুজো হয়। ১৬টি শুক্রবার তাঁর ব্রত পালন করলে দেবী খুশি হন বলেই বিশ্বাস ভক্তদের।
কথিত আছে, রাখি পূর্ণিমার দিন ভগবান গণেশের বোন তাঁর হাতে রাখি বাঁধছিলেন। তাই দেখে গণেশের দুই ছেলে শুভ আর লাভেরও ইচ্ছা হয়, তাঁরা বোনের হাতে রাখি পরবেন। দুই ছেলের মন রাখতে গণেশ সৃষ্টি করেন এক কন্যার। রাখি পূর্ণিমার সেই দিনটি ছিল শুক্রবার। অসন্তোষের অবসান ঘটিয়ে গণেশের দুই ছেলের বোন পাওয়ার ইচ্ছা পূরণ করে তাঁদের সন্তুষ্ট করেছিলেন। তাই দেবীর নাম সন্তোষী।
আরও পড়ুন- সবাই ভয় পান শনিকে কিন্তু, শনি ভয় পান হনুমানকে, জানেন কেন?
তাঁর জন্ম শুক্রবার হওয়ায়, দেবী সন্তোষীর ব্রত শুক্রবার করেই পালন করা হয়। কথিত আছে দেবী চতুর্ভুজা। তাঁর পরনে লালবস্ত্র। একটি হাতে ত্রিশূল, একটিতে তলোয়ার, একটি হাত আশীর্বাদের, চতুর্থ হাতটি রয়েছে সংহার মুদ্রায়। তাঁর ত্রিশূল সত্ত্ব, রজ ও তমগুণের প্রতীক। তলোয়ার জ্ঞানের প্রতীক।
কথিত আছে, শুক্রবার উপোস করে দেবী সন্তোষীর পুজো করলে শুভ ফললাভ হয়। শুক্রের খারাপ প্রভাব কেটে ভালো প্রভাব পড়ে। রোগ-ব্যাধি দূর হয়ে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগে। বৈবাহিক জীবন আনন্দে ভরে ওঠে। বিপদের আশঙ্কা কমে। বাড়িতে ইতিবাচক শক্তি বাড়ে। নেতিবাচক শক্তি কমে।