Hindu rituals Holika dahan: বাঙালির ন্যাড়াপোড়াই অবাঙালির কাছে হোলিকা দহন। ছোটবেলায় ন্যাড়াপোড়ায় অংশ নিলেও অনেক বাঙালিই হোলিকার নাম শোনেননি। বরং, জানতেন এটা হল বুড়ির ঘর। যদিও হোলিকা দহনের সঙ্গে মিশে আছে এক ঐতিহ্য।
হোলিকা দহনের পৌরাণিক সূত্র
এই হোলিকা দহনের সঙ্গে মিশে আছে ভক্ত প্রহ্লাদের নাম। পুরাণ মতে, রাক্ষস রাজা হিরণ্যকশিপুর পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন পরম বিষ্ণুভক্ত। সেই কারণে প্রহ্লাদকে হত্যার জন্য হিরণ্যকশিপু তাঁর বোন হোলিকার আশ্রয় নেন। হোলিকার তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে ব্রহ্মাদেব একটি চাদর দিয়েছিলেন। যা পড়লে, তাঁকে আগুন স্পর্শ করতে পারবে না। সেই কারণে হোলিকা নিজে সেই চাদর পরে খেলার ছলে প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনের মধ্যে বসেন। কিন্তু, বিষ্ণুর কৃপায় সেই চাদর প্রহ্লাদের গায়ে চলে যায়। আর, হোলিকা পুড়ে মারা যান। যা আসলে, অশুভ শক্তির বিনাশ এবং শুভ শক্তির জয় বলে মনে করা হয়।
কীভাবে পালিত হয় হোলিকা দহন
এই উৎসবের জন্য খোলা মাঠ বা প্রাঙ্গণে কাঠ, গাছের শুকনো ডাল ও জ্বালানি মজুদ করা হয়। মাটি দিয়ে পুতুল বানিয়ে তা সেখানে রাখা হয়। সেই পুতুলকে হোলিকার প্রতিরূপ বোঝানো হয়। তার মধ্যে আলু, বেগুন এসব রাখা হয়। উত্তর ভারত, নেপাল এবং দক্ষিণ ভারতের কিছু জায়গা আবার ঐতিহ্যগত ভাবে হোলির আগের রাতে শিশুরা বিভিন্ন ধরনের জিনিস চুরি করে আনে। সেগুলোকে হোলিকার আগুনে পোড়ায়। আগুন জ্বলার সময় চারপাশে পরিক্রমা করে ।
আরও পড়ুন- আপনার প্রিয় মানুষটির সঙ্গে হৃদয়ের দূরত্ব দূর করে পাঠান হোলির শুভেচ্ছাবার্তা
মিশে নানা বিশ্বাস
মনে করা হল, শীঘ্র বিবাহের জন্য যজ্ঞ সামগ্রীতে ঘি মিশিয়ে হোলিকা দহনের সময় আগুনে রাখলে দূর হয় বিয়ের বাধা। সঙ্গে, হোলিকা দহনের আগুনের চারপাশে সাত বার ঘুরতেও হয়। এতে নাকি দাম্পত্য সমস্যাও দূর হয়। আবার, দীর্ঘায়ুর জন্য নিজের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী একটি কালো সুতো নিতে হয়। আর, তা নিজের শরীরের চারপাশে সাতবার ঘোরাতে হয়। আর, সেটা হোলিকার আগুনে নিক্ষেপ করতে হয়। এতে নাকি সমস্ত রোগ, ত্রুটি এবং কুদৃষ্টি ধ্বংস হয়। জীবন দীর্ঘায়ু হয়। আবার, আর্থিক সুবিধার জন্য হোলিকা দহনের সময়- আখ, ক্ষীর এবং বাতাসা নিবেদন করার রীতিও আছে। এতে নাকি মহালক্ষ্মীর আশীর্বাদ অটুট থাকে। বিভিন্ন কাজে সাফল্যও পাওয়া যায়।