কথিত আছে, এখানে শিবলিঙ্গ দিনকে দিন বাড়ছে। যে শিবলিঙ্গে জল ঢালতে, পুজো করতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন লক্ষ লক্ষ ভঙ্গ। এই মন্দির শিবডাঙ্গি মন্দির নামে পরিচিত। মালদা জেলার মন্দিরটি কয়েকশো বছরের প্রাচীন। কথিত আছে, কৈবর্তরাজ ভীম এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাই এই মন্দিরকে ভিমডাঙ্গিও বলা হয়। আগে দিনাজপুর জেলার মধ্যে ছিল এই মন্দির। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দির অত্যন্ত জাগ্রত।
Advertisment
মালদা জেলার বামনগোলা ব্লকের অন্তর্গত নালাগোলা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে এই মন্দির। এখানে যেতে হলে ধরতে হবে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক। সেখান থেকে ধরতে হবে নালাগোলা রাজ্য সড়ক বা এসএইচ ১০এ। যেতে হবে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে মদনাবতী গ্রাম। পাল যুগের রাজা মদন পাল এখানে রাজধানী স্থাপন করেছিলেন। সেই থেকে জায়গাটির নাম মদনাবতী। এই মদনাবতী গ্রামেই রয়েছে ঐতিহাসিক শিবমন্দির। এমনিতে তিলভাণ্ডেশ্বর শিবমন্দির নামে পরিচিত হলেও এই মন্দির হরিহর শিবমন্দির নামেও বিখ্যাত। মন্দিরটিকে প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো এক বটবৃক্ষ চারপাশ থেকে ধরে রেখেছে বা ঘিরে রেখেছে।
আজও মদনাবতী এলাকায় কৈবর্তরাজ ভীমের পুজো হয়। মহিলারা কাঁচা মাটি দিয়ে ভীমের শোয়ানো মূর্তি তৈরি করেন। কারণ, ভীমকে পালবংশের রাজা রামপাল পরাস্ত করেছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ভীমকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাতির পিঠে চাপিয়ে। পরবর্তীতে মোটা কাঠের গুঁড়ি দিয়ে ভীমকে পিষে মারা হয়েছিল। সেই পিষে মারার সময় ভীমকে শোয়ানো হয়েছিল। সেই স্মরণে আজও এখানে মাটিতে শায়িত ভীমের মূর্তি গড়া হয়।
এই মন্দিরের গর্ভগৃহ বেশ প্রশস্ত। একসঙ্গে অনেকে বসে পুজো দিতে পারেন। শ্রাবণ মাসে, ভাদ্র পূর্ণিমায়, শিবরাত্রিতে, প্রত্যেক সোমবারে এই মন্দিরে ব্যাপক ভিড় হয়। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা অবধি এখানে পুজো দেওয়া যায়। যে কোনওদিন এসে পুজো দেওয়া যায়। মন্দিরের কাছেই থাকেন পুরোহিত। তাই পুজো দিতে কোনও সমস্যা হয় না।