Bhai Phota 2018: বাঙালি হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিন (কালীপুজোর দুদিন পরে) উদযাপিত হয় ভাইফোঁটা। তিথি অনুযায়ী কখনও এটি শুক্লপক্ষের প্রথম দিনেও উদযাপিত হয়ে থাকে। পশ্চিম ভারতে এই উৎসব 'ভাই দুজ' নামেও পরিচিত। মূলত পাঁচদিন ব্যাপী দীপাবলি উৎসবের শেষদিন ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। আবার, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলা হয় 'ভাইবিজ'। নেপালে ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব পরিচিত 'ভাইটিকা' নামে। সেখানে বিজয়াদশমীর পর এটিই সবচেয়ে বড় উৎসব। এই উৎসবের আরও একটি নাম 'যমদ্বিতীয়া'। মহারাষ্ট্রে মেয়েদের ভাইবিজ পালন অবশ্যকর্তব্য। এমনকি, যেসব মেয়েদের ভাই নেই, তাঁদেরও চন্দ্র দেবতাকে ভাই মনে করে ভাইবিজ পালন করতে হয়। এই রাজ্যে বাসুন্দি পুরী বা শ্রীখণ্ড পুরী নামে একটি বিশেষ খাবার ভাইবিজ অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করার রেওয়াজ আছে।
আরও পড়ুন; Happy Bhai Phota 2018 Wishes: যম দুয়ারে কাঁটা দেওয়ার আগেই শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে দিন ভাইকে
তবে যম আর তাঁর বোনের ভাতৃদ্বিতীয়া নিয়ে একাধিক মত রয়েছে। কেউ বলেন বেদে বা পুরাণে বোনের হাতে যমের ভাইফোঁটা নেওয়ার কথা নেই! পাশাপাশি বলা হয়েছে যমী অর্থাৎ যমের বন নাকি কস্মিনকালেও যমকে ভাইফোঁটা দেননি! উপরন্তু ভাই-বোন হওয়া সত্বেও তাঁদের স্বামী-স্ত্রী-র নিরিখেই বিচার করা হয়। অন্যদিকে কথিত আছে সূর্যদেব ও তাঁর পত্নী সংজ্ঞার যমুনা নামে কন্যা এবং যম নামে পুত্র সন্তান ছিল। এরপর একদিন যমুনা তার বিমাতা কর্তৃক স্বর্গরাজ্য থেকে বিতারিত হয়। যমুনার বিবাহ হয় এক পরিবারে। দীর্ঘকাল পর দিদিকে দেখার জন্য কালী পুজোর দুদিন পরে অর্থাৎ ভাতৃদ্বিতীয়ার দিন যম যমুনার বাড়ি যাত্রা করে। যমুনা সেদিন বলেছিল "ভাতৃদ্বিতীয়ার দিন প্রত্যেক ভাই যেন তার বোনের কথা স্মরন করে আর প্রত্যেক বোন যেন তার ভায়ের মঙ্গলময় দীর্ঘ জীবন কামনা করে।" এরপর যমুনা তাঁর ভাই যমের মঙ্গল কামনায় আরাধনা করে যার পুণ্য প্রভাবে যম অমরত্ব লাভ করে। আর সেখান থেকেই শুরু এই উৎসবের।
অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তাঁর কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়। অপর একটি সূত্রে জানা যায় যে একদা প্রবল পরাক্রমশালী বলির হাতে বিষ্ণু পাতালে বন্দি হন। শেষ পর্যন্ত এগিয়ে এলেন স্বয়ং লক্ষ্মী। তিনি বলিকে ভাই হিসেবে স্বীকার করেন। সেই উপলক্ষে তাঁর কপালে তিলক এঁকে দেন। ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তখন স্বীকার করে বলি লক্ষ্মীকে উপহার দিতে চাইলে লক্ষ্মী ভগবান বিষ্ণুকে চেয়ে নেন। সেই থেকেই ভাইফোঁটা উৎসবের সূচনা।
ভাইফোঁটাকে দেখা হয় সূর্য-সংক্রান্ত উৎসবের প্রেক্ষিতেও। এ ক্ষেত্রে চন্দনের ফোঁটা দেওয়া হয় তা আদতে সূর্যের রূপক। অবাঙালিরা যে রোলির তিলক আঁকেন, তার লাল রঙেও নিহিত রয়েছে সূর্যের তেজ। ধান-দূর্বা বা চালের অনুষঙ্গেও ফিরে আসছে সূর্যের দেওয়া জীবনের আশ্বাস। সূর্যকিরণে পরিপুষ্ট হয় শস্য, সেই শস্যে জীবনধারণ করে মানুষ। এভাবেই যম বা মৃত্যুকে ঠেকিয়ে রাখা। এ ছাড়াও শোনা যায়, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তাঁর কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়।