সম্পূর্ণ মানবজাতির মধ্যে নারীদেহে হরমোনের রদবদল সবথেকে বেশি হয়ে থাকে। মেনস্ট্রুয়েশন হোক কিংবা সন্তানের জন্ম, অথবা মেনোপজের সময় হরমোন কিন্তু এদিক ওদিক হতেই থাকে, এবং এটি খুব স্বাভাবিক বিষয়। তবে যে বিষয়ে সবথেকে বেশি খেয়াল রাখা দরকার, আদৌ এটির বদল হতেই শরীরের ওপর প্রভাব পড়ছে কিনা, কারণ এর কম বেশি গাফিলতিতে নানান ধরনের সমস্যা হতে পারে।
Advertisment
চিকিৎসক এবং আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ অন্বেষা মুখোপাধ্যায় বলছেন, আমরা শরীরকে ঠিক যেমনভাবে চালনা করি এটি সেইভাবেই প্রতিক্রিয়া দেয়! শুধু খাবারদাবার নয়, তার সঙ্গে মানসিক চাপ হোক কিংবা অন্যান্য সমস্যা, সবকিছুর প্রভাব পরে। এক একটি হরমোনের এক একটি সমস্যা দেখা যায়। প্রথমেই জেনে নেওয়া দরকার কোন হরমোনের কিরূপ প্রতিক্রিয়া নারীদেহে?
সাধারণত, ইস্ট্রোজেন, প্রলাক্টিন, টেস্টাস্টরেন, প্রজেস্টেরন, এলএইচ তথা এফেসেইচ এর মাত্রা হ্রাস বৃদ্ধির কারণে শরীর নানাভাবে প্রভাব ফেলে।
ইস্ট্রোজেন :- এই হরমোন নারীদেহে প্রজননের মাত্রা ধরে রাখে। দৈহিক গঠন ভাল করে, হাড়ের শক্তি এবং পেশীর সক্রিয়তা এর ওপরেই নির্ভর করে। প্রজেস্টেরন :- মাসিক ঋতুচক্র সঠিক রাখে, নার্ভের অসুস্থতা কমায়, ঘুমের মাত্রা ঠিক রাখে। টেস্টাস্টরেন :- কোষগুলিকে সক্রিয় রাখে, দৈহিক বিকাশ ঘটায়, প্রজননে সাহায্য করে। প্রল্যাকটিন :- ব্রেস্ট টিস্যু সঠিক মাত্রায় রাখে, সন্তান জন্মের পর ল্যাকটেশনে সাহায্য করে।
তবে এই হরমোন গুলির মাত্রা বেশি থাকলে কী হতে পারে?
ইস্ট্রোজেন, বেশিমাত্রায় থাকলে ওজন বৃদ্ধি এবং ঋতুচক্রের গোলমাল দেখা যায়। কম মাত্রায় থাকলে হাড়ের ক্ষয় এবং সন্তান সমস্যা। প্রজেস্টেরন, বেশি মাত্রায় থাকলে, হজমের গোলমাল, খিদে না পাওয়া, বুকের ওপরে অংশে ফোলাভাব, উদ্বেগ এবং ওজন বৃদ্ধি। কম মাত্রায় থাকলে, মাথা ব্যাথা, মেজাজ গরম তথা ডিম্বাণুর বিকাশ হয় না। টেস্টাস্টেরন, বেশি থাকলে মুখমণ্ডলে অত্যধিক পশম, বিশেষ করে চুল ওঠে এবং মাথায় টাক পড়ে যায়। গালে ব্রণ ছাড়াও মুখে লাল দাগ দেখা যায়। কম থাকলে মেজাজ খারাপ, হাড়ের কমজোরী, স্মৃতি হ্রাস পাওয়া দেখা যায়। প্রোল্যাকটিন, অত্যধিক বেশি মাত্রায় থাকলে, ডিম্বাণুর নিষেক হার কমে যায়। মাসিকের অনিয়ম, ব্রণ এবং গা হাত পা শুকিয়ে যেতে পারে। কম থাকলে মায়েদের মিল্ক প্রোডাকশন কমে যায়, মাসিকের গরমিল দেখা যায়।