বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পরিবেশের ক্ষতি নিয়ে আমরা কতটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, সে নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। এর মধ্যে সাম্প্রতিক সমীক্ষায় প্রকাশ্যে এল ভয়াবহ এক তথ্য। দুনিয়া জুড়ে জলবায়ুর এই বদলে যাওয়া নাকি বাড়াচ্ছে আত্মহত্যার সংখ্যা।
তাপমাত্রার এই ক্রমশ বেড়ে যাওয়ায় নাকি একদিকে বাড়ছে আত্মহত্যার হার, অন্যদিকে বাড়ছে সোশাল মিডিয়ায় বিষণ্ণ শব্দের ব্যবহার।
নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই সমীক্ষা। আয়োজকদের আশঙ্কা, যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মেক্সিকোতেই আরও ২১০০০ আত্মহত্যার সম্ভাবনা রয়েছে। গবেষণা বলছে তাপমাত্রার বৃদ্ধি নাকি সরাসরি মনে ওপর প্রভাব ফেলে। তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে বিষণ্ণ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে পড়ে অনেকেই।
আরও পড়ুন, ফেসবুক আঁকড়ে থাকেন ‘নিতান্তই সাধারণরা’, বলছে গবেষণা
গবেষকরা অবশ্য আগেও লক্ষ করেছিলেন, আত্মহত্যা সবচেয়ে বেশি হয় গরমেই। তবে সেখানে বেকারত্বের হার, দিনের আলোর পরিমাণ ইত্যাদি নানা বিষয়ও ছিল। তাই আত্মহত্যার ওপর শুধু তাপমাত্রার প্রভাব কতটা, তা নির্ণয় করা খুব সহজ নয়। দুইয়ের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক কী, তা বোঝার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মেক্সিকোর হাজার কয়েক মিউনিসিপালিটি তে বিগত বেশ কিছু বছরের জন্ম-মৃত্যুর হিসেব খতিয়ে দেখা হয়েছে।
সোশাল মিডিয়ায় এক প্রজন্মের ভাষা দেখে সমীক্ষকরা জানিয়েছেন মানুষের ভালো থাকার ওপর তাপমাত্রার সরাসরি প্রভাব রয়েছে।
আরও পড়ুন, এই পাঁচটি খাবার আপনাকে উদ্বেগ থেকে দূরে রাখবে
গবেষকরা লক্ষ করে দেখেছেন 'লোনলি', (একা-একা), 'ট্র্যাপড', (ফাঁদে পড়া), 'সুইসাইডাল' (আত্মহত্যাপ্রবণ) এই ধরনের শব্দ বড় বেশি ব্যবহার করা হয় সোশাল মিডিয়ায়। এর আগেও অবশ্য একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সোশাল মিডিয়ায় যারা যত বেশি সক্রিয়, তাঁদের মধ্যে অবসাদের হার সবচেয়ে বেশি। অনেক ক্ষেত্রেই সোশাল মিডিয়ায় ভার্চুয়াল জগত তৈরি করে আসলে সমাজের থেকে জেন ওয়াইকে আলাদা করে দিচ্ছে সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি।
এই প্রসঙ্গে স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মার্শাল বুর্ক বলেছেন, "আত্মহত্যার পেছনে উষ্ণ আবহাওয়া একমাত্র কারণ নয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণও নয়। কিন্তু আমাদের পর্যবেক্ষণ বলছে আমাদের মনের সাবাস্থ্যের ওপর তাপমাত্রার প্রভাব রয়েছে। উষ্ণায়নের সঙ্গে আত্মহত্যার হারের সম্পর্ক সমানুপাতিক।