Advertisment

ছোট হাতের 'i' লেখার সময় উপরের বিন্দুটা কি আপনার পুরো গোল হয়?

'এটা ২ হাজার বছরের প্রাচীন বিজ্ঞান'। গ্রাফো অ্যানালিসিসের মাধ্যমে নাকি মানুষের ব্যক্তি সম্পর্ক এবং শরীর-স্বাস্থ্যের হদিসও মেলে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Graphoanalysis, grapho therapy, graphology

“হাতের লেখাই মানুষ চেনায়, মানুষের সমস্যার কথা বলে এবং ওই হাতের লেখায় প্রয়োজনীয় সংশোধনই মানুষকে বদলে দেয়, এটা ফলিত বিজ্ঞান”।

আইআইটি-র প্রবেশিকার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল ছেলেটা। কিন্তু প্রবেশিকা পরীক্ষা তো পরের কথা, আপাতত প্রস্তুতি নিতে যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সে ভর্তি হয়েছে, সেখানকার 'মক টেস্টে'র প্রশ্নপত্রই সমাধান করতে পারছে না। সেই থেকেই মন খারাপ, ক্রমে আত্মবিশ্বাস টলে যাওয়া, হীনমন্যতা এবং আরও পরে হতাশা। অথচ এই অন্ধকারকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই উধাও করে দিল ইংরেজি বর্ণমালার মাত্র দু'টি অক্ষর- 'm' এবং 'n'! ছেলেটি এরপর শুধু 'মক টেস্টে'ই সফল হয়েছে তা নয়, আজ সে আইআইটি-র ছাত্র। সঠিকভাবে বললে, ছেলেটির 'm' এবং 'n'-এর সংশোধিত 'স্ট্রোকে'ই ক্লিন বোল্ড হয়েছে হীনমন্যতা-হতাশার পার্টনারশিপ, একাধিক 'কেস স্টাডি'র কথা বলে এমনটাই দাবি করছেন কলকাতায় বেড়ে ওঠা এবং একদা যাদবপুরের ছাত্র তথা অধুনা 'গ্রাফোঅ্যানালিস্ট এবং গ্রাফোথেরাপিস্ট' শ্রী নবীন তসনিওয়াল। তাঁর কথায়, হাতের লেখাই মানুষ চেনায়, মানুষের সমস্যার কথা বলে এবং ওই হাতের লেখায় প্রয়োজনীয় সংশোধনই মানুষকে বদলে দেয়, এটা ফলিত বিজ্ঞান। নবীন আরও বলছেন, এই বিদ্যা অন্তত দু'হাজার বছরের পুরানো, স্বয়ং অ্যারিস্টটলই প্রথম এর চর্চা শুরু করেছিলেন। গ্রাফো অ্যানালিসিসের মাধ্যমে নাকি মানুষের ব্যক্তি সম্পর্ক এবং শরীর-স্বাস্থ্যের হদিসও মেলে। এ পর্যন্ত শুনে আর কৌতুহল চাপা গেল না, ফলে আলোচনা ক্রমে সাক্ষাৎকারের চেহারা নিল।

Advertisment

আপনাকে কি 'হস্তলেখাবিদ' বলা চলে?

(একমুখ হেসে ভাঙা ভাঙা ও ধীর বাংলায় বললেন) হ্যাঁ, তা বলতেই পারেন।

শুনতে কেমন 'হস্তরেখাবিদে'র মতো লাগছে। অবশ্য আপনি তো তাঁদের মতোই বলছেন, 'মানুষকে চিনে নেওয়া যায়, তাকে বদলে দেওয়া যায়...'

(ইষৎ ক্ষুণ্ণ) না। গ্রাফোলজি, গ্রাফোঅ্যানালিসিস এবং গ্রাফোথেরাপি পুরোপুরি বিজ্ঞান। আপনি চাইলে অনেক প্রমাণ দিতে পারি...

এই যে তিনটি পরিভাষা ব্যবহার করলেন এগুলির ফারাক কোথায়?

গ্রাফোলজি হচ্ছে বেসিক ব্যাপার। মানে, হাতের লেখা দেখে বোঝা যে এটা কে লিখেছে, কোনও জালিয়াতি হয়েছে কিনা। অর্থাৎ
ব্যাঙ্ক জালিয়াতি বা কোনও অপরাধের তদন্তে হ্যান্ডরাইটিং এক্সপার্টরা যে কাজটা করেন, সেটা 'গ্রাফোলজি'র উপর ভিত্তি করে। 'গ্রাফোঅ্যানালিসিস' হল, হাতের লেখা দেখে যে লিখছে তার মনটাকে পড়ে ফেলা, সে মানুষটা কেমন সেটা বোঝা। আর এটা বুঝে যাওয়ার পরে হাতের লেখায় যেসব 'স্ট্রোক' আছে তার পরিবর্তন করে সেই মানুষটার মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে আসার প্রক্রিয়াটাই 'গ্রাফোথেরাপি'।

দেখুন, বিভিন্ন তদন্তের ক্ষেত্রে গ্রাফোলজি-র ব্যবহার হয়। ফলে ব্যাপারটা আইন গ্রাহ্য, মেনে নিতে সমস্যা হয় না। কিন্তু, গ্রাফোঅ্যানালিসিস এবং থেরাপিকে কেন বিজ্ঞান বলছেন?

হ্যান্ডরাইটিং ইজ বেসিক্যালি মাইন্ড রাইটিং। একটা মানুষের মনের মধ্যে কী চলছে, তার মানসিকতা কেমন, মানে চরিত্রের সব দিকই ফুটে ওঠে তার হাতের লেখায়। কারণ, এটা মাইন্ড রাইটিং। এটা বিজ্ঞান। সেই লেখা দেখেই বিশ্লেষণ করা যায়।

graphology graphoanalysis graphotherapy handwriting expert handwriting analysis যেসব অক্ষরে উপরের দিকে 'লুপ' তৈরি হয়।

আচ্ছা, বিশ্লেষণ না হয় করলেন। কিন্তু, কারও চরিত্র আপনি বদলে দেবেন কী করে?

আপনার মনে কী চলছে, আপনি মানুষটা কেমন সেটাই ভেসে ওঠে আপনার হাতের লেখায়। আসলে আপনার হাত দিয়ে যে অক্ষরগুলি লেখা হয় তা আসলে মনই লেখে। সে জন্যই হাতের লেখা দেখে মনের লেখা পড়া যায়। ফলে আপনার হাতের লেখার 'স্ট্রোক' বদলে দিয়ে আপনার মন-মানসিকতা-ব্যবহার-চরিত্রের মধ্যে নিশ্চিতভাবে পরিবর্তন আনা যাবে। এটা রিভার্স এফেক্ট। থেরাপি একটা পদ্ধতি। এটা প্রমাণিত। তাই এটা বিজ্ঞান।

এই পদ্ধতিটা কী?

প্রথমে একজনকে লিখতে বলা হবে।

কী লিখবেন তিনি? কতটা লিখবেন?

এক পাতা লিখলেই হবে। তাঁর যা ইচ্ছা, তাই লিখবে। তিনি কী বিষয়ে লিখছেন, তাতে আমার কোনও আগ্রহ নেই। আমি শুধু দেখব, তিনি যখন একটানা লিখেছেন তখন তাঁর হাতে লেখা বর্ণগুলিকে, আরও সঠিকভাবে বললে, বর্ণের স্ট্রোকগুলিকে। সেখান থেকেই প্রসেস শুরু। আমি সেই লেখা খতিয়ে দেখে তাঁর চরিত্রের দিকগুলি বলব। এরপর তিনি যদি চরিত্রের বা ব্যবহারের নির্দিষ্ট কোনও দিক পাল্টাতে চায়, তাহলে বর্ণের 'স্ট্রোক' কীভাবে পাল্টাতে হবে সেটা আমি দেখিয়ে দেব।

আপনি একবার দেখিয়ে দিলেই চরিত্র বা ব্যবহার বদলে যাবে?

না। ৩-৪ সপ্তাহের একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। আমি স্ট্রোকগুলো দেখিয়ে দেব, তারপর তিনি রোজ সেগুলি অভ্যাস করবে এবং লিখবে। সেই লেখা নিয়মিত আমাকে দেখাবে। আমি সেগুলি খতিয়ে দেখে আমার যা মনে হবে সেটা তাঁকে জানাব। সে সেই কথা শুনে ৩-৪ সপ্তাহ অভ্যাস করে গেলে এবং আমার পরামর্শ মেনে চললে তাঁর মধ্যে পরিবর্তন আসতে বাধ্য।

আপনার হাত ধরে এমন পরিবর্তন এসেছে?

অনেক 'কেস স্টাডি' আছে (গলায় মৃদু হাসি)। আইআইটি-র জন্য তৈরি হচ্ছিল এক ছাত্র। প্রাইভেটে কোচিং নিচ্ছিল। কিন্তু, ওখানে মক টেস্টের প্রশ্নপত্র সমাধান করতে পারছিল না। অথচ বাড়ি ফিরে ও নিজেই একটু সময় নিয়ে প্রায় সব প্রশ্নেরই সঠিক উত্তর লিখে ফেলছিল। কিন্তু, কিছুতেই 'মক টেস্টে' পারছিল না। হতাশ হয়ে গিয়েছিল। মনের জোর একেবারে চলে গিয়েছিল। আমার কাছে এল। আমি ওকে এক পাতা লিখতে বললাম। ছেলেটি লিখল। আমি দেখলাম, আত্মবিশ্বাসের ভীষণ অভাব।

কীভাবে বুঝলেন যে আত্মবিশ্বাসের অভাব?

ওর 'টি-বার' দেখে। মানে, ইংরেজিতে ছোটহাতের 't' লেখার সময় যে 'বার'টা বাম দিক থেকে ডান দিকে যায়, ওটা যদি স্টেমের (মানে যেটা উল্লম্ব রেখা) খুব উপর দিয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে আত্মবিশ্বাস ভরপুর আছে। যার 'টি-বার' যত উঁচুতে, সে ততই আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু এই ছেলেটির 'টি-বার' বেশ নীচে ছিল। কিন্তু, আমি ওকে 'টি-বার'-এর থেরাপি দিলাম না।

আশ্চর্য! কেন?

'টি-বার ইজ ভেরি কমন'। আমি আসলে বোঝার চেষ্টা করলাম, কেন আত্মবিশ্বাসের অভাব হচ্ছে...

কেন হচ্ছিল, কী বুঝলেন?

আমি ছেলেটিকে 'm' আর 'n'-এর থেরাপি দিলাম। কারণ, 'm' আর 'n' দেখে বোঝা যায়, কেউ কোনো বিষয় চট করে বুঝতে পারে কিনা। আমি দেখলাম, ছেলেটি চট করে বুঝতে পারে না, ওর 'গ্রাসপিং এবিলিটি' কম। উপলব্ধি করার বা বোঝার প্রক্রিয়াটা ওর ক্ষেত্রে ধীর গতিতে হয়। আর এ জন্যই ওর আত্মবিশ্বাসের অভাব হচ্ছিল। তাই, 'টি-বার'-এর থেরাপি দিলে মূল সমস্যাটা মিটত না।graphology graphoanalysis graphotherapy handwriting expert handwriting analysis      m,n লেখার রকমফের।

এরপর কী হল?

ছেলেটি মাস খানেক নিয়মিত 'm' আর 'n' থেরাপি চালিয়ে গেল। আমি ওকে লিখতে দিতাম, তারপর লেখা দেখতাম, সংশোধন করে দিতাম এবং ও সেগুলি মেনে চলত। এরপর ধীরে ধীরে ওর আত্মবিশ্বাস বাড়তে শুরু করল। এখন সে আইআইটি-র ছাত্র।

আপনি যেসব থেরাপির কথা বলছেন, সেগুলি সবই ইংরেজি অক্ষর কেন্দ্রিক। বাংলা, হিন্দি বা অন্য কোনো ভাষায় লিখলেও কি এই বিশ্লেষণ করা সম্ভব?

অবশ্যই সম্ভব। সব ভাষাতেই 'স্ট্রোক' আছে। আর সেই স্ট্রোক নিয়ে লেখাপড়া করলে সব ভাষাতেই বিশ্লেষণ সম্ভব।

এ বিষয়ে কি কোনও কোর্স আছে?

এখনও কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে কোনো কোর্স শুরু হয়নি। তবে কিছু কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৬ মাসের কোর্স করায়। সার্টিফিকেট দেয়। তবে এসব কোর্স তেমন একটা কাজের নয়। অধিকাংশের ক্ষেত্রে অর্থ উপার্জনই মূল উদ্দেশ্য।

আপনি কী করে শিখলেন?

আমার বাবার এসব বিষয়ে খুব আগ্রহ ছিল। আমি বলা যায়, বাবাকে দেখে দেখেই শিখতে শুরু করেছিলাম। তবে আমার এ বিষয়ে কোনো সার্টিফিকেট নেই। যখন যাদবপুরে পড়ি তখন থেকেই বন্ধুদের মধ্যে চর্চা করতাম। অনলাইনে পড়েছি, এখনও পড়ি। এছাড়া প্রচুর বইও আছে।

graphology graphoanalysis graphotherapy handwriting expert handwriting analysis নমুনা হাতের লেখার তাৎক্ষণিক বিশ্লেষণ করলেন শ্রী নবীন তসনিওয়াল। অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস।

ভারতে এ বিষয়ে সচেতনতা কেমন?

একেবারেই নেই। আমেরিকায় বরং অনেক বেশি মানুষ এ বিষয়ে খোঁজ রাখে। আমাদের দেশে কেউ কেউ গ্রাফোঅ্যানালিসিসের কথা জানলেও গ্রাফোথেরাপির কথা তো জানেই না।

আপনি জানানোর চেষ্টা করেছেন? মানে কোনও আলোচনা সভা বা ক্লাস বা কোনও বিশষ উদ্যোগ নিয়েছেন?

গ্রাফোঅ্যানালিসিস-গ্রাফোথেরাপি আমার প্যাশন। আমি কাউকে শেখাইনি এখনও। কারণ, এসব অনেক লেখাপড়া এবং চর্চার বিষয়। পড়াতে গেলে সময় লাগবে অনেক। তাছাড়া, আমার জীবিকা পারিবারিক ব্যবসা। তবে, আলোচনা সভা অনেকগুলি করেছি। সেখান থেকে অনেকে আমাকে দিয়ে পরে অ্যানালিসিস করিয়েছেন এবং ফলাফল পেয়ে অন্যদের আমার কাছে পাঠিয়েছেন।

graphology graphoanalysis graphotherapy handwriting expert handwriting analysis যেসব বর্ণের 'লুপ' নীচের দিকে।

হাতের লেখা দেখে কি একটা মানুষের অতীত-ভবিষ্যৎ বলে দেওয়া যায়?

না। ওসব জ্যোতিষীরা বলেন। গ্রাফোঅ্যানালিসিস দিয়ে শুধু একজনের চরিত্র, মানসিকতা, ব্যবহার- এগুলিই বোঝা যায়। এছাড়া কারও শরীর-স্বাস্থ্য বা ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলি কেমন সেগুলিও বেশ খানিকটা বলা যায়। কারণ, শরীর আর মন যে পরস্পর যুক্ত সেটা তো সবাই জানে। তবে আমি শরীরের ব্যাপারটা পারি না। দিল্লির একজন অ্যানালিস্ট-কে আমি চিনতাম, উনি ৩-৪ বছর হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে গবেষণা করেছিলেন। একেবারে দারুণ বিশ্লেষণ করতেন এবং শরীর-স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যা বলতেন মিলে যেত।

আজকাল তো অনেকেই হাতে প্রায় লেখেই না। কিবোর্ডে লেখে। সেইসব মানুষদের লেখা দেখে কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?

ঠিকই বলেছেন। তবে দীর্ঘদিন হাতে না লিখলেও সমস্যা নেই। যখনই কেউ লিখবে, তখনই তার হাতের লেখায় সে সময় তাঁর মনের উপর দিয়ে কী যাচ্ছে এবং তার তখনকার চরিত্র-মানসিকতা সব ফুটে উঠবে। ফলে বিশ্লেষণ করতে সমস্যা নেই।

আচ্ছা, সাধারণত আমরা ভাল বা সুন্দর হাতের লেখা বলতে যা বুঝি তা কি আপনাদের চোখেও ভাল মানুষের লক্ষণ?

(সহাস্য উত্তর) না, না। হাতের লেখা ভাল হতেই পারে। কিন্তু, মানসিকতার ভাল-মন্দ বলে কিছুই নেই। ভাল হাতের লেখার মানুষের মনেও অনেক তথাকথিত খারাপ প্রবণতা থাকতেই পারে বা এর উল্টোটা।

আমরা তো সকলেই বাড়িতে বা স্কুলে অক্ষর চিনি। যিনি বর্ণ পরিচয় করাচ্ছেন বা হরফ চেনাচ্ছেন তাঁর প্রভাবও তো পড়ে শিক্ষার্থীর উপর। সে ক্ষেত্রে হাতের লেখা থেকে একজন শিশুর চরিত্র বিশ্লেষণও কি সম্ভব?

দেখুন, আমরা সবাই অন্যের কাছ থেকে হরফ চিনি। ঠিকই বলেছেন, তাই যে শেখাচ্ছে তাঁর প্রভাব পড়ে। তবে বয়ঃসন্ধিতে শরীরের নানা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হাতের লেখাও বদলায়। তাই ১৪ বছরের নীচে কারও গ্রাফোঅ্যানালিসিস করা উচিত না। ওই বয়সের পর নিজস্বতার ছাপ পড়ে হাতের লেখায়।

graphology graphoanalysis graphotherapy handwriting expert handwriting analysis   বিভিন্ন রকম 't'।

যাঁরা নিয়মিত লেখেন না, তাঁদের ব্যাঙ্ক চেকে বহু সময় সই মেলে না। এটাকে কী বলবেন?

যাঁরা দীর্ঘদিন একেবারেই লেখেন না তাঁদের ক্ষেত্রে এটা হয়। কারণ, ব্যাঙ্কের কাগজে তিনি যখন সইটা করেছেন, তখন থেকে পরবর্তী সময়ে (যখন সই মিলছে না) মানুষটা অনেকটা বদলে গিয়েছেন। তাছাড়া আরও কয়েকটা কারণ রয়েছে...

কী কারণ?

আসলে গ্রাফোঅ্যানালিসিসের দিক থেকে সই-এর গুরুত্ব খুব কম, ০.৫ শতাংশ। সই করতে করতে গিয়ে হাতের টানে একই বর্ণ খুব কমবারই রিপিট হয়। তাই চরিত্র বিশ্লষণে আমরা সইকে গুরুত্ব দিই না। তাছাড়া ব্যাঙ্কে বা দরকারি জায়গায় সই মেলানোর জন্য একটা অতিরিক্ত আর্থসামাজিক চাপও থাকে মনের উপর। সব মিলিয়েই গণ্ডগোলটা হয়।

তাহলে এই যে অনেকে বলেন, সই বদলে দিয়ে ব্যক্তিত্ব বদলে দেবে, সাফল্য এনে দেবে?

ওসব বুজরুকি। শুধুমাত্র সই থেকে গ্রাফোঅ্যানালিসিস বা থেরাপি অসম্ভব।

আচ্ছা, এক তারকার আত্মহত্যার পর সম্প্রতি হতাশা নিয়ে খুব চর্চা চলছে। আপনার বিদ্যার মাধ্যমে কি এঁদের জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা যায়?

অবশ্যই। জীবন একটা আশীর্বাদ। জীবনের জন্যই তো সবকিছু। আমি নিজে একটি আত্মহত্যাপ্রবণ মেয়েকে জীবনে ফিরিয়ে এনেছি। এসব ক্ষেত্রে গ্রাফোথেরাপি দারুণ কাজ দেয়। শুধু সচেতনতার দরকার।

Advertisment