বর্তমান সময়ে সমাজে সমস্যার সংখ্যা বেড়েছে। জীবন এখন আগের চেয়ে বেশি জটিল হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ একটু শান্তির জন্য ধর্মমুখী হয়েছেন। হিন্দুদের মধ্যে বেড়েছে আশ্রম বা মন্দিরের খোঁজ। অনেকে সৎ গুরুরও সন্ধান করছেন, একটু শান্তি পাওয়ার আশায়। অনেকে আবার পরিচিত মন্দির বা মঠে যাতায়াত করছেন। কিন্তু, এই সৎগুরু বা সঠিক সন্ন্যাসী চিনবেন কী করে? এই ব্যাপারে ঠিক কী বলে গিয়েছে আমাদের শাস্ত্র?
আসলে হিন্দু শাস্ত্র যা বলে গিয়েছে, তা অত্যন্ত সহজ ও সরলভাবে মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন চাণক্য। প্রাচীন ভারতের সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের এই গুরু তথা মন্ত্রীর সেই শিক্ষা যুগে যুগে অনুসরণ করে চলেছেন ভারতবাসী। কারণ, অত্যন্ত সহজে বিস্তারিত বিষয়কে তিনি সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করেছেন। তা মানুষের শিক্ষালাভের জন্য তুলে ধরেছেন।
সঠিক সন্ন্যাসী বা গুরুকে চেনার ব্যাপারে চাণক্য ঠিক কী বলেছেন? এই ব্যাপারে তিনি লিখেছেন, 'মাতৃবৎ পরদারেষু, পরদ্রব্যেষু লোষ্ট্রবৎ। আত্মবৎ সর্বভূতেষু যঃ পশ্যতি পণ্ডিতঃ।।' তাঁর এই কথার বাংলা অনুবাদ করলে হয়, যে ব্যক্তি পরস্ত্রীকে মায়ের মত, পরের জিনিসকে পাথরের মত, সব প্রাণীকে নিজের মত দেখেন, তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী। আর, যিনি প্রকৃত জ্ঞানী, তিনিই গুরু হওয়ার যোগ্য বলে জানিয়েছেন চাণক্য।
আরও পড়ুন- তাঁকে নিয়ে কৌতূহলের অন্ত নেই, চাণক্য কি নাস্তিক ছিলেন? কী বলেছেন তিনি?
চাণক্যের শিক্ষার সাফল্য আমরা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের মধ্যে দিয়ে দেখতে পেয়েছি। কিন্তু, তার চেয়েও বড় কথা, সেই সময়ে হিন্দু শাস্ত্র সবসময় জোর দিত সঠিক ব্যক্তি তৈরির ওপর। কারণ, ব্যক্তি যদি সঠিক না-হন, তবে কখনও আদর্শ সমাজ গড়ে উঠতে পারে না। কারণ, মানুষ সামাজিক জীব। ফলে, সমাজে বাস করতে গেলে মানুষকে অনেক নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। যাতে সমাজের প্রত্যেকের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক থাকে। আর, সেই সুশৃ্ঙ্খল সমাজ গঠন করতেই তৈরি হয়েছে নীতি। যা নীতিশাস্ত্রের মাধ্যমে চাণক্য মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। তবে, এসব তাঁর মনগড়া কথা নয়। যা হিন্দুশাস্ত্রে আছে। সেটাই তিনি একবাক্যে প্রকাশের চেষ্টা করেছেন মাত্র।