২০২০ সালে দাঁড়িয়ে আর কোনও সম্পর্ককেই আর চিরকালীন বলা যায় না। এই হাতে হাত রেখে পথ চলা, তো এই দুজনের পথ আলাদা হয়ে যাচ্ছে, এমনটা ঘটছে আকছার। চুক্তির মুক্তি ঘটিয়ে আলাদা হয়ে যাচ্ছেন স্বামী-স্ত্রী অথবা প্রেমিক-প্রেমিকা। তবে যে কোনও ক্ষেত্রেই বিচ্ছেদের পর সম্পর্ক কোন খাতে এগোবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন চিহ্নের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
আধুনিক সময়ে বিচ্ছেদ কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। কোনও বিচ্ছেদই যেমন কাম্য নয়, তেমনই একসাথে থাকা না গেলে একটা মৃত সম্পর্ককে অহেতুক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মানেও হয় না। তবে বিচ্ছেদ মানে কিন্তু চির শত্রু হয়ে যাওয়া নয়। বন্ধু থেকেও সম্পর্ক থেকে বেরোনো যায়, এবং চাইলে তার পর আগের মতোই বন্ধু থাকা সম্ভব। সম্পর্কের একটি বিশেষ পরিণতিতে ইতি টানি আমরা, কিন্তু তার মানে কিন্তু মানুষটাকে নিজের জীবন থেকে বাদ দেওয়া নয়।
প্রেম ভেঙ্গে গেলে...
এক সঙ্গে অনেকদিন পথ চলেছেন। ভালো, মন্দ দু'ধরনের স্মৃতি থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু অপর প্রান্তের মানুষটির ওপর রাগ পুষে রাখবেন না। মনটা একটু বড় করে দেখুন। সম্পর্কে তিক্ততার মধ্যে দিয়ে শেষ না করে মাঝে মাঝে হালকা অথচ সুস্থ যোগাযোগ রাখুন। পারলে বন্ধু থাকুন। জীবনের অন্য কোনও বাঁকে এই বন্ধুটিই হয়তো আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে। ভবিষ্যতে অন্য কোনও সম্পরকে জড়ালে তাঁর সঙ্গেও প্রাক্তনের দেখা করান, সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে। জীবন খুব ছোট, মালিন্য রাখবেন না। সুন্দর স্মৃতি মনে রাখুন। বর্তমান সঙ্গীর সঙ্গে সে সব নিয়ে খোলা মেলা আলোচনাও করুন।
বিয়ে ভাঙলে...
আমাদের সমাজে এখনও অনেকে ভাবেন, বিয়ের আগে একাধিক সম্পর্ক ভাঙতে অথবা জুড়তে পারে, কিন্তু বিয়ে ভাঙা মানেই জীবন শেষ। এ সব ধ্যান ধারণা নিয়ে পড়ে থাকবেন না। আশেপাশের কেউ এরকম ভাবলে, তাকেও ভাবনার বদল আনতে সাহায্য করুন। একটি বৈবাহিক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে ভবিষ্যতে অন্য সম্পর্কতে যাওয়া যায় বৈধ ভাবে। সে ক্ষেত্রে আপনার প্রাক্তন স্বামী অথবা স্ত্রীয়ের সিদ্ধান্তকে সম্মান করুন। রাস্তা ঘাটে দেখা হলে যাতে মুখ ফিরিয়ে চলে যেতে না হয়, সেইটুকু সখ্য বজায় রাখুন। সন্তান থাকলে কিছু বাড়তি দায়িত্ব থেকে যায়। সন্তানকে অল্প বয়সেই বাবা মায়ের সম্পর্ক নিয়ে স্পষ্ট ধারণা দিন। তবে নিজেদের মধ্যে মনমমালিন্য হলে সন্তানকে বুঝতে না দেওয়াই ভালো। বিচ্ছেদের পরেও সন্তানের দায়িত্ব কিন্তু বাবা মাকে ভাগ করেই নিতে হবে। আর নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখুন, যাতে সন্তান নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগে। সন্তানের জন্য কিন্তু প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রীকে ঘনঘন দেখাও করতে হতে পারে।