স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটির গন্ডি পেরিয়ে প্রথম অফিস, যাকে বলে পুকুর থেকে সোজা সমুদ্রে ফেলে দেওয়ার মতো অবস্থা। নতুন অফিস, এক গুচ্ছ নতুন মানুষ, কারও অ্যাটিটিউডের সমস্যা তো আবার কারও বসি নেচার। এই ধরনের হাজারও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে ওষ্ঠাগত প্রাণ? ডিগ্রি, কাজের দক্ষতার পাশাপাশি মাথায় রাখুন কয়েকটা দিক, ব্যস তাহলেই কেল্লা ফতে, কে বলতে পারে নিজের মুশকিল সামাল দিতে গিয়ে আপনিই হয়ত হয়ে যেতে পারেন বাকিদের মুশকিল আসান।
১) নতুন অফিসে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা শুরু করে দেবেন না, প্রথমে বুঝে নিন আপনার পাশের মানুষগুলো কে কেমন, এরপর তাঁদের চরিত্র অনুযায়ী মিশুন। এতে ভুল ভ্রান্তি হওয়ার সম্ভবনা কমে যাবে অনেকটা।
২) আমাদের ব্যক্তিত্বের মূল কাঠামো তৈরি হয় ছোট থেকেই। পরবর্তীতে যার বিশেষ বদল হয়না। ইন্টেলিজেন্ট কোশেন্ট নয়, আমাদের ব্যক্তিত্ব গঠন করে ইমোশনাল কোশেন্ট অর্থাৎ ইকিউ। তাই শুধু কর্মদক্ষতা নয়, আপনার ব্যক্তিত্বও আপনাকে করে তোলে আকর্ষণীয়। কাজেই নিজেকে তৈরি করুন পরিস্থিতি অনুযায়ী। পোশাকের দিকে খেয়াল রাখুন, নিজেকে প্রেজেন্টবল করে তুলুন বাকিদের সামনে।
৩) অন্ধের মতো সমস্ত বিষয়ে সবার সঙ্গে সহমত না দেখিয়ে ব্যাক্তিগত অনুভূতি,পরিস্থিতি ও যুক্তিকে প্রাধান্য দিন। নিজস্ব মতামত প্রকাশ করুন। আপনার মনে হওয়াটাকে আপনি নিজে গুরুত্ব দিলে, তবেই বাকিদের কাছেও গুরুত্ব পাবে আপনার মতামত।
৪) নিজের ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে অফিসে কারও সঙ্গে কথা না বলাই ভাল। এতে আপনার নিজস্ব ভাবমূর্তি বজায় থাকবে।
৫) মিটিংরুমে বা ওয়ান টু ওয়ান চ্যাটে যা কথা হয়েছে তা যতটা সম্ভব নিজের মধ্যেই রাখুন, বাইরে বেরিয়ে তা সবাই কে বলবেন না। এতে বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হবে ওপর মহলে।
৬) অফিস ইগো বা রাগ দেখানোর কোনও জায়গা নয়। মাথা ঠান্ডা রেখে মতামত জানান। তা যুক্তিযুক্ত হলে অবশ্যই প্রাধান্য পাবে।
৭) আগের দিন অফিস থেকে বেরোনোর সময় একটা লিস্ট করে নিন পরের দিন ঠিক কী কী কাজ আপনাকে করতে হবে এবং সেই টার্গেট মাথায় রেখে পরেরদিন কাজগুলো সেরে ফেলুন। এতে কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হবে এবং বোঝাও কমবে।
৮) কাজের কোয়ান্টিটি নয়, কোয়ালিটির দিকে নজর দিন।
৯) সহকর্মীদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখুন, সাহায্য করুন তাঁদের কাজে তাতে আপনি বিপদে পড়লে তারাই আপনাকে সাহায্য করবে।
১০) কথাতেই আছে ‘যেখানে চাষ সেখানে বাস নয়’ সুতরাং অফিসে প্রেমটা না করাই ভাল, কোনও কারণে পরবর্তীকালে প্রেমটা ঘেঁটে গেলে, আপনি না পারবেন গিলতে না পারবেন উগরাতে। কাজের পরিস্থিতি জটিল হবে আপনার জন্য।
১১) নিজেকে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিন, তবে কমপ্রোমাইজ নয়। সমস্যাগুলো ওপর মহলকে জানান সোজা ভাষায়, কোনও কথা লুকিয়ে রাখবেন না.। সঠিকভাবে কমিউনিকেট করলে কাজ অনেক বেশি সহজ হয়ে যায়।
১২) নিজেকে সবজান্তা ভেবে বসলেই সমস্যা, আপনার জুনিযার হয়ত কোনও বিষযে আপনার থেকে বেশি জানতেই পারে, তাকে হেয় করে নিজেকে সিনিয়র প্রমান করাটা বোকামি।
১৩) অফিসের কাজ সেরে বেরোনোর সময় নিজের কাজ নিয়ে ঠিক কতটা স্যাটিসফায়েড হচ্ছেন সেটা মাথায় রাখুন, এতে প্রতিদিন কর্মদক্ষতা বাড়বে।