পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, একটা সময় গোটা বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল অসুররা। এমনকী, দেবতাদেরকেও তারা স্বর্গ থেকে তাড়িয়ে দেয়। অসুরদের থেকে বাঁচতে এরপর দেবতারা শরণাপন্ন হল দেবী পার্বতীর। তিনি দুর্গা রূপ ধারণ করেন। অসুরদের রাজা ছিল মহিষাসুর। তার সেনাপতি ছিল শুম্ভ ও নিশুম্ভ। দেবী পার্বতী এই প্রবল শক্তিশালী শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করতে নিজের শরীর থেকে এক ভয়ংকর দেবীর জন্ম দেন। তিনি কৃষ্ণবর্ণা। এই হল দেবী কালীর আদিরূপ। সেনাপতি চণ্ড ও মুণ্ডকে বধের সময় দেবীর তৃতীয় নয়ন থেকে উৎপন্ন হয়েছিলেন কালী।
পুরাণ অনুয়ায়ী, অন্যান্য অসুররা বধ হলে যুদ্ধে রাক্ষসদের অন্যতম সেনাপতি রক্তবীজকে কিছুতেই বধ করা যাচ্ছিল না। ব্রহ্মার বরে রক্তবীজের রক্ত মাটিতে পড়লেই তা থেকে জন্ম নিচ্ছিল আরও অসুর। সেই কারণে দেবী কালী রক্তবীজের রক্ত পান করা শুরু করেন। রক্তবীজের রক্ত যেন মাটিতে না-পরে, তা তিনি নিশ্চিত করেন। রক্তবীজকে দেবী শূন্যে তুলে নেন। ওই অসুর সেনাপতির শরীর থেকে বের হওয়া সমস্ত রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই দেবী তা পান করেন। রক্তবীজকে হত্যা করে, তার দেহ দেবী কালী ছুড়ে ফেলে দেন।
আরও পড়ুন- দেবীর নাম কালী কেন, কেন দেবীর পায়ের তলায় মহাদেব?
কথিত আছে, দেবী কালীর উপাসনা করলে ভক্তের যাবতীয় ভয় দূর হয়ে যায়। সাধক দ্রুত আরোগ্য লাভ করে থাকেন। কোনও তন্ত্র-মন্ত্রের প্রভাব ওই ভক্তকে প্রভাবিত করতে পারে না। শুধু তাই নয়, দেবী কালীর আরাধনা করলে ব্যক্তি আত্মরক্ষায় আরও সাবলীল হয়ে ওঠেন। এমনকী, সাধক তাঁর শত্রুদেরও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। পাশাপাশি, দেবীর আশীর্বাদে তিনি বাকশক্তিতেও হয়ে ওঠেন পটু।
এবছর কালীপুজো পড়েছে ২৪, অক্টোবর, সোমবার। অমাবস্যা শুরু হবে বিকেল ৪টা ৫৭ মিনিট ৬ সেকেন্ডে। অমৃতযোগ থাকবে রাত ৩টে ১৬ মিনিট পর্যন্ত। অমাবস্যা থাকবে পরদিন অর্থাৎ ২৫ অক্টোবর, মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ২৬ মিনিট ২৬ সেকেন্ড পর্যন্ত। দেবীর পুজো এই সময়ের মধ্যেই করতে হবে।