রোজ রোজ একঘেয়ে রুটিন, কাজের চাপ, পিয়ার প্রেশার, ডেডলাইন, সংসারে অশান্তি এসবের মাঝে জীবনটা পুরো ঘেটে গেছে তো? সোম থেকে শনি যে দিনটার জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকেন, সেটাও কেটে যায় কাজে কম্মে। হাঁপিয়ে উঠছেন ভীষণ রকম। সপ্তাহের একটা ছুটির দিন কাটান মনের মতো। জেনে নিন ক্ষণিকের অবকাশকেও সুন্দর করে তোলার কিছু নিয়ম। সপ্তাহের একটা দিন এমন হওয়া উচিত, যাতে ওই একটা দিন আপনার পরের ৬ টা দিনের জ্বালানী হিসেবে কাজ করে।
অবশ্যই ট্যাঁকের কথা ভেবে যত্ন করে সাজান আপানার ছুটির দিনটিকে। কাজের দিন গুলোতে হাজার কষ্ট হলেও রোজকার নিয়ম মাফিক কাজগুলো সেরে রাখার চেষ্টা করুন। সপ্তাহে একটা মাত্র ছুটির দিন, কাজের বোঝা নিয়ে দিনটাকে নষ্ট করবেন না।
ঘোরার প্ল্যান করুন
টানা তিনদিনের লম্বা উইক এন্ড পেলে তো কথাই নেই। বাঙালির হট ফেভারিট দীঘা-পুরি-মন্দারমনির বাইরে গিয়েও আজকাল ভুরি ভুরি উইক এন্ড স্পট হয়েছে। ঘুরে আসতেই পারেন। তা যদি নাও হয়, একটা মাত্র রবিবার ছক করুন আপনার আগামী সফরের। পুজো কিমবা শীতে নিশ্চয়ই বড় একটা ছুটি নেওয়ার কথা ভাবছেন। কোথায় যাবেন, হাতে সময় নিয়ে প্ল্যান করুন। প্রথম ছুটির দিন ছক করে নিন আপনার গন্তব্য, ট্রেনের টিকিট, হোটেল বুকিং ইত্যাদি। পরের দিনগুলোতে বাজেট, কোথায় ঘুরবেন, কী কী অবশ্যই দেখবেন, কিনবেন সে সব হিসেব করুন। ঘুরতে যাবেন এই ভাবনাটাই আপনাকে অনেক চাঙ্গা করে রাখবে সপ্তাহ ভর।
আরও পড়ুন, ঘুম নেই, চোখের নীচে ‘কৃষ্ণ গহ্বর’! এখন উপায়?
গান-গল্প-বই-এ ডুব দিন
অনেক দিন যে সব গান শোনেন না, সে সব চালিয়ে বাড়ির ছোট খাট কাজ করতে পারেন। তবে হ্যাঁ, রোজকার যাতায়াতের পথে যে হেড ফোন ব্যবহার করেন, তা নয়। জোরে গান শুনুন। আপনার প্রতিবেশী যেন তাঁর ব্যালকনি ছেড়ে ঘরে যেতে না পারেন গানের লোভে। তা থেকে একটু হাসি বিনিময় হবে, দু-চারটে কুশল আদান প্রদান হবে। জমিয়ে পাঠার মাংসের ঝোল-ভাত খেয়ে বাড়িতে আরাম করে শুয়ে বই পড়তে পারেন সারা দুপুর। তবে ওই একটা দিন ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখুন। পরিবারের সঙ্গে ওয়েব সিরিজ দেখুন ল্যাপটপ কিমবা ডেস্কটপে, যাতে সবাই মিলে একসঙ্গে দেখা যায়। নিজের সংগ্রহে থাকা সিনেমা দেখতে পারেন একসঙ্গে বসে।
বৃষ্টি উপভোগ করুন
হঠাৎ না বলে কয়ে বৃষ্টি এসে আপনার একটা মাত্র ছুটির দিন ভেস্তে দিল? কুছ পরোয়া নেহি। জানলা দিয়ে বৃষ্টি দেখতে দেখতে ছেলেবেলায় পড়া ফেলুদা সমগ্রটাই না হয় নিয়ে বসলেন। কিমবা গা ছমছমে ভুতের গপ্প। নিজে পড়ুন, বাড়িতে কচিকাঁচা থাকলে তাকেও পড়ান। বিকেল গড়ালে ছাতা মাথায় চলে যান পাড়ার তেলে ভাজার দোকানে। রাতে খিচুরি আর ডিম-ভাত হলে কেমন হয়? মাঝে একবার কাগজের নৌকো বানিয়ে ভাসাতেও পারেন বাড়ির সামনে জমে থাকা গোড়ালি-জলে। নৌকো বানাতে ভুলে গেলে গুগল সহায়।
বাগান করুন
আর পাঁচটা দিন যদি গাছের পরিচর্যা করার সময় না পান, এই একটা দিন ঘরে বসে একটু প্রাণ ভরে ব্যালকনিতে ফুটে থাকা হলুদ জবাটার দিকে তাকান। আপনার জন্যই ফোটে, অথচ আপনার একবার ফিরে তাকানোর সময়ও হয় না। বাড়িতে ছোট ছোট তাক বানিয়ে ক্যাকটাস রাখতে পারেন। আজকাল কোনও ফ্ল্যাটেই রোদ ঢোকে না। ছাদে বাগান নেই যাদের, তারা ইনডোর প্লান্ট রাখুন ঘরে। ছুটির দিন গুলোতে খানিকক্ষণ ওদের দিকে তাকিয়ে থাকুন, ভালো লাগবে।