Teachers Day History, Celebration In India: ৫ সেপ্টেম্বর। ক্যালেন্ডারে লাল দাগ না থাকলেও আমাদের মনে দাগ কেটে গেছে শৈশব থেকেই। ‘শিক্ষক’ শব্দের মানে বোঝার ঢের আগে থেকেই রঙিন কাগজ, বেলুন আর রাশি রাশি চকোলেট দিয়ে দিনটার ছবি এঁকে রেখেছি মনের মণিকোঠায়। শিক্ষক দিবস। ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিন। হ্যাঁ, দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ও দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। শিক্ষাবিদ ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। দক্ষ কূটনৈতিক, জ্ঞানী পণ্ডিত ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। এই এত পরিচয়ের পরেও অসম্পূর্ণ থেকে যায় তাঁর পরিচয়। এই সব পরিচয় বাদ দিয়েও শেষ পর্যন্ত যে কারণে মনে রাখা যায় তাঁকে, তা হলো শিক্ষক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ।
তাঁর জন্মদিনটা শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করার শুরুটা কীভাবে? একদল ছাত্রছাত্রী মেতে উঠেছিল তাঁদের শিক্ষকের জন্মদিন উদযাপনে। শিক্ষক নিজেই আর্জি জানালেন, “শুধু আমার জন্মদিন হিসেবে উদযাপন না করে দিনটা যদি সব শিক্ষকের দিন হিসেবে পালন করো, খুব খুশি হব”। ব্যস! শিক্ষকদের মনে রেখে একটা দিন উৎসর্গ করা হল তাঁদের জন্য। সেটা ১৯৬৭ সাল।
Teachers Day 2019 Significance:
নিজের জন্মদিন নিয়ে পণ্ডিতসুলভ ঔদাসীন্য ছিল রাধাকৃষ্ণণের। অত্যন্ত প্রিয় কিছু ছাত্রছাত্রী তাঁর জন্মদিনটিকে মনে রাখার মতো করে তুলতে চাইলে তিনি আবদার করলেন, শুধু তাঁর জন্য নয়, দিনটা উদযাপন হোক দেশের সমস্ত শিক্ষককে মনে রেখে।
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং রাধাকৃষ্ণণ ছিলেন খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু, আজীবন।রাধাকৃষ্ণণ সম্পর্কে নেহরুর বলা কিছু কথা উল্লেখ না করলেই নয়। “তাঁর যথাসাধ্য ক্ষমতা দিয়ে রাধাকৃষ্ণণ দেশের সেবা করে গেছেন। তাঁর মতো শিক্ষকের কাছ থেকে আমরা এত কিছু শিখেছি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মও শিখবে। ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের মত একজন এত বড় মাপের শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, সর্বোপরি একজন এত বড় মাপের মানুষকে পেয়ে ভারত ধন্য।"
১৮৮৮ সালের এই দিনটায় তিরুতানি শহরের মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের। বাবা চেয়েছিলেন ছেলে ধম্মকম্মে মন দিক। কিন্তু ছেলে মন দিলেন দর্শনে। তিরুপতিতে স্কুলের গণ্ডী পেরিয়ে মাদ্রাজের খ্রিষ্টান কলেজে দর্শন নিয়ে পড়াশোনা। কর্মজীবনের প্রথম দিকে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা করার সময় শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। বয়স তিরিশের কোঠায় যাওয়ার আগেই সুযোগ এল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার। ১৯৩১ থেকে ১৯৩৬ এই সময়ের মধ্যে তিনি অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। ১৯৩৯ এ বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। ১৯৫২ তে দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং ১৯৬২ থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতির আসনে তাঁকে পেয়েছে দেশবাসী।