আজ পৌষ সংক্রান্তি। যে দিন মাস শেষ হয়, সেই দিন হল সংক্রান্তি। সূর্যের এক থেকে অন্য রাশিতে গমন করাকে সংক্রান্তি বলে। সেভাবেই মকর রাশিতে গমন করায় একে মকর সংক্রান্তি বলে। পৌষের শেষ দিনে সূর্য উত্তরায়নের দিকে যাত্রা শুরু করে বলে একে উত্তরায়ণ সংক্রান্তিও বলা হয়। মহাভারতে মহাপুরুষ ভীষ্ম এই দিনই প্রয়াত হয়েছিলেন। সেই স্মৃতিতে গ্রাম বাংলা-সহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ভোরবেলা খর ও বাঁশ দিয়ে বানানো স্তুপে আগুন লাগানো হয়।
মকর সংক্রান্তিতে মধ্যপ্রদেশের খাড়গোনের একটি সূর্য মন্দিরে সূর্যের প্রথম আলো দরজা দিয়ে সোজা সূর্যদেবের বিগ্রহের কপালে পড়ে। এই দৃশ্য দেখতে সংক্রান্তির আগের রাত থেকেই লক্ষ লক্ষ মানুষ এখানে ভিড় করেন। ৬০০ বছর আগে এই মন্দির শেশাপ্পা সুখভাদানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাসিন্দাদের বিশ্বাস, মকর সংক্রান্তিতে নবগ্রহের পূজা করলে জীবনের সব সংকট দূর হয়ে যায়। এখানে পালকি করে নবগ্রহের বিগ্রহ নিয়ে শোভাযাত্রা বের হয়।
কথিত আছে, নিজের পুত্র শনিদেবের পূজায় প্রসন্ন হয়ে সূর্যদেব আশীর্বাদ করেছিলেন যে তিনি যখন শনির ঘর মকরে প্রবেশ করবেন, তখন তাঁর ঘর ধন-ধান্যে ভরে যাবে। সূর্যের মকরে প্রবেশ করার এই তিথিই মকর সংক্রান্তি নামে পরিচিত। শাস্ত্র অনুযায়ী, মকর সংক্রান্তিতে যা-ই দান করা হয়, তা ১০০ গুণ ফিরে পাওয়া যায়। এই তিথিতে ঘি ও কম্বল দান করলে মোক্ষলাভও করা যায় বলেই উল্লেখ আছে শাস্ত্রে।
আরও পড়ুন- ঘরের কাছেই শতবর্ষ প্রাচীন শনি মন্দির, মনস্কামনা পূরণ করতে যান ভক্তরা
আবার এই তিথিতেই ভগীরথের পিছু চলে কপিলমুনির আশ্রম হয়ে গঙ্গা সাগরে মিশে যান। সেই কারণে প্রতিবছর গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করা হয়। কপিল মুনির আশ্রমের সামনের মাঠে হাজার হাজার ভক্ত ভিড় করেন। দ্বিতীয় বৃহত্তম হিন্দু মেলা গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করা হয় ওই মাঠে। তবে, কপিল মুনির পুরোনো আশ্রম সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। তারপর নতুন আশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে।