প্রতিবারই দুর্গাপুজোর সময় একটা প্রশ্ন খুব ঘুরেফিরে আসে। আর, তা হল, দেবী কীসে আসছেন এবং কীসেই বা ফিরবেন? এবারও ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। সেই চেনা প্রশ্ন উঠেছে। শাস্ত্রজ্ঞরা বলছেন, দেবী এবার গজে আসছেন। যার ফল হল শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা। আর, দেবী ফিরছেন নৌকোয়। যার ফল হল শস্যবৃদ্ধি এবং জলের বৃদ্ধি।
মহিষাসুরকে যতই তিনি সিংহের পিঠে চেপে বধ করুন না কেন, শাস্ত্রমতে দেবী দুর্গা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চারটি বাহনে যাতায়াত করেন। সেগুলো হল হাতি বা গজ, ঘোড়া বা ঘোটক, নৌকো এবং দোলা। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবীর বাহনের প্রভাব পড়ে জনজীবনে। যেমন, ২০০০ সালে দেবী এসেছিলেন দোলায়। শাস্ত্রমতে দোলায় গমনের ফলাফল হল মড়ক লাগা। করোনার প্রভাবে ওই বছর বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
২০২১ সালে দেবী এসেছেন ঘোড়ায়। দেবীর ঘোড়ায় আসার ফল হল যুদ্ধবিগ্রহ এবং শস্যহানি। আর, তারপরই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার হামলার সাক্ষী হয়েছে বিশ্ববাসী। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ইউক্রেনের ফসলের। ইউক্রেনকে ইউরোপের শস্যভাণ্ডার বলা হয়। সেই ইউক্রেনে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায়, ইউরোপ তো বটেই, গোটা বিশ্বের শস্য উৎপাদনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
একইভাবে আবার ২০২০ সালে দেবীর গমন হয়েছিল গজে। সেবছর করোনার প্রভাব থাকলেও কিন্তু কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন যথেষ্ট ভালো হয়েছিল। আবার, ২০২১ সালে দেবী দুর্গার গমন ঘটেছিল দোলায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফের করোনা ফিরে এসেছিল। মৃত্যুর খবরও পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন- কতবার নবরাত্রি হয়? এবছর দুর্গাপুজোর নবরাত্রি কবে শুরু ও শেষ? জানুন বিস্তারিত
সেই হিসেবে, এবার দেবী গজে আসছেন। এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানের বন্যার প্রভাব ছাড়া কিন্তু ফসলের ক্ষয়ক্ষতির তেমন কোনও অভিযোগ এবছর আসেনি। আর, এবছর দেবী নৌকোয় ফিরছেন। যার ফলে বন্যার আশঙ্কা থাকছে। যদিও আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বৃষ্টি কমবে। ধীরে ধীরে আবহাওয়া ক্রমশ শুষ্ক হবে।
ফলে, বন্যার আশঙ্কা কমছে। তবে, শেষ পর্যন্ত কী হয়, সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, না-আঁচালে বিশ্বাস নেই। কোনও কোনও সময় আবার দেখা যায়, দেবীর আগমন এবং গমন একই বাহনে হচ্ছে। সেটাও অশুভ বলেই বিশ্বাস শাস্ত্রজ্ঞদের।