ডঃ সারা হজেস, ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আধুনিক দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক ইতিহাস নিয়ে কাজ করছেন। সম্প্রতি কাজ করছেন সারা বিশ্বের চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য নিয়ে। চিকিৎসা পরিষেবার রাজনীতি নিয়েও গবেষণা করছেন তিনি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার পাঠকদের জন্য রইল ডঃ হেজের সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ।
ভারত প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটছে। কিন্তু দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবায় যে বিপুল পরিমাণে প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়, সেই নিয়ে কোনও আলোচনাই প্রায় হয়নি।
ডঃ সারা: টিউব, সিরিঞ্জ, ইউরিনারি ব্যাগস, ক্যাথিটারস, ইনজেকশন, আইভি ব্যাগ, ব্লাড ব্যাগ, এ সবই প্লাস্টিকজাত এবং মাত্র একবারই ব্যবহার করা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ধরে নেওয়া হয় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদের পক্ষে সবসময় স্টেরিলাইজড চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্র ব্যবহার করা সম্ভব নয়। এইডস নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় রয়েছে। তাই রোগীরাই ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ ব্যবহার করতে চান। হাসপাতালে এক একটা বেডের জন্য দৈনিক ২ কেজি চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য তৈরি হয়। কিন্তু আমরা যখন প্লাস্টিক ব্যান করার কথা বলি, এই দিকটা আমরা মেডিকাল প্লাস্টিকের কথা ভেবেই দেখি না।
স্বাস্থ্য পরিষেবার জায়গায় প্লাস্টিক কী ভাবে পাকাপাকি জায়গা করে নিল?
১৯৮০ থেকে ১৯৯০ এর মাঝের সময় এই প্রবণতা দেখা যেতে শুরু করল। এখন রোগী এবং চিকিৎসক দু'পক্ষই প্লাস্টিক ছাড়া ভাবতে পারেন না।
পুনঃব্যবহারযোগ্য নয়, এমন প্লাস্টিক ব্যবহার স্বাস্থ্য পরিষেবা শিল্পের জন্য ভালো না খারাপ?
আমি ভালো খারাপ বিতর্কে যাচ্ছি না। পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা, অথবা যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার, আমি কোনটারই পক্ষে নই। পুরো নিষিদ্ধ করলে গরিবদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ব্রিটেনে শুধু প্লাস্টিক নয়, স্টিলের জিনিসও একবার ব্যবহার করে ফেলে দিতে হয়। ভারতের মতো দেশে মেডিকাল প্লাস্টিক একটা বড় ব্যবসা। তাই নিষিদ্ধ করে দিয়ে সমাধানে আসা যাবে না। প্লাস্টিক রিসাইকেল করা সোজা। কত ব্যবসায়ী অথবা কাবলিওয়ালা পলিভিনাইল ক্লোরাইড, পলিথিলিন, পলিথিলিন টেরেপথালেটের খোঁজ করতে থাকেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের গুণগত মান ভালো হয়। স্বভাবতই দামও ভালো হয়।
সরকার যে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বিষয়ে আপনার মত কী?
নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত আজ নেওয়া হয়েছে, কাল উঠে যাবে। বিগত কয়েক বছর ধরেই এটা হয়ে আসছে। নতুন সরকার এসে প্লাস্টিকের ওপর আবার নিষেধাজ্ঞা তুলে দেবে। আমার এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই। কিন্তু এটা নিয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। প্লাস্টিক আসলে পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্য। প্লাস্টিকের ব্যবহার সারা বিশ্ব জুড়ে বিপুল হারে বাড়তে থাকলে একদিন এই পৃথিবী থেকে পেট্রোলিয়ামের সঞ্চয় ফুরিয়ে যাবে।