/indian-express-bangla/media/media_files/eQLCcCq06M6ws4ofUPZS.jpg)
Ishwarchandra Vidyasagar: পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও তাঁর বর্ণপরিচয়।
Pandit Ishwarchandra Vidyasagar: আজ, ২৬ সেপ্টেম্বর, বাঙালি সমাজ উদযাপন করছে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৬তম জন্মবার্ষিকী। পশ্চিম মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে ১৮২০ সালে জন্ম নেওয়া বিদ্যাসাগর শুধু একজন শিক্ষক ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। শিক্ষা, সংস্কার, সাহিত্য ও সমাজকল্যাণের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
অল্প বয়সেই অসাধারণ প্রতিভার ঝলক
ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুত্র ঈশ্বরচন্দ্র অতি অল্প বয়সেই অসাধারণ প্রতিভার পরিচয় দেন। পাঁচ বছর বয়সে গ্রামের পাঠশালায় ভর্তি হয়ে তিনি দ্রুতই পড়াশোনায় কৃতিত্ব অর্জন করেন। পরবর্তীতে কলকাতার সংস্কৃত কলেজে তিনি দর্শন, সাহিত্য, অলঙ্কার, আইন ও গণিত বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং ১৮৩৯ সালে 'বিদ্যাসাগর' উপাধি লাভ করেন।
আরও পড়ুন- সিবিএফসিতে 'সেন্সর রাজ?' ৬ বছর ধরে নেই মিটিং, চলছে অচলাবস্থা!
ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের বাংলা ভাষার প্রধান পণ্ডিত হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে বিদ্যাসাগর শীঘ্রই সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক ও পরে অধ্যক্ষ হন। তাঁর আমলে কলেজের শিক্ষা পদ্ধতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসে। তিনি শিক্ষা সব জাতির হিন্দুদের জন্য উন্মুক্ত করেন এবং রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন চালু করেন। গণিত ইংরেজিতে ও ব্যাকরণ বাংলায় পড়ানোর নিয়ম প্রবর্তন করে শিক্ষাকে যুগোপযুগী করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন- বদলাতে পারে ভাগ্য! নবরাত্রির চতুর্থীতে এভাবে করুন কুষ্মাণ্ডার পূজা
রক্ষণশীল সমাজের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও বিদ্যাসাগর স্ত্রীশিক্ষার জোরালো সমর্থক ছিলেন। তাঁর উদ্যোগেই ১৮৫০-এর দশকে একের পর এক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। তিনি বেথুন সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত থেকে নারীর সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে কাজ করেন। নারী শিক্ষার পথিকৃৎ হিসেবে তিনি আজও অমর।
আরও পড়ুন- 'আরামবাগের গান্ধী'! সততায় যেন নিখাদ সোনা ছিলেন প্রফুল্ল সেন
কলকাতা মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনের দায়িত্ব নিয়ে সেটিকে হিন্দু মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউটে রূপান্তর করেন, যা পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি স্বীকৃত কলেজে পরিণত হয়। একইসঙ্গে গ্রামীণ স্কুল স্থাপন ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য।
আরও পড়ুন- দুর্ভাগ্য দূর করে সৌভাগ্য আনুন জীবনে! জানুন টিপস!
বাংলা শিক্ষার ইতিহাসে বিদ্যাসাগরের 'বর্ণপরিচয়' এক অনন্য গ্রন্থ। ১৮৫১ সালে প্রকাশিত এই বই প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষা শিক্ষার ভিত্তি হয়ে আছে। এর পাশাপাশি 'বোধোদয়', 'কথামালা', 'চরিতাবলি' এবং 'জীবনচরিত' ছিল নীতিশিক্ষা ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে যুগান্তকারী।
আরও পড়ুন- কন্যাকুমারী ভ্রমণ গাইড, দুই দিনে ঘুরে দেখুন তিন সাগরের মিলনস্থল
তিনি কেবল শিক্ষকই ছিলেন না, সমাজসংস্কারক হিসেবেও কাজ করেছেন। বাল্যবিবাহ রোধ, বিধবা বিবাহ প্রচলন ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রাম তাঁকে বাংলার 'জাতীয় শিক্ষক'-এর মর্যাদা দিয়েছে। পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবন ও কর্ম বাংলার শিক্ষা ও সমাজজীবনে এক স্থায়ী ছাপ রেখে গেছে। তাঁর জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা মানে কেবল অতীতকে স্মরণ করা নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা ও মানবিকতার আলোকবর্তিকা জ্বালিয়ে রাখা।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us