এই বাংলায় বহু দেবদেবীর মন্দির রয়েছে। তার মধ্যে শনি-কালী মন্দির বেশি দেখা যায়। শিবমন্দিরের সংখ্যাও অনেক। এছাড়াও আছে শীতলা মন্দির। কম হলেও রয়েছে রাধাকৃষ্ণের মন্দিরও। কিন্তু, দেবী জগদ্ধাত্রীর মন্দিরের সংখ্যা হাজারো খুঁজলেও তেমন একটা মেলে না। শহর কলকাতাই হোক বা জেলা, জগদ্ধাত্রী পুজোর সংখ্যাও বেশ কম। একই অবস্থা দুর্গার অন্যরূপ বাসন্তী দেবীরও। তাঁরও মন্দির খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এই বাংলায় সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গা পুজো। অথচ, দেবী দুর্গার মন্দিরও প্রায় নেই বললেই চলে।
তবে, নির্দিষ্ট কিছু জায়গা রয়েছে, যা ব্যতিক্রম। এই সব ব্যতিক্রমী জায়গার মধ্যে কোথাও রয়েছে দুর্গামন্দির। কোথাও আবার জগদ্ধাত্রী মন্দির। এমন এক ব্যতিক্রমী জায়গা হল কলকাতার বউবাজারের কাছে লেবুতলা অঞ্চল। এখানকার সার্পেন্টাইন লেনে রয়েছে দেবী জগদ্ধাত্রীর মন্দির। ঠিকানা- ১০৫/২, সার্পেন্টাইন লেন। স্থানীয় বাসিন্দারা এই মন্দিরকে বলেন ঠাকুরবাড়ি। ইংরেজির ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দ। বাংলার ১২৯৪ বঙ্গাব্দ। এই সময় ১২ মাঘ, পূর্ণিমার দিন এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাঁর নাম কেদারনাথ দাস।
আরও পড়ুন- কামনা করলে বিফলে যায় না মনোবাঞ্ছা, এমনই বিশ্বাস বালকনাথ মন্দিরের ভক্তদের
তিন খিলানের উঁচু বেদির ওপর এই মন্দির। ছাদ সমতল। পুরো মন্দিরটাই দালানের। সামনের দিকে ভক্তদের দাঁড়ানোর বা বসার জন্য অলিন্দ রয়েছে। স্তম্ভগুলো গোল ও সরু। মন্দিরের সামনে রয়েছে উঠোন। তাকে ঘিরে রয়েছে ঘর। এই ঘরগুলোর সামনেও রয়েছে অলিন্দ। গর্ভগৃহের দরজার দু'পাশের দেওয়ালে রয়েছে দুটি ভাস্কর্য। মন্দির পশ্চিমমুখী। যার গর্ভগৃহে রয়েছেন দেবী। তিনি সিংহের ওপর উপবিষ্টা। এখানে অষ্টধাতুর জগদ্ধাত্রী মূর্তির নিত্যপুজো হয়।
অত্যন্ত জাগ্রত এই মন্দিরে যেতে গেলে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের কাছে যেতে হবে। তার উলটোদিকে কবি নবীন সেন লেন বা গোমেস লেন। সেই রাস্তা ধরে একটু এগোলেই খুঁজে পাবেন সার্পেন্টাইন রেল। সেখানেই রয়েছে এই মন্দির। স্থানীয় বাসিন্দারা বিপদে-আপদে এই শতাব্দীপ্রাচীন মন্দিরে গিয়েই দেবীর শরণাপন্ন হন। উদ্ধার পান বিপদ থেকে। এমনটাই বিশ্বাস এই মন্দিরের ভক্তদের।