Jagrat Mansa Mandir alias satipeeth: এখন বর্ষাকাল। জলে থইথই মাঠঘাট। তার জেরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সাপের উপদ্রব বেড়েছে। আর, এই সময়টায় প্রতিবছর দেবী মনসার আরাধনা বাংলার বরাবরের রীতি। এই বাংলায় মঙ্গলকাব্য অনেক আগেই দেবী মনসার মাহাত্ম্য বর্ণনা করে গিয়েছে। তবে সেই মাহাত্ম্য বর্ণনাই শেষ কথা নয়। রাজ্যের বেশ কিছু মন্দিরে দেবী মনসার নিয়মিত আরাধনা হয়। তার মধ্যে অনেকগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষায়, 'জাগ্রত'।
তবে, ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন মনসা মন্দির কিন্তু এই রাজ্য অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে নেই। সেই মন্দির আছে হরিয়ানার পঞ্চকুলায়। হিমালয় পর্বতমালার শিবালিক ভাগের শেষপ্রান্তে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এই মন্দির এক সতীপীঠ। যেখানে দেবী সতীর মাথা পড়েছিল বলেই বিশ্বাস ভক্তদের। দেবী মনস্কামনা পূরণ করেন বা মনের আশা পূরণ করেন বলেই তাঁর নাম মনসা। যেখানে দেবী সতী আর দেবী মনসা একই দেবী। এখানে দেবী মনসার সঙ্গে রয়েছে দেবী লক্ষ্মী এবং দেবী সরস্বতীর মন্দিরও।
জায়গাটার নাম বিলাসপুর। একটা সময় এই অঞ্চল ছিল মণিমাজরা রাজ্যের অংশ। রাজ্য গোপালদাস সিং ১৭৮৩ সালে মণিমাজরা রাজ্যের সিংহাসনে বসেন। তিনিই দেবী মনসার বর্তমান মূল মন্দিরটি নির্মাণ করিয়েছিলেন। কথিত আছে, দুর্গের তলদেশ দিয়ে এই মন্দির পর্যন্ত গুহা ছিল। সেই তিন কিলোমিটার গুহাপথেই রানিদের নিয়ে রাজা গোপালদাস সিং নিত্যদিন দেবী মনসার মন্দিরে যাতায়াত করতেন। নিয়ম মেনে, রাজা না পৌঁছনো পর্যন্ত মন্দিরের দরজা খোলা হত না।
স্বাধীনতার পর মণিমাজরা ভারত যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হয়। তারপর মন্দিরটি চলে যায় পুরোহিতদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু, আর্থিক কারণে পুরোহিতরা এই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণে ব্যর্থ হন। বাধ্য হয়ে ১৯৯১ সালে, পঞ্চকুলা 'শ্রী মাতা মনসা দেবী শ্রাইন বোর্ড' (SMMDSB), বানিয়ে হরিয়ানা সরকার আইন নম্বর ১৪-র মাধ্যমে মন্দিরটির নিয়ন্ত্রণভার নেয়। তারপরই মন্দিরটির হাল ফেরে। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে বছরভর নানা মনস্কামনা নিয়ে ভিড় করেন।
আরও পড়ুন- দুরন্ত কায়দায় কমান বিদ্যুতের বিল! সহজ এই কাজেই বাঁচান হাজার হাজার টাকা!
বর্তমান মন্দিরটির বয়স ২১২ বছর। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মন্দিরটি পৌরাণিক যুগের। তবে, মণিমাজরার রাজারাই পরবর্তী সময়ে তা দেখভাল করতেন। বর্তমানে মন্দিরটির পরিচালনা এবং যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণ হরিয়ানা সরকারের হয়ে শ্রাইন বোর্ডই করে থাকে। পদাধিকারবলে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী এই বোর্ডের চেয়ারম্যান। ভারত তো বটেই, ভারতের বাইরে থেকেও ভক্তরা এই মন্দির যাতায়াত করেন। নানা মনস্কামনা জানিয়ে পুজো দিয়ে যান।