পশ্চিমবঙ্গে জাগ্রত মন্দিরের কিন্তু অভাব নেই। শুধু, একটু খুঁজে দেখতে হয়। মনপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করতে হয়। এখানে এমন বহু মন্দির আছে, যেখানে স্থানীয় লোকজন প্রায় প্রতিদিনই ভিড় করেন। তাঁরা ফল পান, সেই জন্যই এই সব মন্দিরে যাতায়াত করেন। সবাই অবশ্য জানলেও এমন মন্দিরের কথা বলেন না, বলতে চান না। কিন্তু, প্রকৃত বন্ধুস্থানীয় মানুষজনের থেকে একটু খোঁজ নিলেই এমন মন্দিরের সন্ধান পাওয়া যায়। এমনই এক মন্দির রয়েছে নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে। এই মন্দির সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির নামে পরিচিত।
এখানে আসতে হলে শিয়ালদহ থেকে ট্রেন ধরে কৃষ্ণনগর সিটি জংশন রেল স্টেশনে আসতে হয়। লোকাল ট্রেনে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। স্টেশনের পাশেই আছে টোটো স্ট্যান্ড। তাতে চেপে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রোডের ওপর এই মন্দিরে যাওয়া যেতে পারে। সময় লাগে ১০ মিনিট। প্রায় আড়াইশো বছরের প্রাচীন এই মন্দির। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই মন্দির অত্যন্ত জাগ্রত। দেবীর কাছে পুজো দিলে মনস্কামনা পূরণ হয়। মন্দিরে নিত্যভোগ হয়। সামান্য দক্ষিণার বিনিময়ে ভক্তরা এখান থেকে প্রসাদও গ্রহণ করতে পারেন।
এই মন্দিরের বৈশিষ্ট্য হল পাশাপাশি দুটি গর্ভগৃহে দেবীর দুটো বিগ্রহ আছে। তার মধ্যে একটি বিগ্রহ দেবী সিদ্ধেশ্বরী কালীর। অপরটি দেবী দয়াময়ী কালীর। কেন মন্দিরে দুটি বিগ্রহ? তার পিছনেও রয়েছে এক বিরাট অলৌকিক কাহিনি। মন্দিরে প্রবেশ করলে ডানহাতে পড়ে দেবী সিদ্ধেশ্বরী কালীর মন্দির। সামনে এগিয়ে গেলে পড়বে নবনির্মিত মহাদেবের মন্দির। সেখানে বিগ্রহ ছাড়াও কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গও আছে।
আরও পড়ুন- দেবীর স্বপ্নাদিষ্ট ওষুধে সুস্থ হয়েছেন অসংখ্য ভক্ত, মজিলপুরের জাগ্রত দেবী ধন্বন্তরী কালী
পাশে সিদ্ধেশ্বরী ভবনে আছে অতিপ্রাচীন বেলগাছ। এই মন্দিরে দেবী সিদ্ধেশ্বরী রক্তজবায় সজ্জিত। খড়গহাতে দেবী, তাঁর মাথায় রয়েছে সোনার মুকুট। হাতে রয়েছে রুপোর চাঁদমালা। পায়ের কাছে সিংহ ও রক্তপিপাসু শিয়াল। দেবীর ডানপাশে ত্রিশূল হাতে দাঁড়িয়ে আছেন মহাদেব। এখানে দেবীর পুজো দেওয়ার সবরকম ব্যবস্থা আছে। মন্দির চত্বরে আছে কষ্টিপাথরের গণেশ মূর্তিও।