তিনি মঙ্গলকারী আর একইসঙ্গে অমঙ্গলহারী। ভগবান হনুমান সম্পর্কে সচরাচর এমনটাই বলা হয়ে থাকে। রামায়ণ থেকে মহাভারত, হিন্দু মহাকাব্যে ভগবান হনুমানের নানা কার্যকলাপ সেকথা স্পষ্টও করে দিয়েছে। বুঝিয়ে দিয়েছে, তাঁর সম্পর্কে যা বলা হয়ে থাকে, সেকথা মিথ্যে নয়। স্রেফ কথার কথা নয়। গ্রহের দোষের জন্য নানা ঝামেলায় মানুষ জড়িয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রেও তিনিই দুর্গতকে পথ দেখান। তাঁকে সংকট থেকে রক্ষা করেন। ঠিক এতটাই প্রভাবশালী ভগবান হনুমান। সবচেয়ে বড় কথা, যুগ সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর অথবা কলি- যাই হোক না-কেন, হনুমান অমর। সব যুগেই তিনি সমানভাবে বিরাজমান। মন দিয়ে ডাকলে যাঁর দেখা মেলে সহজেই।
সেই বীর হনুমানেরই জাগ্রত এক মন্দির রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। জায়গাটা কাঁকিনাড়া রেল স্টেশনের কাছে, মাদরাল। এখানে রয়েছে হনুমানজির এক শায়িত মূর্তি বা বিশ্রামরত মূর্তি। গোটা ভারতে হনুমানজির এই ধরনের মূর্তি অত্যন্ত বিরল। এই মন্দির অত্যন্ত প্রাচীন। ভক্তদের বিশ্বাস, হনুমানজি সুদূর অতীতে এভাবেই বিশ্রাম নিয়েছিলেন। আর, তাঁর সেই বিশ্রাম নেওয়ার ভঙ্গিমাকেই মাদরালের মন্দিরে পুজো করা হয়। নিত্য পুজো হয় এই মন্দিরে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, এই মন্দিরে পুজো দিয়ে গেলে, সেই কাজ বিফল হয় না। আপদে-বিপদে অথবা সংকটে এই হনুমান মূর্তির কাছে এসেই প্রার্থনা করেন স্থানীয় ভক্তরা। তাঁদের দাবি, সেই প্রার্থনায় যে ফল হয়েছে, এটা স্পষ্ট বোঝা যায় নানা ঘটনা পরম্পরা থেকে।
আরও পড়ুন- অলৌকিক কাহিনিতে ভরা, পূরণ করেন ভক্তদের কামনা, জাগ্রত নদিয়ার জলেশ্বর শিবমন্দির
আর, এই সব বিশ্বাসের কারণেই এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। বাড়িতে যে কোনও শুভ অনুষ্ঠান হোক অথবা সংকট দেখা দিক- ভক্তরা এখানে এসে হাজির হন। পুজো দেন, সংকট মেটানোর প্রার্থনা করেন। কাঁকিনাড়া অঞ্চল মূলত অবাঙালি অধ্যুষিত। সেখানেই বেশ বড় চত্বরজুড়ে এই মন্দির। যাঁরা অন্যরাজ্য অথবা অন্যদেশে কাজ করেন। তাঁরাও বিপদে-আপদে পরিবার ও পরিজনদের সাহায্যে মাদরাল মন্দিরের বীর হনুমানের কাছে পুজো দেন। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করলে পূরণ হয় ভক্তদের মনস্কামনা।