বহু প্রাচীন মন্দির, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাজকাহিনিও

মেলায় হাতি পর্যন্ত বিক্রি হত। আজও ভুটান তো বটেই, নেপাল, বাংলাদেশ, বিহার, অসম-সহ বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দারা এই মেলায় যোগ দেন।

মেলায় হাতি পর্যন্ত বিক্রি হত। আজও ভুটান তো বটেই, নেপাল, বাংলাদেশ, বিহার, অসম-সহ বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দারা এই মেলায় যোগ দেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
jalpaiguri_jalpesh

উত্তরবঙ্গের নামী শিবমন্দিরগুলোর অন্যতম জল্পেশ। জলপাইগুড়ি জেলায় এই মন্দির। প্রতিবছর শ্রাবণ মাস ও বিভিন্ন উৎসবে এখানে ব্যাপক ভিড় হয়। এরাজ্য তো বটেই, ভিনরাজ্য থেকেও উৎসবে যোগ দেন পুণ্যার্থীরা। শিবরাত্রিতে ভক্তদের ভিড় সামলাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয় প্রশাসনকে। এখানকার শিবলিঙ্গ গর্তের মধ্যে থাকেন। যাকে বলা হয় জল লিঙ্গ বা অনাদি।

Advertisment

কথিত আছে এই মন্দির ভ্রামরী শক্তিপীঠের সঙ্গে জড়িত। জল্পেশ হলেন দেবী ভ্রামরীর ভৈরব। মন্দিরটির স্থাপত্যশৈলী মনোরম। জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি থেকে আট কিলোমিটার দূরে এই মন্দির। কাছেই বয়ে গিয়েছে জরদা নদী।

সারাবছর এখানে উৎসব লেগেই থাক। তার মধ্যে মহাশিবরাত্রি এখানকার প্রধান উৎসব। কথিত আছে মন্দিরটি সপ্তদশ দশকে তৈরি হয়েছিল। তৈরির পর থেকেই মন্দিরের কাছে বিশেষ মেলা বসে। শ্রাবণী উৎসব পালনের সময়ও বসে মেলা। তার মধ্যে শিবরাত্রির সময়ের মেলাকে এরাজ্যে প্রাচীন মেলাগুলোর অন্যতম বলা হয়। ওই সময়ে কয়েক লক্ষ লোকের সমাগম হয়ে জল্পেশের মন্দিরে।

একটা সময় ডুয়ার্স ছিল ভুটানের অংশ। সেই সময় ময়নাগুড়িকে কেন্দ্র করেই পাহাড় থেকে সমতল ব্যবসা করত। সেই সময় জল্পেশের মেলার জনপ্রিয়তা আরও বেশি ছিল। এমনকী, মেলায় হাতি পর্যন্ত বিক্রি হত। আজও ভুটান তো বটেই, নেপাল, বাংলাদেশ, বিহার, অসম-সহ বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দারা এই মেলায় যোগ দেন।

Advertisment

আরও পড়ুন- বাংলার সুপ্রাচীন মন্দির, যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গোরক্ষনাথ এমনকী মহর্ষি কপিলাচার্যের স্মৃতিও

কথিত আছে, জল্পেশের মন্দির নিয়ে কোচবিহারের রাজাদের সঙ্গে জলপাইগুড়ির রাজাদের বিবাদ ছিল। কোচবিহারের মহারাজা নরনারায়ণের পিতা বিশ্ব সিংহ ১৫২৪ সালে এই মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন। ফের ১৫৬৩ সালে তিনি মন্দিরটির পুনর্নির্মাণ করান। তার এক শতাব্দী পর কোচবিহারের মহারাজা প্রাণনারায়ণ ১৬৬৩ সালে জল্পেশ মন্দিরের পুনর্নির্মাণ করান।

কোচবিহারের মহারাজা লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্বকালে জলপাইগুড়ির রাজবাড়ি কোচ রাজবংশের বশ্যতা স্বীকার করতে অস্বীকার করে। জলপাইগুড়ির রাজা মহীদেব রায়কত স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তার পর থেকে জল্পেশ মন্দিরটি জলপাইগুড়ির রাজা বা বৈকুণ্ঠপুরের রাজবাড়ির বা রায়কতদের তত্ত্বাবধানে ছিল। ১৮৯৯ সালের ৩০ জানুয়ারি রাজা জগেন্দ্র দেব রায়কতের স্ত্রী রানি জগদেশ্বরী দেবী মন্দিরটি পুনরায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

Temple Lord Shiva pujo