পেশী কিংবা গাটের ব্যথার এখন কোনও বয়স নেই। অল্পতেই হাঁটু ফুলে গিয়ে সেটি বিরাট সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন যে হাঁটু ব্যথার প্রভাব অল্প বয়সের ছেলে মেয়েদের ওপর পড়ে না। তবে এই ঘটনা সত্যি নয়, তাদের মধ্যেও এই জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসক বিবেক দাহিয়া বলছেন অল্প বয়সের শরীরেও এই সমস্যা দেখা দেওয়া খুব স্বাভাবিক। কেউ যদি জেনেটিক ভাবে এই সমস্যার অন্তর্গত হয় কিংবা যদি ইউরিক অ্যাসিড দ্বারা ভুগতে থাকেন, তবে খুব মুশকিল!
কতধরণের পেশীর যন্ত্রণা কিংবা আর্থ্রাইটিস এর ব্যথা নজরে আসে?
বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিস যেমন ডিজেনারেটিভ আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস, জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রাইটিস, সংক্রামক আর্থ্রাইটিস, এবং সেপটিক আর্থ্রাইটিস- তরুণদের প্রভাবিত করতে পারে।
কেন জয়েনট রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নেওয়া উচিত?
তিনি বললেন, একটি ক্ষতিগ্রস্থ জয়েন্ট সারাদিন ফোলা থাকে এবং লাল অবস্থায় থাকে, এটি স্পর্শকাতর হতে পারে। এটি গুরুতর আকার নিলেই রিপ্লেসমেন্ট কিংবা প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হতে পারে। চিকিৎসা শাস্ত্রে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই থেরাপি একেবারেই নিরাপদ বলে গণ্য করা হয়। অস্ত্রোপচারের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ সেই জয়েন্টকে সরিয়ে দেওয়া হয়। স্থাপন করা হয় একটি কৃত্রিম অঙ্গ। হাঁটু ছাড়াও কাঁধ, কনুই এবং কব্জিতে এই প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে।
এতে কোনও বিপদ আদৌ থাকে কী?
সাধারণত আগে বয়োস্ক মানুষদের মধ্যে বেশি দেখা যেত, তবে এখন তরুণদের মধ্যেও দেখা যায়। এর জন্য আসলেই দায়ী শরীরের অলসতা, ব্যায়াম না করা এবং পেশীকে মজবুত না করার মত অসুবিধে। অস্বাস্থ্যকর খাবার কিংবা অতিরিক্ত মদ্যপান করলেও এর আওতায় আপনি ভুগতে পারেন। প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি এবং ভিটামিন তথা খনিজ জাতীয় খাবার।
তবে এই ট্রিটমেন্ট নিতে দেরি করলে মুশকিল বাড়তে থাকে। বেশিরভাগ অল্প বয়সের রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নেন না। যদি সঠিক সময় চিকিৎসা না নেওয়া হয় তবে অনেকসময় জীবনযাত্রায় অবনতি ঘটতে পারে। যেমন, কর্মসংস্থান বজায় রাখা, সঠিক ভাবে হাঁটতে পারা এবং গতিশীলতা হ্রাসের সম্ভাবনা দেখা যায়।
এটি কিভাবে জয়েন্টকে সুরক্ষিত করতে পারে?
গত কয়েকবছরে এই চিকিৎসা বেশ উন্নত হয়েছে। হাড়ের গঠন, তীব্রতা, টিস্যু, সিরামিক টাইটানিয়াম, জিপসাম নাইলন, স্টেইনলেস স্টীল ব্যবহার করে এটিকে আরও শক্তিশালী করে তোলা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে এর সংক্রমণ এবং থ্রমবসিসের সম্ভাবনাও এখন অনেক কমে গেছে।
নয়া উদ্ভাবন, নকশা এবং রোবোটিক প্রযুক্তি নিশ্চিত করেছে, যে অস্ত্রপ্রচার তুলনামূলক ভাবে কম আক্রমণাত্মক, কম রক্তপাত এবং সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতেই প্রতিস্থাপন করে। দীর্ঘস্থায়ী হাড়ের চাহিদাতেও তরুণদের অনেকেই এই প্রতিস্থাপন করছে। দ্রুত নিজের জীবনে ফিরে আসার কারণে এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অস্ত্রপ্রচারের কিছুদিন পর থেকেই এটি ধীরে ধীরে কাজ করতে শুরু করে।
রিকভারি কেমন দেখতে পাওয়া যায়?
এই অস্ত্রপ্রচার সহজেই ব্যথা কমাতে পারে। এবং ঠিক পরে পরেই শুরু হয় ফিজিওথেরাপি, যাতে হাড়ে কোনও গাফিলতি না থাকে। শরীরে শক্তি আসতে আস্তে ফিরে আসে। একজন ব্যক্তি যত বেশি নড়াচড়া করে পেশী তত শক্তিশালী হয়। স্বল্প সময়ের মধ্যেই গতিশীলতা এবং নমনীয়তা সামগ্রিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলেই দৈনন্দিন কার্যক্রম শুরু হতে কষ্ট হয় না।