দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের শেষ জ্যোতির্লিঙ্গ, যেখানে শিব অত্যন্ত জাগ্রত

কথিত আছে, বেরুলের উপজাতি-প্রধান ছিলেন শিবভক্ত। তিনি ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের কৃপায় ইলোরার ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরের কাছে গুপ্তধন খুঁজে পেয়েছিলেন।

কথিত আছে, বেরুলের উপজাতি-প্রধান ছিলেন শিবভক্ত। তিনি ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের কৃপায় ইলোরার ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরের কাছে গুপ্তধন খুঁজে পেয়েছিলেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
jyotirlinga

দেবাদিদেব মহাদেবের দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম ঘৃষ্ণেশ্বর শিব। মহারাষ্ট্রের রাজধানী ঔরঙ্গাবাদ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে এই জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির। দৌলতাবাদ বা দেবগিরি থেকে জায়গাটির দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। বিখ্যাত অজন্তা-ইলোরা গুহাচিত্রের মধ্যে ইলোরার কাছে এটি অবস্থিত। শিবপুরাণের কোটিরুদ্র সংহিতায় এই জ্যোতির্লিঙ্গের উল্লেখ আছে।

Advertisment

কথিত আছে, বেরুলের উপজাতি-প্রধান ছিলেন শিবভক্ত। তিনি ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের কৃপায় ইলোরার ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরের কাছে গুপ্তধন খুঁজে পেয়েছিলেন। সেই টাকাতে ওই উপজাতি প্রধান মন্দিরের সংস্কার করিয়েছিলেন। পাশাপাশি, তিনি শিখরসিঙ্গনপুরে একটি হ্রদও তৈরি করিয়েছিলেন।

পরবর্তী সময়ে গৌতমীবাল (বায়জাবাই) ও অহল্যাবাই হোলকার ঘৃষ্ণেশ্বর শিবমন্দির সংস্কার করান। অহল্যাবাই হোলকারের জমানায় মন্দিরের সুন্দর প্রাচীরটিও তৈরি হয়েছিল। মন্দিরের ওপরে লাল পাথর দিয়ে দশাবতারের মূর্তি খোদাই করানো হয়েছে। এই মন্দিরের দরবার কক্ষে ২৪টি স্তম্ভ আছে। এই স্তম্ভগুলোয় সুন্দর চিত্র খোদাই করা আছে। দরবার হলে আছে নন্দিকেশ্বরের মূর্তি। এই মন্দিরের গর্ভগৃহের আয়তন ১৭ বাই ১৭ ফুট। মন্দিরের লিঙ্গমূর্তিটি পূর্বমুখী। ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরের কিছু দূরে, আধ-কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে ইলোরা গুহা।

আরও পড়ুন- শ্রীরামচন্দ্রের পদধূলিতে ধন্য এই তীর্থস্থান, যেখানে রয়েছে অন্যতম জ্যোতির্লিঙ্গ

Advertisment

মন্দিরের গায়ে রয়েছে অলংকরণ। এমন প্রাগৈতিহাসিক মন্দিরে প্রথার পাশাপাশি প্রাগৈতিহাসিক স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণ রয়েছে। মন্দিরে রাখা শিলালিপিটি ঘৃষ্ণেশ্বর শিবমন্দিরের দর্শকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণের। এই মন্দিরটি লাল পাথর দিয়ে তৈরি। সেটাও রীতিমতো আকর্ষণ তৈরি করেছে দর্শকদের কাছে। ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরে মোট পাঁচটি চূড়া রয়েছে। বহুবার মন্দিরটির সংস্কার হয়েছে। বর্তমান জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরটি অষ্টাদশ শতাব্দীতে তৈরি হয়েছে। এই মন্দিরের গায়ে হিন্দু দেবদেবীদের মূর্তি খোদাই করা আছে।

এই মন্দির তৈরির সঙ্গে জুড়ে রয়েছে একদম্পতির কাহিনি। কথিত আছে দেবগিরি পর্বতে সুধর্ম নামে এক ব্রাহ্মণ থাকতেন। তাঁর স্ত্রী সুদেহার সন্তানলাভের জন্য বোন ঘুষণার সঙ্গে স্বামীর বিয়ে দেন। সুদেহার কথামতো ঘুষণা ১০১টি শিবলিঙ্গ তৈরি করে পূজা শুরু করেন। পুজো শেষে সামনের হ্রদে সেই সব শিবলিঙ্গ বিসর্জন দেন। শিবের আশীর্বাদে তার পুত্রসন্তান হয়। এতে ঘুষণাও অহংকারী হয়ে ওঠেন। আবার সুদেহাও হয়ে ওঠেন ঈর্ষাকাতর। সেই ঈর্ষায় ঘুষণার ছেলেকে খুন করে সুদেহা হ্রদে ফেলে দেন। শিবের উপাসনা করলে শিব সন্তুষ্ট হয়ে ঘুষণার ছেলের জীবন ফিরিয়ে দেন। পাশাপাশি ঘুষণাকে দেওয়া কথা রাখতে এখানে জ্যোতির্লিঙ্গ রূপেও অবস্থান করেন।

Temple Shiva Ratri Lord Shiva