মহারাষ্ট্রের নাসিক শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে ত্রিম্বক শহর। সেখান থেকে ৯ কিলোমিটার গেলেই দেখা মিলবে দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম ত্র্যম্বকেশ্বর মন্দিরের। এখানে শিবের সঙ্গে ব্রহ্মা ও বিষ্ণুকেও পুজো করা হয়। এই ভাবে ব্রহ্মা ও বিষ্ণুকেও পুজো করার রীতি বাকি ১১টি জ্যোতির্লিঙ্গের তুলনায় ত্র্যম্বকেশ্বরকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। মন্দিরটি রয়েছে তিনটি পাহাড় ব্রহ্মগিরি, নীলগিরি ও কালাগিরির মধ্যে। ৭১২ ফুট উঁচু গ্রানাইট পাথরের বিরাট মন্দির।
মন্দিরটির আকৃতির সঙ্গে সোমনাথ ও দ্বারকাধীশ মন্দিরের সাদৃশ্য রয়েছে। এর সামনে ছোট মন্দিরে রয়েছে নন্দিকেশ্বরের মূর্তি। চাতালের একপাশে রয়েছে লম্বা কালো পাথরের দীপস্তম্ভ। গর্ভমন্দিরের শিবলিঙ্গ সাধারণ শিবলিঙ্গের মত নয়। এখানে বিরাট গৌরপটের মধ্যে সামান্য উঁচু তিন ভাগে বিভক্ত শিবলিঙ্গ। স্থানীয় বাসিন্দারা এই জ্যোতির্লিঙ্গকে বলেন ত্রিম্বকেশ। এখানে গোদাবরী নদীর উৎসস্থলও রয়েছে। তা-ও দেখার মত।
আরও পড়ুন- অন্যতম প্রধান জ্যোতির্লিঙ্গ, বহুবার আক্রান্ত হয়েছে, তবুও ভক্তরা ছুটে যান এই তীর্থস্থানে
ত্র্যম্বকেশ্বর মন্দির ভোর সাড়ে পাঁচটায় খোলে। বন্ধ হয় রাত ন'টায়। এখানে সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে শেষ হয় সকালের বিশেষ পুজো। দুপুর ১টা থেকে শুরু হয় মধ্যাহ্নপুজো। আর, রাত ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে হয় সান্ধ্যপুজো। এখানে জ্যোতির্লিঙ্গকেই বেনারসী শাড়ি দিয়ে ঢেকে সোনার তিনমুখো টোপর পরানো হয়। এর ওপর আবার রত্নখচিত সোনার মুকুট এবং পিছনে রুপোর চেলি দিয়ে সাজানো হয়।
ঠিক কবে, এই মন্দির তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ে নানারকম বিতর্ক রয়েছে। তবে, একসময় মন্দিরটির অবস্থা জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। সেই সময় ১,৭৭৫ সালে নানাসাহেব এই মন্দিরের পুননির্মাণ করান। এই জন্য সেই সময় প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মহর্ষি গৌতমের নাম। কথিত আছে, স্ত্রী অহল্যাকে নিয়ে মহর্ষি গৌতম এখানে বাস করতেন। এখানে যে কুণ্ড আছে, সেই কুণ্ডের জল অক্ষয়। কখনও ফুরোবে না বলেই আশীর্বাদ করেছিলেন। এমন কাহিনিও প্রচলিত আছে। মহর্ষি গৌতমই গোদাবরীর আগমনের পিছনে রয়েছেন বলে এই নদীকে ' গৌতমী গঙ্গা'ও বলা হয়।