শক্তির আরাধনায় মাতোয়ারা বাংলা। কালীঘাট থেকে কঙ্কালিতলা, দক্ষিণেশ্বর থেকে তারাপীঠ- সর্বত্র ভক্তসমাগম হয়েছে। শক্তিপীঠ হোক বা অন্যত্র, এ দিনের পুজোর ভোগে থাকে বেশ কিছু বিশেষত্ব। একনজরে দেখে নেব আজ কোন মন্দিরে কী ভোগ দেওয়া হয় মাকে…
কালীঘাট-
সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম কালীঘাট। কালীপুজোর দিন মা কালীকে লক্ষ্মীরূপে পুজো করা হয়ে থাকে। কালীঘাটে আমিষ ভোগ হয়। মধ্যাহ্নভোজে মাকে নিবেদন করা হয় ঘিয়ের পোলাও। এছাড়াও থাকে ছয়'করম ভাজা (আলু, পটল, বেগুন, কপি, কাঁচকলা, শাক), শুক্ত, ডাল, পোনা মাছের কালিয়া, পাঁঠের মাংস এবং পায়েস।, খেজুর-কাজু-কিশমিশ দিয়ে চাটনি, পায়েস-পান-জল।
রাতে নিরামিষ ভোগ নিবেদন করা হয় মাকালীকে। লুচির সঙ্গেই থাকে আলু ভাজা, বেগুন ভাজা, দুধ, ছানার সন্দেশ ও রাজভোগ।
তারাপীঠ-
সতীর তৃতীয় নয়ন বা নয়নতারা তারাপীঠ গ্রামে পড়ে এবং প্রস্তরীভূত হয়ে যায়। ঋষি বশিষ্ঠ প্রথম এই রূপটি দেখতে পান এবং সতীকে তারা রূপে পূজা করেন। তারাপীঠ সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম। যুগ যুগ ধরে তন্ত্রসাধক থেকে সাধারণ পূর্ণার্তীদের কাছে তারাপীঠ অত্যন্ত জাগ্রত বলে বিবেচিত হয়। কালীপুজোর বিশেষ দিনে মা তারাকে আমিষ পদ নিবেদন করা হয়ে থাকে। তারা মায়ের স্মানের পর বেনারসীবেশে সকালে খিচুড়ি, পোলাও, পাঁচকরম ভাজা, তিন ধরণের তরকারি, বলির মাংস, পোড়ানো শোল মাছ,
চাটনি, পায়েস ও মিষ্টি ভোগ দেওয়া হয়।
সন্ধ্যা দেওয়া হয় লুচির সঙ্গে মাংস।
দক্ষিণেশ্বর-
মা ভবতারিণীর ভোগে মাংসের কোনও আয়োজন থাকে না। দক্ষিণেশ্বরে বলি প্রথা নিষিদ্ধ। পুজোয় সুরারও কোনও স্থান নেই। নারকেল ফাটিয়ে, সেই নারকেলের জল দেওয়া হয় মাকে।
কালীপুজোর দিন দক্ষিণেশ্বরে মায়ের অন্নভোগে থাকে ভাত, ঘি-ভাত, পাঁচ রকমের ভাজা, পাঁচ রকমের তরকারি, পাঁচ রকমের মাছ। সেই সঙ্গে থাকে চাটনি-পায়েস, পাঁচ রকমের মিষ্টি-জল। কালীপুজোয় অন্তত হাজার দশেক ভক্তের ভোগের আয়োজন করা হয়।
<আরও পড়ুন- কীভাবে জন্ম হল দেবী কালীর, কেন তিনি রক্তপান করেছিলেন?>