পূর্ব মেদিনীপুরের মুগবেড়িয়ার কাছে দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামে গোবিন্দ রায় জিউ পূজিত হন বনদেবতা হিসেবে। খেড়িয়া থেকে ইটাবেড়িয়া গ্রামীণ সড়কে মাধাখালি ব্রিজ পেরিয়ে কিছুদূর গেলেই ব্যাংক মোড়। এই মোড়ের ডান দিকে স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া। আর বাঁ-দিকে মুগবেড়িয়া সেন্ট্রাল কোঅপারেটিভ ব্যাংক। যার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে একটি রাস্তা। সেই রাস্তা ধরে তিন কিলোমিটার গেলেই গোবিন্দ রায় জিউয়ের মন্দির।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এই মন্দির গোবিন্দ রায় স্থান বা থান নামে পরিচিত। বহু বছর আগে এই এলাকা ছিল বাঘ এবং সাপেদের বিচরণভূমি। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস, এই বাঘ ও সাপ আসলে গোবিন্দ রায় জিউয়েরই বাহন। তার মধ্যে ভক্তদের জন্যই তিনি বাঘকে পাশেই খালের ওপারে ছেড়ে দিয়ে এসেছেন। কিন্তু, সাপ এখনও রয়েছে। পূর্ণিমার রাতে সেই সাপ আসে গোবিন্দ রায় জিউয়ের কাছে। ভক্তরা এই দেবতাকে কৃষ্ণেরই এক রূপ এবং বনদেবতা বা বিপত্তারণ দেবতা বলে মনে করেন।
ভক্তদের বিশ্বাস, এই দেবতার কাছে পায়েস মানত করলে মনস্কামনা পূরণ হবেই হবে। অতি জাগ্রত এই দেবতা সম্পর্কে রয়েছে নানা কাহিনি। সেসব কাহিনি বা ঘটনা প্রত্যক্ষও করেছেন বাসিন্দারা। ভক্তদের দাবি, চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন, এমন একটি শিশুও নাকি এই মন্দিরে দেবতার চরণামৃত মুখে দেওয়ার পর জ্ঞান ফিরে পেয়েছে। শুধু তাই নয়, এই মন্দিরে যেসব ভক্তরা মানত করতে আসেন, আজ পর্যন্ত নাকি তাঁদের কেউ পায়েস ছাড়া আসেননি।
আরও পড়ুন- জাগ্রত বিশালাক্ষী, বর্ধমানের মহারাজাও সেরে উঠেছেন দেবীর চরণামৃত পান করে
ভক্তদের আরও দাবি, মাঝে মধ্যে এই গোবিন্দ রায় জিউকে নাকি খুঁজে পাওয়া যায় না। আবার, কীভাবে যেন তিনি নিজের জায়গায় ফিরে আসেন। এই দেবতা খোলা জায়গায় থাকতে পছন্দ করেন। রাতে বিরক্ত একেবারেই পছন্দ করেন না। সেই কারণে গ্রামবাসীরা এই মন্দিরে রাতে আসেন না। আশপাশের দোকানপাটও রাতে বন্ধ রাখা হয়। এমনকী, পাশের খেতের জমিতেও নাকি মেশিন ব্যবহার করা হয় না। পাছে দেবতা অসন্তুষ্ট হন।