Advertisment

কয়েকশো বছরের পুরোনো মন্দির, মনস্কামনা পূরণের জন্য জঙ্গলপথ পেরিয়ে যেখানে পৌঁছন ভক্তরা

আগে এখানে নরবলিও হত। দেবীর আদেশ মেনেই নাকি নরবলি বন্ধ হয়েছে। এখন শুধুমাত্র পাঁঠাবলি হয়। সেটা দুর্গাষ্টমীর রাতে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kanakdurga temple

রাজ্যের জাগ্রত মন্দিরগুলোর তালিকায় রয়েছে ঝাড়গ্রামের কনকদুর্গা মন্দির। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রায় চারশো বছরের ইতিহাস।কথিত আছে, অষ্টমীর রাতে এখানে নিজে হাতে ভোগ রান্না করেন দেবী অন্তপূর্ণা। সারা বছর দর্শকদের উপস্থিতিতে জমজমাট থাকে এই মন্দির। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ডুলুং নদী। সেখানেই গভীর জঙ্গলের মধ্যে এই কনকদুর্গা মন্দির।

Advertisment

অষ্টধাতুর দেবী অশ্বারোহিণী চতুর্ভুজা। প্রাচীন রীতি মেনে রীতিমতো আড়ম্বরহীন ভাবে প্রতিদিন হয় দেবীর পুজো। কথিত আছে, চিল্কিগড়ের সামন্ত রাজা গোপীনাথ সিংহ এই মন্দির তৈরি করান। দেবীর স্বপ্নাদেশ মেনে, স্ত্রীর হাতের কাঁকন দিয়ে তিনি এই মন্দিরের দেবীমূর্তি নির্মাণ করান। আগে এখানে নরবলিও হত। দেবীর আদেশ মেনেই নাকি নরবলি বন্ধ হয়েছে। এখন শুধুমাত্র পাঁঠাবলি হয়। সেটা দুর্গাষ্টমীর রাতে। মন্দিরের পাশেই গভীর জঙ্গল। সেখানেই হয় পাঁঠাবলি। কথিত আছে, দেবীর নবমীর ভোগও রান্না করেন স্বয়ং অন্নপূর্ণা।

আরও পড়ুন- দেশ থেকে বিদেশ, আজও শান্তির খোঁজে এই মন্দিরে ছুটে আসেন অসংখ্য ভক্ত

পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদীদের বাড়বাড়ন্তের সময় দু'বার কনক দুর্গা মন্দিরের মূর্তি চুরি যায়। সেটা ২০০৭-২০০৮ সালের ঘটনা। নতুন করে সংস্কারের পর পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে পর্যন্ত জায়গা করে নিয়েছে কনকদুর্গা মন্দির। এই মন্দির লাগোয়া ভেষজ উদ্যান। আগে তা পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হচ্ছিল। এখন উদ্যান রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রক্ষী নিয়োগ করা হয়েছে। বসেছে সরকারি চেকপোস্টও। যে রাজবাড়ির এই মন্দির, সেই চিল্কিগড়ের প্রাসাদ এখন ভগ্নপ্রায়। প্রাসাদ আর মন্দিরের মধ্যে শুধু বয়ে গিয়েছে ডুলুং নদী। যা সাক্ষী কনকদুর্গা মন্দিরে ভক্তদের আনাগোনা এবং তাঁদের মনস্কামনা পূরণের।

ঝাড়গ্রা্ম থেকে এই মন্দিরে যাওয়ার পথ রীতিমতো রোমাঞ্চকর। ৫০০ বছরেরও বেশি পুরোনো এই মন্দিরে যাওয়ার পথেই পড়ে কেন্দুয়া নামে একটি জায়গা। যেখানে শীতকালে পরিযায়ী পাখিরা এসে ভিড় করে। মন্দির সংলগ্ন জঙ্গলে আবার রয়েছে বিরল প্রজাতির গাছ, পাখি এবং বানর। সেই পথ ধরে কনকদুর্গা মন্দিরের কাছে পৌঁছনোও তাই রীতিমতো রোমাঞ্চকর এক অভিজ্ঞতা।

tourism jhargram Temple
Advertisment