কুমির মানেই আমাদের কাছে তা হিংস্র জীব। শাস্ত্রমতে যতই সে গঙ্গার বাহন হোক না-কেন। কুমিরকে দেখে ভয় পান না, এমন বীরপুরুষ হাতেগোনা। তাই কুমির থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে পছন্দ করেন সকলেই। কিন্তু, সেই কুমিরই যদি নিরামিষাশী হয়, আর, তা মন্দিরের প্রসাদ খেয়ে বেঁচে থাকে। বিশেষ করে পুরোহিত যদি তাঁকে নিজে হাতে প্রসাদ খাইয়ে দেন! অথবা সকলের সামনে কুমিরের চোয়ালে মুখ দিয়ে চুমু খান, তবে বিস্ময় তৈরি হতে বাধ্য।
কুমিরকে নিয়ে এমনই বিস্ময়কর ঘটনার নিত্যদিন সাক্ষী থাকছে দেশের দক্ষিণ ভারতের অন্যতম রাজ্য কেরল। যেখানে মন্দিরের মধ্যে রয়েছে একটি পূর্ণবয়স্ক কুমির। আর, সেই কুমিরকে ভগবান রূপে দেখে থাকেন মন্দিরের পুরোহিত থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শনার্থীরাও।
তাঁরা সবাই মিলে কুমিরটির নাম দিয়েছেন বাবিয়া। যার অর্থ অভিভাবক। এই মন্দিরটি রয়েছে কেরলের কাসারাগোড় জেলার এক ছোট্ট গ্রামে। প্রায় দুই একর এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হ্রদ। তার মধ্যে এই মন্দিরটি। যেখানে ভগবান বিষ্ণু অনন্ত পদ্মনাভস্বামী রূপে পূজিত হন। হ্রদের চারদিকে রয়েছে গুহা। এই সব গুহা নিয়ে নানা কাহিনি ছড়িয়ে আছে।
আরও পড়ুন- শ্রাবণ মাস শিবভক্তদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, জানেন কারণটা কী?
হ্রদেই আরও কিছু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। তবে, পুরোদস্তুর টিকে আছে একটিই মন্দির। যে মন্দিরের প্রসাদ খেয়েই বেঁচে আছে কুমিরটি। হ্রদে বহু মাছও আছে। মন্দিরের পুরোহিত ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কুমিরটি নাকি সেই সব মাছ খায় না। সে-ও পুরোদস্তুর নিরামিষাশী। পুরোহিতের ধারণা, কুমিরটি আসলে মন্দিরের রক্ষাকর্তা। সে ভগবান বিষ্ণুর দূত। আর, সেই জন্যই আমিষে অরুচি।
প্রতিদিন দুপুরে ও রাতে সে জলের ওপর ভেসে ওঠে। সেই সময় তাকে এই মন্দিরের পুরোহিতরা গুড় মেশানো চালের গুঁড়ো এবং ভাত খেতে দেন। সারাবছরই মেনু একই থাকে। জলে ভেসে না-উঠলে, মন্দিরের পুরোহিতরা 'বাবিয়া' বলে ডাক দেন। কুমিরটি নাকি সেই ডাক শুনে খেতে চলে আসে।