মরুভূমিতে মাথার ওপর গনগনে রোদ নিয়ে হেঁটে চলেছে একের পর এক উট। এই দৃশ্য আমাদের বড্ড চেনা, চাক্ষুষ হোক বা ছবিতে, উট বলতে এমনই দৃশ্য মনে পড়ে সকলের। যারা খাবার ও জল ছাড়াই দিব্য গরম বালিতে মাল নিয়ে চলাফেরা করতে পারদর্শী। কিন্তু কোনো দিন দেখেছেন, এক বুক জলে সাঁতার কেটে সমুদ্র পার হচ্ছে উট?
এরা হলো অতি বিরল খরাই প্রজাতির উট, সমুদ্র-উপকূলবর্তী ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে যাদের নিয়মিত যাতায়াত। রাজস্থানের মরুভুমির আবহাওয়া একেবারেই সয় না এদের ধাঁচে। সুন্দরী, গরান, গেঁওয়ার ওপর ভরসা করেই থাকে এই প্রজাতির উট। গুজরাতের কচ জেলার মালধারিস এলাকায় এই জাতের উটকে গৃহপালিত পশু হিসাবে পালন করা হয়ে থাকে। বাকি উটের প্রজাতির থেকে এরা অনেকটা আলাদা। জল বা খাবার ছাড়া তারা একদিনও থাকতে পারে না, যেটা অন্যান্য উটের স্বভাবসিদ্ধ।সাধারণত ভারত এবং পাকিস্তানেই এদের দেখা মেলে। ভারতে এই প্রজাতির উট এখনো রয়েছে প্রায় ৪,০০০।
আশঙ্কার বিষয় হলো, একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছে খরাই উট। নামটা অচেনা অনেকের কাছে। কেউ জানলেও তা ভুলতে বসেছেন। কচ এলাকার বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়েছেন শিল্পায়নকে। পশুপালকদের অভিযোগ, ফুরিয়েছে এলাকার জল এবং ঘাস, যে কারণে উটগুলিকে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। মোহাদি গ্রামপ্রধান গুলাম মুস্তফা হাজি মহম্মদ জাট জানাচ্ছেন, গুজরাটে শিল্পায়নের কারণে কোপ পড়েছে ম্যানগ্রোভ অরণ্যে। যার ফলে অভুক্ত থেকে যাচ্ছে খরাই উট। তিনি বলছেন, আগে খরাই উটের আয়ু ছিল প্রায় ৬৫ বছর। সেখানে বর্তমানে মাত্র ১৮ থেকে ২০ বছর বাঁচে এই প্রজাতির উট। মোহাদি গ্রামে খরাই উট ছিল ৬০০ থেকে ৭০০ টি। সেখানে তাদের সংখ্যা এখন এসে দাঁড়িয়েছে মোটে ১০০ থেকে ১৫০।