তৃণমূল শাসিত পশ্চিমবঙ্গে, মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের তীরতকোণা বা কিরীটকণা গ্রাম বা কিরীটেশ্বরীর গ্রামকে সেরা পর্যটন গ্রামের তকমা দিয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার। দেশের ৩১টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং রাজ্যের মধ্যে ৭৯৫টি গ্রাম, সেরা পর্যটন গ্রামের তকমা চেয়ে আবেদন করেছিল। তার মধ্যে শিরোপা পেয়েছে কিরীটেশ্বরী গ্রাম। ২৭ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে যার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিলবে। স্বভাবতই খুব খুশি দেবী কিরীটেশ্বরী মন্দিরের সেবাইত থেকে গ্রামবাসীরা, সকলেই। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল সাইটে পর্যটন ক্ষেত্রে রাজ্যের এই সাফল্যের কথা তুলে ধরেছেন।
Advertisment
দেবী কিরীটেশ্বরীর মন্দিরকে কেন্দ্র করে এই গ্রাম গড়ে উঠেছে। মন্দিরের সামনে লেখা রয়েছে, 'শ্রীশ্রী কিরীটেশ্বরী মাতা। সতীর ৫১ পীঠের এক পীঠ। কিরীটেশ্বরী মাতার মূল কিরীটটি দর্শন করুন। পতিত থাকা ভাঙা মন্দির থেকে মায়ের মূল কিরীটটি এই নাট মন্দিরে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে'। যদিও তা নিয়ে স্থানীয় পুরোহিতদের মতভেদ আছে। গ্রামে গুপ্তমঠ নামে মন্দিরেও দেবী কিরীটেশ্বরীর পুজোর ব্যবস্থা আছে। প্রতিবছর পৌষমাসে একমাস ধরে এই মন্দিরকে ঘিরে মেলা বসে।
শিয়ালদহ থেকে লালগোলাগামী ট্রেনে চেপে নামতে হয় মুর্শিদাবাদ স্টেশনে। সেখান থেকে যেতে হয় লালগোলা সদর ঘাট। তারপর সদর ঘাট পাড় করে টোটো বা অটোয় চেপে যাওয়া যায় কিরীটেশ্বরী মন্দিরে। দহপাড়া রেল স্টেশন থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। লালবাগ কোর্ট রোড রেল স্টেশন থেকে তিন কিলোমিটার দূরে।
কথিত আছে, এই কিরীটেশ্বরী মন্দিরে দেবী সতীর কিরীট বা মুকুটের অংশ পতিত হয়েছিল। সেই কারণে এখানে দেবীকে ভক্তরা মুকুটেশ্বরী বলেও ডাকেন। কিরীটেশ্বরীর প্রাচীন মন্দিরটি ছিল দক্ষিণমুখী। তা সংস্কার করে তৈরি করা হয়েছে পশ্চিমমুখী মন্দির। এখানে দেবীর নিত্য সেবা চলে। দুপুরে মৎস্যভোগ দেওয়া হয়। দেবীর বাৎসরিক পুজো হয় দুর্গাষ্টমীতে। কথিত আছে, কিরীটেশ্বরীর কৃপায় মুর্শিদাবাদের নবাব মিরজাফর কুষ্ঠরোগ থেকে মুক্ত হয়েছিলেন। নাটোরের রানি ভবানীর পালিত পুত্র রামকৃষ্ণ এই মন্দিরে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন বলে কথিত আছে।