Advertisment

কার্ডিয়াক অ্যারেস্টই চিরবিদায় কেকে'র! জানুন এই রোগের ঝুঁকি সম্পর্কে

আগে ভাগেই জানুন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট সম্পর্কে

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kk, kk dead, kk age, kk death reason, kk dies, singer kk dead, singer kk age, kk death reason, kolkata news, kk news

সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে-র অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ আসমুদ্রহিমাচল।

কে কে-র মৃত্যুতে শোক প্রকাশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তিনি ট্যুইটে লিখেছেন, ''সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকাহত। সব বয়সী মানুষের জন্য তিনি গান গেয়েছেন। তাঁর গানের মাধ্যমে তাঁকে আমরা মনে রাখব। তাঁর পরিবার ও তাঁর ফ্যানদের সমবেদনা।'' আজই কলকাতায় আসছেন কে কে-র পরিবারের সদস্যরা। নিউ মার্কেট থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতা নাকি অন্য কোনও কারণে সঙ্গীতশিল্পীর মৃত্যু তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের কারণেই মৃত্যু হয়েছে কিংদবদন্তী শিল্পীর।

Advertisment

সোমবার কলকাতায় পা দিয়েও তরতাজাই ছিলেন। নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করেছেন। খুব খোশমেজাজে ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে মহড়া দিয়েছেন। সারা ক্ষণ শুধুই অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা। আর রাতেই সব শেষ। চলে গেলেন কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী কেকে। মঞ্চে থাকা স্পটলাইট বারবার বন্ধ করতে বলেছিলেন কেকে। তাঁর শরীরে যে একটা অস্বস্তি হচ্ছিল, সেটা অনেকেরই চোখে পড়ে। কেকের অনুষ্ঠানের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কেউ কেউ বলছিলেন, 'এদিন মঞ্চে প্রচণ্ড ঘামছিলেন গায়ক। কিছুটা অস্বস্তিও বোধ করছিলেন'।

তারপরই শো' শেষে হোটেলে ফেরার পথেই গাড়িতে শীত শীত ও অনুভব করেন কেকে। গাড়িতে হোটেলে ফেরার পথে গাড়ির এসিও বন্ধ করতে বলেন তিনি। হোটেলে ফিরে যাওয়ার পরই খানিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। CMRI হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে সঙ্গীত জগতে।

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে যখন তখন। হৃদযন্ত্রের স্পন্দনে সমস্যা হলে, অনিয়মিত হৃদ স্পন্দন হলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে। একে অনেক সময় ভেন্ট্রিকিউলার ট্যাকিকার্ডিয়া অথবা ভেন্ট্রিকিউলার ফাইব্রিলেশন। সাধারণত হৃদ স্পন্দন বেড়ে গিয়েই এমনটা হয়, তবে হৃদ স্পন্দন ভীষণ ধীর গতিতে হলেও এমনটা হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, হার্ট ফেলিওর এক নয়

হঠাৎ হওয়া কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং হার্ট অ্যাটাক কিন্তু এক নয়, অনেকেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হার্ট অ্যাটাকের পার্থক্যটা বোঝেন না, ফলে সমস্যায় পড়ে ভুল পদক্ষেপ নিয়ে নেন রোগীর পরিবার। করোনারি আর্টারির কাজ হৃদপিন্ডে রক্ত পাঠানো, এবার কোনও কারণে একটি করোনারি আর্টারির মুখ বন্ধ হয়ে গেলে বা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক হয়। এ ক্ষেত্রে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে হার্টে অক্সিজেন পৌঁছায় না, এবং সেই জায়গার কোষগুলো মরে যায়। তবে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণ আলাদা, এ ক্ষেত্রে অ্যারিদমিয়ার কারণে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়।

হার্ট অ্যাটাকের আগাম উপসর্গ হয় কি?
এক্ষেত্রে অনেক সময় উপসর্গ দেখা দিতেও পারে, আবার নাও দেখা দিতে পারে। উপসর্গের মধ্যে অন্যতম হলো হাঁটতে গিয়ে বুকে চাপ। অনেকেই এই ব্যথাকে গ্যাসের সমস্যা ভেবে ভুল করেন। দিনের পর দিন একই ব্যাপার চলতে থাকলে বুঝতে হবে তা খারাপ ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ ছাড়াও অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে রাতে ঘুমের মধ্যে বুকে চাপ, হঠাৎ ঘুম ভেঙে গিয়ে আর ঘুম না আসা, ঘুম থেকে উঠে সকালে শরীর খারাপ লাগা ইত্যাদির ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। অনেকেই এই বিষয়কে গ্যাসের ব্যথা ভেবে ভুল করে থাকেন। মনে রাখতে হবে সিভিয়ার প্যানক্রিয়াটাইটিস ছাড়া এমন ব্যথা হয় না। কাজেই বুঝে নিতে হবে এগুলো হার্ট থেকেই হচ্ছে। এছাড়া বুক ধড়ফড়, শ্বাস নিতে সমস্যা, ক্লান্ত লাগা ইত্যাদি উপসর্গ হতে পারে।

অবিলম্বে চিকিৎসা হিসেবে কী করবেন?

যা অবিলম্বে করা দরকার, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে বলে কার্ডিও পালমোনারি রিসাসকিটেশন। আক্রান্তের বুকে চাপ দিতে হবে। ৩০ বার চাপ দেওয়ার পর একবার করে আক্রান্তের মুখে মুখ দিয়ে হাওয়া দিতে হবে। অনেক সময় জলে খাবি খেতে খেতে অচেতন হয়ে গেলেও এভাবে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়। মুখ দিয়ে যদি হাওয়া দিতে নাও পারেন, শুধুই বুকে চাপ দিতে থাকুন ঘনঘন।

ঝুঁকি কাদের
হার্ট বা করোনারির রক্তনালিজনিত সমস্যা থাকলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সম্ভবনা রয়েছে, এ ছাড়াও হার্টের সমস্যার পারিবারিক ইতিহাস থাকলে, রক্তে বেশিমাত্রায় কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, ওবেসিটি, টাইপ টু ডায়াবেটিস, হরমোন ঘটিত সমস্যা, সেডেন্টারি লাইফস্টাইল, ধূমপান, মদ্যপান। মূলত মধ্যবয়স্কদের ঝুঁকি বেশি হলেও বর্তমানে কমবয়সীরাও যথেষ্ট ঝুঁকির মুখে রয়েছেন। হার্ট ফেলিওরের ক্ষেত্রে মহিলাদের ঝুঁকি বেশি।

নজর দিন ডায়েট এবং শরীরচর্চাতেও
শর্করা জাতীয় খাবার যেমন, চিনি, গুড়, মধু, মিষ্টি এসব বাদ দিন, রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট না খাওয়াই ভাল। রেড মিট-এ স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে কাজেই রেড মিট না খাওয়াই ভাল। মাংসের মেটে, মাছের ডিম ইত্যাদিতে কোলেস্টেরল থাকে কাজেই এ সমস্ত বাদ দিন খাদ্যতালিকা থেকে। ট্রান্স ফ্যাট রয়েছে এমন কিছু খাবেন না। অতিরিক্ত ধূমপান, মদ্যপান ছাড়ুন আজই। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফ্রিহ্যান্ড করুন। পাশাপাশি প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন।

Cardiac Arrest Singer KK death
Advertisment