মনের সঙ্গে তাল মিলিয়েই শরীরের সব অঙ্গ নিয়মিত চলতে থাকে। হাজার বললেও যেন মনের বৈপরীত্য মগজাস্ত্র দিয়ে ভাবনা চিন্তার বিষয়ে অনেকেই গোল্লা! কিন্তু শরীরের সব অঙ্গের মধ্যে হার্টকে সুস্থ সবল রাখা খুব জরুরি। তাই আজ বিশ্ব হৃদয় দিবস অথবা ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে উপলক্ষে একটি ছোট্ট শপথ নিজের হার্টকে যত্ন করে রাখার।
শরীর যখন আছে আর তাতে অঙ্গ প্রত্যঙ্গের যখন শেষ নেই তাতে সুবিধে অসুবিধে থাকবেই। হার্টের নানান সমস্যায় কিন্তু মানুষের বেশ ভোগান্তি। ওপেন হার্ট হোক কিংবা বাইপাস সার্জারি রিস্ক ফ্যাক্টর কিন্তু থেকেই যায়। কিন্তু এর থেকে কিছুটা হলেও সুস্থতা বহাল রাখা প্রয়োজন।
ডা: উপেন্দ্র ভালেরাও ( হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, ওয়কহর্ডট হাসপাতাল ) বলেন এর থেকে রেহাই পাওয়ার বেশ কিছু উপায় আছে। ভয় পাওয়া এবং প্যানিক করা চলবে না একেবারেই। বিশেষজ্ঞরা যদি সঠিক পদ্ধতিতে আপনাকে চালনা করতে পারে এবং আপনার অস্ত্রোপচার ভাল হয় তবেই আপনার স্বাস্থ্য উন্নত হবে।
বাইপাস সার্জারি আসলে কী?
কোলেস্টরেলের মাত্রা দিন দিন বেড়ে গিয়ে যখন করোনারী ধমনীতে বাঁধার সৃষ্টি হয় তখনই হার্টে ভাল ভাবে রক্ত পৌঁছায় না। বাইপাস সার্জারির প্রয়োজন হয়। এই প্রসঙ্গে ডা: ভালেরাও বলেন মানুষের মধ্যে বেশ কিছু আতঙ্কের আঁচ পাওয়া যায় বাইপাস সার্জারির ক্ষেত্রে। যেগুলি কিছু ভুল ধারণার কারণে দিনের পর দিন আরও বৃদ্ধি পায়। এই ধরনের ভুল চিন্তা ভাবনা বদলানো দরকার।
প্রথমত, এই সার্জারি একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণ নয়। চিকিত্সা পদ্ধতির উন্নতি, সঙ্গে ভালভ প্রতিস্থাপন এবং নিত্যনতুন চিকিৎসার প্রয়োগে এটি একেবারেই ঝুঁকিহীন। সঠিক সময়ে এই অপারেশন হলে সাফল্যের হার ৯৮ % কিংবা তারও বেশি।
দ্বিতীয়ত, স্টেন্ট বাইপাস সার্জারির থেকে নিরাপদ। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব কিছুতেই স্টেন্ট প্রতিস্থাপন সম্ভব নয়। তার সঙ্গে যদি শারীরবৃত্তীয় কিছু বাঁধা নিষেধ থাকে তবে তো আরও সম্ভব নয়। তাছাড়াও, বাইপাস সার্জারি বুকে ব্যথা এবং হার্ট ফেলের মত বড় রোগ গুলিকে মাত দিয়ে সক্ষম। এবং পরবর্তীতে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও কম। ফলত এটি একটি স্বস্তির ব্যাপার।
তৃতীয়ত, ডায়াবেটিস রোগীদের এই সার্জারিতে ঝুঁকি বেশি! তবে এর কোনও সত্যতা নেই। তিনি বলেন, করোনারী ধমনীর রোগ সুগার রোগীদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। কিন্তু এটি ডায়াবেটিক রোগীদের সবথেকে পছন্দের সার্জারি। বৈজ্ঞানিক তথ্য অনুযায়ী বাইপাস সার্জারি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে দিঘমেয়াদি ফল দেয়।
চতুর্থত, এই সার্জারির পর শারীরিক ক্রিয়াকলাপের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে? সম্পূর্ণ ভুল এই তথ্য! অপারেশনের ২ সপ্তাহ পরেই পুনরায় স্বাভাবিক জীবন যাত্রা শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়। সুস্থ এবং ফিট থাকতে চিকিৎসকরা আরও ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন। তবে খাবারে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে।
পঞ্চমত, কয়েক বছর পর এই অপারেশন ব্যর্থ হয়? একেবারেই না। তিনি বলেন এই অপারেশন অন্তত ২০-২৫ বছর স্থায়ী হয়। দীর্ঘ সময় আপনার কোনও উপসর্গ থাকবে না। নিশ্চিতভাবে জীবন কাটাতে পারবেন।
তাহলে, আর ভয়ের কিছু নেই! চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী এগিয়ে যান।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন